ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: পাহাড়ে জনজাতিদের নিয়ে গঠিত সবকটি বোর্ড ভেঙে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মাস দেড়েক- এর মধ্যে নতুন বোর্ড গঠিত হবে। জিটিএ এর অধীনে থাকবে এই নতুন বোর্ড। সেই বোর্ডের চেয়ারম্যান করা হল অনিত থাপাকে। জিটিএ-র চিফ এগজিকিউটিভ হলেন অনিত থাপা।
২০১৩ সালে রাজ্য সরকার প্রথম পাহাড়ে মায়াল লায়াং উন্নয়ন বোর্ড তৈরি হয়। এর পরে ২০১৮ সাল অবধি লেপচা, গুরুং, সংখ্যালঘু মিলিয়ে মোট ১৬টি বোর্ড তৈরি হয়েছে। গত ১১ বছর শতাধিক কোটি টাকা বোর্ডের উন্নয়নে দেওয়া হয়েছে। অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ, আদিবাসী উন্নয়ন, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন এবং সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতরের অধীনে এক-একটি বোর্ড রয়েছে। মঙ্গলবার জিটিএ সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকের পর এই সবকটি বোর্ড ভেঙে দেওয়ার কথা নিজেই জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে যতদিন না নতুন বোর্ড গঠিত হচ্ছে ততদিন এই বোর্ডগুলো কাজ চালিয়ে যাবে।
বিরোধীদের অভিযোগ, বিমল গুরুংয়ের সঙ্গে রাজ্যের সম্পর্ক খারাপ হওয়ার পরে, পাহাড়ে কাজের জন্য বোর্ডগুলি তৈরি করা হয়। আদতে সেগুলি পাহাড়ে বিভেদের রাজনীতি করার জন্য হয়েছে বলে বারবার বিজেপি অভিযোগ করেছে। ২০১৯ সালে লোকসভা, ২০২১ সালে বিধানসভা এবং ২০২৪ সালে লোকসভা ভোটেও বোর্ডগুলির ভূমিকা নিয়ে শাসক দলের অন্দরে প্রশ্ন ওঠে।
শাসক দলের নেতাদের অনেকের অভিযোগ, বোর্ডগুলিতে আবাসন, হোম-স্টে, ছোট রাস্তার কাজের জন্য বলা হয়েছিল। তা ঠিকমতো হয়নি হয়নি। উল্টে, টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ রয়েছে। বোর্ডের দায়িত্বপ্রাপ্তদের একাংশের জীবনধারাও পাল্টেছে। গাড়ি, বাড়ি, রিসর্ট, হোম-স্টে বানিয়ে অনেকে ফুলফেঁপে উঠেছেন বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন: https://tribetv.in/west-bengal-by-election-medinipur-assembly/
গত বিধানসভার পরে, ২০২২ সালে কলকাতায় বোর্ডের দায়িত্বপ্রাপ্তদের ডেকে রাজ্য সরকার সতর্কও করেছিল। পাহাড়ের শাসক দলের বেশ কিছু নেতার বক্তব্য, বোর্ডের লোকজন সরকারের উন্নয়নের প্রচার করা তো দূরে থাক, মানুষের মধ্যে প্রভাব বিস্তার করতে পারেননি। ভোটের ফলাফলে তার প্রতিফলনও দেখা যাচ্ছে। তা হলে কোটি কোটি টাকা খরচ করে বোর্ডগুলি রাখার যুক্তি নেই।
আরও পড়ুন: https://tribetv.in/tmc-leader-kajal-sheikh-get-y-plus-security/
সম্প্রতি নবান্নের সভাঘরের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, রাজ্যের বিভিন্ন বোর্ডের প্রয়োজনীয়তা শেষ হয়েছে। তারপর থেকেই পাহাড়ের ১৬টি জনজাতি বোর্ডের কী হবে, তা নিয়ে প্রশাসনিক স্তরে আলোচনা চলছিল। শেষ পর্যন্ত বোর্ডগুলো ভেঙে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।