ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: কেরলের তল্স্সেরীতে ঘটে গেল (Anorexia Nervosa) একটি ভয়াবহ ঘটনা, যেখানে মাত্র ১৮ বছর বয়সী এক তরুণী পাঁচ মাস ধরে কেবল জল খেয়ে ডায়েট করার ফলে মৃত্যু বরণ করেন। তরুণীটি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ১২ দিন আগে তাঁর ওজন ছিল মাত্র ২৪ কিলোগ্রাম, এবং পাকস্থলীতে এক ফোঁটাও খাবার পাওয়া যায়নি।
দাঁড়িয়েও থাকতে পারছিলেন না (Anorexia Nervosa)
বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করার সময় চিকিৎসক নাগেশ মনোহর প্রভু জানান, তরুণীটি দাঁড়িয়ে থাকার ক্ষমতা (Anorexia Nervosa) হারিয়ে ফেলেছিলেন। তাঁর রক্তচাপ এবং শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা মারাত্মকভাবে কমে গিয়েছিল, পাশাপাশি ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্যও বিঘ্নিত হয়েছিল। এই অবস্থায় তাঁকে ভেন্টিলেটর সাপোর্টে রাখা হয়, কিন্তু ১২ দিনের চিকিৎসা শেষে তাঁর মৃত্যু ঘটে।
ইটিং ডিজ়অর্ডার (Anorexia Nervosa)
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তরুণীর মধ্যে রোগা হওয়ার প্রবণতা এতটাই (Anorexia Nervosa) বৃদ্ধি পেয়েছিল যে তিনি ‘ইটিং ডিজ়অর্ডার’ এ ভুগছিলেন। সমাজ মাধ্যমের প্রভাবেই তিনি এ ধরনের আচরণ শুরু করেন, এবং তাঁর পরিবারের সদস্যরাও বিষয়টি বুঝতে পারেননি। খাওয়াদাওয়া বন্ধ করে কেবল জল খেয়ে থাকার ফলে তিনি ‘অ্যানোরেক্সিয়া নার্ভোসা’ রোগে আক্রান্ত হন, যা পরবর্তীতে তাঁর মৃত্যু ডেকে আনে।
আরও পড়ুন: Journalists Arrested: তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে পোস্ট, গ্রেফতার দুই মহিলা সাংবাদিক
মানসিক রোগ
অ্যানোরেক্সিয়া নার্ভোসা হচ্ছে একটি মানসিক রোগ, যেখানে রোগী নিজেদের চেহারা এবং ওজন নিয়ে অতিরিক্ত উদ্বিগ্ন থাকেন। তাঁরা খাবার দেখলেও খেতে পারেন না এবং নিজেদের মোটা হওয়ার ভয়ে সবসময় আতঙ্কিত থাকেন। মনোবিদ অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায়ের মতে, এই রোগে আক্রান্তরা নিজেদের চেহারা নিয়ে হীনম্মন্যতায় ভোগেন এবং খাবার খাওয়ার পরিমাণ ব্যাপকভাবে কমিয়ে দেন। এভাবে রোগীর মধ্যে উদ্বেগ এবং মানসিক চাপ ক্রমেই বৃদ্ধি পেতে থাকে।

শারীরিক পরিবর্তন
এই ধরনের রোগীদের শরীরে নানা ধরনের শারীরিক পরিবর্তন দেখা যায়। পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তীর মতে, অ্যানোরেক্সিয়া নার্ভোসায় আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে স্ত্রী হরমোনের ক্ষরণ কমে যায়, ফলে ঋতুস্রাব অনিয়মিত বা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তাদের লিভারে জটিলতা দেখা দিতে পারে, ত্বক কুঁচকে যায়, এবং অকালেই বলিরেখা পড়ে। এ ছাড়া, চোখের দৃষ্টি দুর্বল হয়ে যায় এবং হাড়ের ক্ষয় শুরু হয়।
বাঁচাবেন কীভাবে?
এমন রোগীদের বাঁচাতে হলে প্রথমে মানসিক চিকিৎসার প্রয়োজন। হঠাৎ করে বেশি খাবার দেওয়া বিপদজনক হতে পারে, তাই ধীরে ধীরে তরল ডায়েট শুরু করা উচিত। এরপর শরীর সয়েজ নিতে পারলে ধীরে ধীরে কার্বোহাইড্রেট এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার দেওয়া যেতে পারে। এভাবে সচেতনতা ও সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে এই গুরুতর রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।