ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: জেল থেকে ফেরার পর তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যয়ের সভায় দেখা যাচ্ছিল না বীরভূমের বাঘ কেষ্টকে (Anubrata Mondal)। এমনকি কয়েকদিন আগে ২১ শে জুলাইয়ের সভায়ও দেখা যায়নি কেষ্টকে। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে কি দূরত্ব তৈরি হলো কেষ্টর ? এই নিয়ে তৈরি হয়েছিল ঘোর জল্পনা! এবার মঞ্চে নয়,গাড়িতে বসেই দিদির ভাষণ শুনতে দেখা গেল অনুব্রত মণ্ডলকে।
কেষ্টর ফোন কল রেকর্ড বিতর্ক (Anubrata Mondal)
কিছুদিন আগে এক পুলিশ আধিকারিকের সঙ্গে অশ্রাব ভাষায় কথা বলার ফোন কল রেকর্ড ভাইরাল বিতর্কে জরায় কেষ্টর নাম (Anubrata Mondal)। সেই নিয়ে দলে আরও কিছুটা কোন ঠাসা অনুব্রত মণ্ডল। সেই বিতর্কে দল অনুব্রতকে শোকজ করেছিল। এমনকি তার এই বিতর্কিত ফোন কল রেকর্ডের জন্য বেশ অসস্তিতে পড়েছিল দল। অনেকের মতে সেই জন্যই তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) দূরত্ব রাখছেন কেষ্টর সঙ্গে। কিন্তু এবার তৃণমূল সুপ্রিমও বীরভূমে যেতেই সেই সভায় মঞ্চে স্থান না পেলেও গাড়িতে বসেই দিদির ভাষণ শুনলেন তিনি।
ভিনরাজ্যে বাঙালিদের লাগাতার হেনস্তা ও ‘বাংলাদেশি’ বলে তকমা দিয়ে পুশব্যাক করার অভিযোগকে কেন্দ্র করে রাজ্যজুড়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। সোমবার (১৭ জুলাই) সেই কর্মসূচির অঙ্গ হিসেবে বোলপুরের রাস্তায় নেমে মিছিল করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছবি এবং বাংলা ভাষার বর্ণমালা হাতে নিয়ে ভাষা ও সংস্কৃতির মর্যাদা রক্ষার লড়াইয়ে সরব হলেন তৃণমূল নেত্রী।
রবীন্দ্রনাথের মাটিতে সাংস্কৃতিক আবেগে ভরপুর মিছিল (Anubrata Mondal)
সোমবার দুপুর ঠিক ২টার আগে বোলপুর টুরিস্ট লজ মোড় থেকে মিছিল শুরু হয় (Anubrata Mondal)। মিছিলের শুরুতেই হাতে রবিঠাকুরের প্রতিকৃতি নিয়ে হাঁটতে দেখা যায় মমতাকে। সঙ্গে ছিলেন দলীয় সাংসদ শতাব্দী রায়, বোলপুরের বিধায়ক অসিত মাল, রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, এবং জেলার কোর কমিটির নেতারা। মিছিলে বাংলা বর্ণমালার অক্ষর লেখা ব্যানার ও পোস্টার, নেপথ্যে প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের কালজয়ী গান “আমি বাংলায় গান গাই”—সব মিলিয়ে সাংস্কৃতিক আবেগ ও প্রতিবাদের মেলবন্ধনে রাস্তায় নামল তৃণমূল।
মমতার বক্তব্যে ছিল তীব্র আক্রমণ। তিনি বলেন,“বাঙালি মানে বাংলাদেশি নয়। যাঁরা বাংলার সংস্কৃতি আক্রমণ করছে, তাঁদের বিরুদ্ধে আমরা একজোট হব।”

আরও পড়ুন: Coffee Culture : মেঘলা আকাশে কলকাতার পুরোনো কফি-সংস্কৃতি! বৃষ্টির ফোটা গুনে গুনে গরম কফিতে চুমুক
কেষ্টর অনুপস্থিতি ঘিরে গুঞ্জন (Anubrata Mondal)
তৃণমূলের এ দিনের কর্মসূচিতে সবচেয়ে বেশি নজরে আসে অনুব্রত মণ্ডলের অনুপস্থিতি (Anubrata Mondal)। শান্তিনিকেতনের মাটিতে ভাষা আন্দোলনের বার্তা দিলেও কেষ্টকে দেখা যায়নি। তবে শোনা যাচ্ছে, তিনি মঞ্চে না গিয়ে গাড়ির ছাদে বসে মমতার বক্তৃতা শোনেন।
- জেল থেকে ফেরার পর অনুব্রতর বিরুদ্ধে দলের অন্দরে একাধিক বিতর্ক ও অভিযোগ উঠেছে—আইসি-কে কদর্য ভাষায় আক্রমণের অভিযোগ থেকে শুরু করে দলীয় সংগঠনে বিভাজন।
- ২১ জুলাই ধর্মতলার মঞ্চেও অনুব্রতকে দেখা যায়নি।
এই আবহে তাঁর অনুপস্থিতি আরও আলোচনার জন্ম দিয়েছে। রাজনৈতিক মহল এখন নজর রাখছে মঙ্গলবার ইলামবাজারের সভায় অনুব্রত মণ্ডল হাজির হন কি না।

বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির মর্যাদা রক্ষায় আন্দোলন (Anubrata Mondal)
তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, বাঙালিদের বারবার ভিনরাজ্যে ‘বাংলাদেশি’ বলে অপমান করা হচ্ছে, এবং কিছু ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বাঙালিদের পুশব্যাক করছে (Anubrata Mondal)। এই ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গের মানুষের পরিচয় ও সংস্কৃতির মর্যাদা হানি হচ্ছে। তাই ভাষা ও সংস্কৃতির লড়াইকে কেন্দ্র করে রাজ্যজুড়ে আন্দোলন চালানোর ঘোষণা দিয়েছে তৃণমূল।
রাজনৈতিক মহল বলছে, সোমবারের বোলপুরের পদযাত্রা ছিল তৃণমূলের সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক বার্তা দেওয়ার কৌশল। দলীয় সূত্রে খবর, আগামী সপ্তাহে রাজ্যের আরও কয়েকটি জেলায় ‘বাংলা সংস্কৃতি রক্ষা মিছিল’ আয়োজনের পরিকল্পনা করা হচ্ছে।