ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ইরান ও ইজরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘর্ষের আবহেই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন ইরানের বিদেশমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি(Araghchi And Putin Meeting)। সোমবার সন্ধ্যায় মস্কোতে অনুষ্ঠিত এই উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক কূটনৈতিক সম্পর্ক, সিরিয়া পরিস্থিতি এবং পশ্চিম এশিয়ার সাম্প্রতিক উত্তেজনা নিয়ে আলোচনা হয়। আন্তর্জাতিক মহলে এই বৈঠককে গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।
রাশিয়া ও ইরান একযোগে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ (Araghchi And Putin Meeting)
বৈঠক শেষে এক যৌথ বিবৃতিতে পুতিন ও আরাগচি (Seyed Abbas Araghchi) জানিয়েছেন, “মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ও স্থিতাবস্থার পক্ষে রাশিয়া ও ইরান একযোগে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ(Araghchi And Putin Meeting)।” পুতিন আরও বলেন, “এই অঞ্চলে সামরিক সংঘাত রোধ করতে কূটনৈতিক সমঝোতা ছাড়া অন্য কোনও পথ নেই। রাশিয়া সব পক্ষকে আলোচনার টেবিলে আনতে চেষ্টা করছে।” রুশ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি, সিরিয়ার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ এবং ইজরায়েলের সঙ্গে চলমান উত্তেজনাও বিশেষভাবে গুরুত্ব পায়। সূত্র অনুযায়ী, আরাগচি বৈঠকে জানান, “তেহরান যুদ্ধ চায় না, তবে আক্রমণের জবাবে প্রতিক্রিয়া জানানো হবে। আমরা রাজনৈতিক সমাধানে আগ্রহী, তবে আত্মরক্ষার অধিকার আমাদের থাকবে।”
অস্থিরতার মাঝে রাশিয়ার মধ্যস্থতা (Araghchi And Putin Meeting)
বিশ্লেষকদের মতে, পশ্চিম এশিয়ার বর্তমান অস্থিরতার মাঝে রাশিয়ার মধ্যস্থতা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। ইরান ও রাশিয়া, উভয়েই সিরিয়ায় একসঙ্গে কাজ করেছে(Araghchi And Putin Meeting)। সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়েই পুতিন এই মুহূর্তে ‘শান্তি-সেতু’ গড়ার চেষ্টা করছেন।বৈঠকে রাশিয়া ইঙ্গিত দেয়, তারা চাইছে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে একটি নিরপেক্ষ সমঝোতা হোক, যেখানে ইরান, ইজরায়েল, এবং পশ্চিমা শক্তিগুলি কিছু শর্তে রাজি হবে। মস্কো মনে করছে, এই অঞ্চলে উত্তেজনা কমাতে হলে মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটো গোষ্ঠীকেও আলোচনায় আনতে হবে।

আরও পড়ুন: Iran Israel Ceasefire : ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধবিরতি ঘিরে বিভ্রান্তি! ট্রাম্পের দাবি উড়িয়ে দিল তেহরান
চূড়ান্ত যুদ্ধবিরতি ঘোষণা হয়নি (Araghchi And Putin Meeting)
ইরানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যদি ইজরায়েল হামলা বন্ধ রাখে, তবে তেহরানও সংঘর্ষে অংশ নিতে অনিচ্ছুক। তবে কোনও চূড়ান্ত যুদ্ধবিরতির বিষয়ে এখনও কোনও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হয়নি। রাশিয়া জানিয়েছে, তারা এই বিষয়ে জাতিসংঘের মাধ্যমে আলোচনার নতুন প্রস্তাব আনতে পারে।এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভও উপস্থিত ছিলেন। লাভরভ বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি, কূটনৈতিক সহনশীলতা এবং পারস্পরিক সম্মান ছাড়া টেকসই শান্তি সম্ভব নয়।”

পুতিন-আরাগচি বৈঠককে ভবিষ্যৎ (Araghchi And Putin Meeting)
বৈঠকের পর আন্তর্জাতিক স্তরে আলোড়ন তৈরি হয়েছে(Araghchi And Putin Meeting)। একদিকে পশ্চিমা দেশগুলি রাশিয়ার এই ভূমিকার পেছনে রাজনৈতিক অভিপ্রায় দেখছে, অন্যদিকে অনেক দেশই বলছে—এই মুহূর্তে ‘পুতিনই’ সেই নেতা যিনি যুদ্ধের দাবানলে কিছুটা জল ঢালতে পারেন।সব মিলিয়ে, পুতিন-আরাগচি বৈঠককে ভবিষ্যতের কূটনৈতিক গতিপথ নির্ধারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় বলেই মনে করা হচ্ছে। যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা এখনও দূর, কিন্তু আলোচনার দরজা খোলা থাকলেই আশার আলো দেখা যায়—এমনটাই বার্তা দিল এই বৈঠক।