ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: বাংলাদেশের ভূখণ্ডের মধ্যে ঢুকে উৎসব পালনের অভিযোগ উঠলো মায়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (Arakan Army in Bangladesh)। বান্দরবানের থানচি উপজেলার রেমাক্রি মুখ এলাকায় প্রায় ১০ কিলোমিটার ভিতরে অনুপ্রবেশ করে ‘জলকেলি উৎসব’-এর আয়োজনের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনায় বাংলাদেশে (Muhammad Yunus) ব্যাপক বিতর্ক এবং উদ্বেগ ছড়িয়েছে।
বাংলাদেশের ভূখণ্ডেই উৎসব(Arakan Army in Bangladesh)
‘প্রথম আলো’ এবং ‘রোহিঙ্গা খবর’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই অনুপ্রবেশ ঘটে ১৬ ও ১৭ এপ্রিল (Arakan Army in Bangladesh)। উর্দিধারী, অস্ত্রসজ্জিত আরাকান আর্মির সদস্যরা স্থানীয় জনজাতিদের নিয়ে বাংলাদেশের ভূখণ্ডেই উৎসব পালন করে। এতে অংশ নেন সংগঠনের শীর্ষ নেতা এবং রাজনৈতিক শাখা ইউনাইটেড লিগ অফ আরাকান (ULA)-এর সদস্যরাও। উপস্থিত ছিলেন ইউএলএ প্রধান মংথুইহ্লা মারমা, লেফটেন্যান্ট জোকা, ক্যাপ্টেন ক্যজো রাখাইন এবং ক্যাপ্টেন ভোলং রাখাইন।
পদক্ষেপ নেয়নি বাংলাদেশ বাহিনী (Arakan Army in Bangladesh)
সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হল, বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (BGB) এই ঘটনার সময় পাশেই অবস্থান করলেও তারা কোনও পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। তদুপরি, বান্দরবান জেলা পরিষদের এবং স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের কিছু পদাধিকারীর উপস্থিতি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এসব অভিযোগ আরও স্পর্শকাতর করে তুলেছে ঘটনাটিকে।

কড়া ভাষায় আক্রমণ (Arakan Army in Bangladesh)
বিষয়টি নিয়ে সরকারকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামি (Arakan Army in Bangladesh)। দলের মহাসচিব মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, “এটি বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন। সরকার নির্বিকার। জনগণের নিরাপত্তা ও সীমান্তের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ।” তিনি ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

আরও পড়ুন: Donald Trump : শুল্ক-বহির্ভূত আট ‘অপরাধ’! ট্রাম্পের নতুন হুঁশিয়ারিতে উত্তপ্ত বৈশ্বিক বাণিজ্য
সীমান্তজুড়ে চরম উত্তেজনা (Arakan Army in Bangladesh)
প্রসঙ্গত, মায়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্ত ২৭১ কিমি দীর্ঘ (Arakan Army in Bangladesh)। সাম্প্রতিক মায়ানমারে গৃহযুদ্ধের কারণে পুরো সীমান্তজুড়েই চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। ‘থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স’-এর নেতৃত্বে আরাকান আর্মি বর্তমানে রাখাইন রাজ্যের প্রায় ৮০ শতাংশ এলাকা দখলে রেখেছে। মংডু, বুথিডং-সহ সীমান্তবর্তী এলাকা তাদের নিয়ন্ত্রণে।
আরাকান আর্মির প্রতিহিংসা (Arakan Army in Bangladesh)
এই পরিস্থিতির মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিতাড়িত রোহিঙ্গা মুসলিমদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন বাংলাদেশ (Arakan Army in Bangladesh)। রাখাইনের যুদ্ধ পরিস্থিতিতে এক সময় সরকারি বাহিনীর পক্ষে লড়েছিল রোহিঙ্গা সংগঠনগুলি – যেমন আরসা, আরআরএ, আরএসও। কিন্তু এখন তারাই আরাকান আর্মির প্রতিহিংসার লক্ষ্য হয়েছে।নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আরাকান আর্মির এই অনুপ্রবেশ শুধু সাময়িক উৎসব নয়, বরং এর পিছনে ভূ-রাজনৈতিক ও সামরিক কৌশল রয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের এই বিষয়ে নিষ্ক্রিয়তা ভবিষ্যতে আরও বড় সঙ্কট ডেকে আনতে পারে।বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে এখনো কোনও আনুষ্ঠানিক বিবৃতি না আসায় সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ আরও বাড়ছে। বিশেষত পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে জনজাতি ও নিরাপত্তা বাহিনীর মাঝে আস্থা সংকট তৈরির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।