ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: “লাল পাহাড়ির দেশে যা” (Lal Paharir Deshe Ja), যে গানের ছন্দে এখনও মানুষ মেতে ((Arun Chakraborty Death)) রয়েছে। এই গানটা এমন একটা ঘোর, যে ঘোর থেকে বাঙালি কোনও দিনও বেরোতে পারবে না। সেই গানের স্রষ্টা অরুণ চক্রবর্তী (Arun Chakraborty Death) আর নেই। তিনি পাড়ি দিলেন না ফেরার দেশে।
মাঝরাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হয়েছেন (Arun Chakraborty Death)। বয়স হয়েছিল প্রায় ৮০ বছর। শুক্রবার গভীর রাতে কবির চুঁচুড়ার বাড়িতে ঘটে গেল এত বড় অঘটন। বাংলার শিল্পী দুনিয়ায় তাঁর এই চলে যাওয়া অপূরণীয় ক্ষতি। যে ক্ষতি কেউ কোনও দিনও পূরণ করতে পারবেন না।
লাল পাহাড়ির দেশে যা (Arun Chakraborty Death)
“লাল পাহাড়ির দেশে যা, রাঙামাটির দেশে যা”, এই গান শোনেনি এমন বাঙালি কি আছে? অথচ এই গানের যিনি গীতিকার তাঁর নাম অনেকেই জানেন না। আর তিনি হলেন বিখ্যাত শিল্পী অরুণ চক্রবর্তী (Arun Chakraborty Death)। সময়টা তখন ১৯৭২ সাল। শ্রীরামপুর স্টেশনের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় মহুয়া ফুলের গাছ আর ফুল দেখতে পান। কবি মন বলে কথা। সেই দৃশ্য দেখে বড্ড বেমানান মনে হয়েছিল।
আরও পড়ুন: Dev: বিয়ে করছেন দেব! আফসোসের শেষ নেই, কী হল হঠাৎ অভিনেতার?
কী মনে হয়েছিল তাঁর? (Arun Chakraborty Death)
তাঁর (Arun Chakraborty Death) মনে হয়, যে বাংলায় ধান আলু চাষ হচ্ছে, উৎপাদন হচ্ছে, সেখানে মহুয়া ফুলের গাছ কেন থাকবে? লাল মাটির দেশ, সেখানেই তাকে মানায়। কারণ মহুয়া লাল মাটির গাছ। তারপরেই তিনি লিখে ফেললেন, সেই কালজয়ী গান, “লাল পাহাড়ির দেশে যা”। এই গানটির গীতিকার অরুণ চক্রবর্তী। আর এই গানে সুর দিয়েছিলেন ঝুমুর গায়ক সুভাষ চক্রবর্তী।
লেখা ছিল তাঁর রক্তে
লেখালেখি ছিল অরুণ চক্রবর্তীর রক্তের মধ্যে। শিবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে পাশ করেছিলেন। চাকরি করতেন হিন্দুস্তান মোটরে। কিন্তু সবার কাছে “অরুণ চক্রবর্তী”, এই নামটা পরিচিতি এনে দিয়েছিল “লাল পাহাড়ির দেশে যা” গানটি। কবি লেখালেখি করতে ভালোবাসতেন। তার সেই কবিতা এখন গান হয়ে ফিরছে প্রত্যেক মানুষের মুখে মুখে।
আরও পড়ুন: Bohurupi 2: আসছে ‘বহুরূপী ২’! আবিরকে উদ্দেশ্য করে বড় বার্তা পরিচালকের
দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে
শুধু কি ভারত? ভারতের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিদেশেও এই গান অরুণ চক্রবর্তীকে আলাদা পরিচিতি দিয়েছে। এই বিখ্যাত কবি বাংলার লোকসংস্কৃতি নিয়ে চর্চা করতে ভীষণ ভালোবাসতেন। এতটাই ভালোবাসতেন যে, লেখার তাগিদে কখনও ঘুরতেন আদিবাদী এলাকায়। কখনও বা পাহাড়ে, আবার কখনও বা জঙ্গলে। দুর্দান্ত মানুষ ছিলেন। তিনি লাল পোশাক করে কাঁধে ঝোলা নিয়ে ঘুরতেন। ছোটদের দেখলেই ঝোলা থেকে বের করে দিতেন চকলেট। মাথায় বাঁধা থাকতো রঙিন রুমাল।
ফুসফুসের সমস্যা
তিনি মোটামুটি সুস্থই ছিলেন। সম্প্রতি কলকাতার মোহর কুঞ্জে জঙ্গলমহল অনুষ্ঠানে যোগও দেন। একটু ঠান্ডা লেগে ছিল। করোনা সময়ের পর থেকে ফুসফুসের সমস্যায় ভুগছিলেন। তাঁর প্রয়াণ বাংলার শিল্পী মহল মেনে নিতে পারছে না। আমরা এক অমূল্য রত্ন হারিয়ে ফেললাম।