ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ‘যুদ্ধ শুরু হয়ে গিয়েছে।’ ইজরায়েল এবং ইরানের তীব্র সংঘাতের মধ্যেই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইরানের সুপ্রিম লিডার আয়াতুল্লাহ আলি খামেনেই(Ayatollah Ali Khamenei)।।মধ্যপ্রাচ্যের উত্তাপের আঁচ গনগনে। ইজরায়েল এবং ইরানের সংঘাত ষষ্ঠ দিনে পড়েছে। বুধবার ভোর থেকেই ইরানে হামলার তীব্রতা বৃদ্ধি করেছে ইজরায়েল সেনা।এর মাঝে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুঁশিয়ারির কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পর পর পোস্ট করে ‘যুদ্ধ শুরু’র ঘোষণা করলেন খামেনেই।
সংঘাতের মধ্যে খামেনেই-র হুঁশিয়ারি (Ayatollah Ali Khamenei)
এক্স হ্যান্ডলের খামেনেই জানান,’আলি রিটার্নস টু খাইবার(Ayatollah Ali Khamenei)।’ ফারসি ভাষায় লেখা পোস্টের অনুবাদ বলছে, ‘খাইবারে ফিরেছেন আলি।’ শিয়া ইসলামের প্রথম ইমামের বিষয়ে এই বক্তব্য রাখা হয়েছে এবং বলা হয়েছে, তিনি খাইবারে ফিরেছেন। খাইবার অর্থাৎ ইহুদি শহর যা শিয়া ইসলামের প্রথম ইমামের রাজত্ব ছিল সপ্তম শতাব্দীতে। এই এক্স পোস্টে এক ব্যক্তির ছবিও রয়েছে, যাঁর হাতে রয়েছে একটি তলোয়ার। রাজপ্রাসাদের দ্বার দিয়ে প্রবেশ করছে সেই ব্যক্তি। আকাশে আগুনের গোলা এবং কালো ঘন মেঘও রয়েছে ছবিতে। এই পোস্টের কয়েক মুহূর্ত পরই আরও একটি পোস্ট করেন আয়াতোল্লাহ খামেনেই। তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাসবাদী ইহুদি শাসককে কড়া জবাব দেওয়ার সময় হয়েছে। কোনওরকম রেয়াত করা হবে না ইহুদিদের।’

ডোনাল্ড ট্রাম্পের আত্মসমর্পণ প্রস্তাব (Ayatollah Ali Khamenei)
মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, ইজরায়েল-ইরান সংঘর্ষের সময় ইরানের সর্বোচ্চ নেতা খামেনেই কোথায় লুকিয়ে আছেন তা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জানে, কিন্তু ‘এখনকার জন্য’ তাঁকে হত্যা করতে চায় না(Ayatollah Ali Khamenei)। এর কয়েক ঘণ্টা পরেই খামেনেইয়ের এই পোস্ট।ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যালে পোস্ট করেছিলেন, ‘শর্তহীন আত্মসমর্পণ’। এরপরেই তিনি লেখেন, ‘আমরা জানি কোথায় খামেনেই লুকিয়ে রয়েছেন। তিনি একজন সহজ টার্গেট। তবে তাঁকে আমরা এই সময় হত্যা করার কথা ভাবছি না। পাশাপাশি সাধারণ মানুষের ওপরেও মিসাইল হামলা করা হবে না।’ মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাতের তীব্রতা বৃদ্ধি পেতেই কানাডায় জি৭ শীর্ষ সম্মেলন শেষের আগেই তড়িঘড়ি দেশে ফিরে গিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। যুক্তরাষ্ট্রে ফিরেই ট্রাম্প তেহরানের ৯৫ লক্ষ বাসিন্দাকে সেখান থেকে পালিয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন।

আরও পড়ুন-Hyderabad: বেগমপেট বিমানবন্দরে বোমা হামলার হুমকি! হায়দরাবাদে তোলপাড়
সংঘর্ষের তেজ বেড়েছে (Ayatollah Ali Khamenei)
ইজরায়েল কড়া হাতে দমন করছে ইরানকে(Ayatollah Ali Khamenei)। সে দেশের একের পর এক রেভলিউশনারি গার্ড এবং সেনার শীর্ষ কর্তাদের হত্যা করা হচ্ছে। ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ইরানের জনগণকে সতর্ক করেছেন। জানিয়েছেন, ইরানের শাসককে উপড়ে ফেলবে ইজরায়েল। প্রশ্ন উঠছে, সত্য়িই যদি ইজরায়েলের হাতে নিহত হন আয়াতোল্লা খামেনেই, সেক্ষেত্রে তাঁর গদিতে কে বসবে? অন্যদিকে, পাঁচ দিনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মাধ্যমে ইজরায়েল ইরানের যথেষ্ট ক্ষতি করেছে এবং বিশ্বাস যে তারা এখন তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচিতে স্থায়ী আঘাত হানতে পারবে। বিশেষ করে যদি তারা ট্রাম্পের কাছ থেকে আরও একটু সাহায্য পায়।মঙ্গলবার রাত থেকে সংঘর্ষের তেজ আরও বেড়েছে। বুধবার ভোরে তেহরানের কাছে তেল সংশোধনাগারে হামলা চালায় ইজরায়েল সেনা।
আরও পড়ুন- Meghalaya: যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে স্বামী, দেখেই পালয়ে যায় সোনম! মেঘালয়কাণ্ডে তোলপাড়
আয়াতোল্লা আলি খামেনেই কে? (Ayatollah Ali Khamenei)
আয়াতোল্লা কোনও নাম নয়(Ayatollah Ali Khamenei)। এটি একটি পদ। ধর্মের ভিত্তিতে তৈরি হওয়া দেশ ইরানের সুপ্রিম লিডার হলেন ‘আয়তোল্লা’। আসলে ইরানে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী থাকলেও গোটা দেশটি পরিচালনা করে সুরা কাউন্সিল। তার সদস্য ১২ থেকে ২৫ জন মৌলবী। আর তাদের মাথায় থাকেন ‘আয়তোল্লা’। যার ছাড়পত্র পেলে তবেই দেশের প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী কিংবা সেনাপ্রধান পদে মনোনয়ন মেলে। তারপর হয় নির্বাচন। সাড়ে তিন দশক ধরে এই ‘আয়তোল্লা’ পদে রয়েছেন আলি খামেনেই। আর এই ৩৫ বছরের বেশি সময় ধরে নিজের ক্ষমতার শিঁকড় গেঁড়েছেন ইরানের মাটিতে। সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে এনেছেন প্রশাসন, বিচারবিভাগ এবং সামরিক বিভাগের উপর।
