সঞ্জীব মল্লিক, বিষ্ণুপুর: বিষ্ণুপুরের ঐতিহ্য বালুচরী শাড়ির নতুন চমক। শাড়ির উপর ফুটে উঠেছে ‘সাতকাণ্ড’ রামায়ণ। নজর কাড়ছে সকলের। লাভের মুখ দেখবে আশাবাদী শিল্পী।
মল্লগড় বিষ্ণপুর, যার আরেক নাম মন্দির নগরী বিষ্ণুপুর। শতাব্দি প্রাচীন এই বিষ্ণুপুর শহরে রয়েছে তাক লাগানো ঐতিহ্য। তার মধ্যে অন্যতম জিআই স্বীকৃত বিষ্ণুপুরের ‘বালুচরী শিল্প’। এই বালুচরী শাড়ির (Baluchari Saree) খ্যাতি জগৎজুড়ে। দুর্গাপুজো মানেই রং-বেরঙের পোশাক পরে প্যান্ডেল হপিং। আর সনাতনী মা-বোনেরা দুর্গাপূজোয় শাড়ি পরবে না তা কখনো হতেই পারে না। আর তার ওপর যদি হয় শাড়ির ওপর গল্পকথা এবং বিষ্ণুপুরী বালুচরী, তবে তো জুরি মেলা ভার।
আরও পড়ুন:https://tribetv.in/bengali-people-still-look-for-the-radio-in-mahalaya/
বিষ্ণুপুরের বাসিন্দা বালুচরী শিল্পী অমিতাভ পাল (Amitava Paul) এবং তাঁর কারিগরদের হাতের ছোঁয়ায় বালুচরী শাড়ি অন্য মাত্রা পেয়েছে। পুজোর আগে বালুচরী শাড়ির নতুন আকর্ষণ ‘সাতকাণ্ড’ রামায়ণ। শাড়িতে রয়েছে রামায়ণের বিভিন্ন চরিত্র এবং বিভিন্ন সময়কার ছবি। শাড়িতে রয়েছে জটায়ুর প্রতিচ্ছবি পাশাপাশি তাড়কা রাক্ষসী বধ, খঞ্জনী বাজাচ্ছেন বীর হনুমান, রামের হরধনু ভঙ্গ ও সীতার অগ্নিপরীক্ষা রয়েছে শাড়ির গায়ে। এছাড়াও আঁচলে রয়েছে লব কুশের দ্বারা যজ্ঞের ঘোড়া আটকানো ও তাদের পঠন-পাঠন। দু’পাশে রয়েছে, রামের বনবাস ও সীতা হরণের ছবি, মাঝখানে বড় আকারে রয়েছে সীতা হরণের সময় রাবনের দ্বারা জটায়ুর ডানা কাটার দৃশ্য।
শিল্পী জানান, শাড়িটি তৈরি করতে তিনজন শ্রমিকের মোট ২৩ থেকে ২৫ দিন সময় লেগেছে। এই শাড়িটির দাম রাখা হয়েছে ৩৫ হাজার টাকা। এই শাড়ি পাওয়া যাবে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তন্তুজ থেকে। পাশাপাশি পাওয়া যাবে বিষ্ণুপুরের (Bishnupur) তাঁত শিল্পীর বাড়ি থেকেও। তবে বালুচরীর এই ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে তন্তুজের ভূমিকার কথা কৃতজ্ঞ চিত্তে স্মরণ করেন শিল্পী অমিতাভ পাল। তাঁর কথায়, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তন্তুজ পাশে না দাঁড়ালে কখনোই এই কাজ সম্ভব হতোনা।