ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: দিন যতই যাচ্ছে উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে বাংলাদেশে। সেই প্রভাব দেখা যাচ্ছে কোচবিহারের চ্যাংড়াবান্ধা ইমিগ্রেশন চেকপোষ্টে (Bangladesh Incident Effect in India)। ভোগান্তির শিকার বহু ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ। বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিঘ্ন দেশের বিভিন্ন স্তরের মানুষজন। শান্তি ফিরুক। সব আগের মতোন হোক। চাইছেন সকলেই।
বাংলাদেশের প্রভাব সীমান্তে (Bangladesh Incident Effect in India)
উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে বাংলাদেশে। রেশ পড়ছে এপার বাংলাতেও। সেই প্রভাব দেখা যাচ্ছে কোচবিহারের চ্যাংড়াবান্ধা ইমিগ্রেশন চেকপোষ্টে (Bangladesh Incident Effect in India)। এখানে প্রত্যেকদিন ৭০০ থেকে ৮০০ লোক ভারত থেকে বাংলাদেশে কিংবা বাংলাদেশ থেকে ভারতে যাতায়াত করেন। এখন কিন্তু নেই সেই ছবি।
কমে গিয়েছে যাতায়াত (Bangladesh Incident Effect in India)
চ্যাংড়াবান্ধা চেকপোস্ট দিয়ে দুই বাংলায় যাতায়াত করার লোক কমে গিয়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় পঞ্চাশে। মারাত্মক ভাবে প্রভাব পড়েছে ব্যবসা বাণিজ্যে। স্বাভাবিক ভাবেই চিন্তিত ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষজন। বাংলাদেশ থেকে আসা লোকজনদের কথাতেও ঝড়ে পড়ছে উদ্বেগের ছবি। সেদেশের পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তিত তারা। শান্তি ফিরুক। সব হোক আগের মতোন। চাইছেন ব্যবসায়ীরা। তবে যারা ওপার থেকে আসছেন এপারে তাদের মাথায় নেই কোন চাপ।
আরও পড়ুন: Farmer Protest: কৃষকদের সংসদ অভিযানে রাজধানীতে চড়ছে উত্তাপ!
কবে থেকে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি (Bangladesh Incident Effect in India)
সম্প্রতি বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগের পর থেকেই নামছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি। একাধিক অপরাধ মূলক কাজের সীমাও লঙ্ঘন করেছে তারা। নির্মম ভাবে অত্যাচার করে মেরে ফেলা হয়েছে বহু হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষকে। ক্রমেই দিন যত যাচ্ছে ততই আগুনের ঝাঁঝ বাড়ছে। বঙ্গ বন্ধুর মূর্তি ভেঙে দেওয়া, এমনকি মুজিবর রহমানের মূর্তিতে প্রস্রাব করার মত জঘন্য অপরাধ মূলক কাজ ঘটিয়েছেন। মুছে ফেলা হয়েছে হাসিনার পরিবারে সব চিহ্ন। তারই মধ্যে আবার নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে বাংলাদেশ জুড়ে। সম্প্রতি চিন্ময় প্রভুকে গ্রেফতার করার পর থেকে আবারও উত্তেজনা ছড়িয়েছে। এমনকি আরও দুই হিন্দু সন্ন্যাসীকেও গ্রেফতার করা হয়েছে সন্দেহের বসে। তবে হামলাকারীদের এখন টার্গেট ইসকন মন্দির।
নির্যাতন-অত্যাচারের কাহিনী
বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের ঘটনা হাজার ছাড়িয়েছে। বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ (বিএইচবিসিইউসি) ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতার উপর বার্ষিক প্রতিবেদন তৈরী করেছে। গত এক বছরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাও ১০০০ ছাড়িয়ে গেছে। নির্যাতনের শিকার হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৪৫ জনের।
একটি বাংলাদেশী সংখ্যালঘু ফোরাম বলছে, ন্যায়বিচারের অভাব এবং অপরাধীদের দায়মুক্তির মধ্যে বাংলাদেশে জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর নিপীড়ন অব্যাহত রয়েছে।
এই সপ্তাহে উপস্থাপিত বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের (বিএইচবিসিইউসি) সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদন অনুসারে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এশিয়ান দেশটি সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রায় ১০৪৫টি ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছে।
সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৪৫ জন সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে। আন্তঃধর্মীয় ফোরামের ফলাফলগুলি জুলাই ২০২৩ থেকে জুন ২০২৪ পর্যন্ত মিডিয়া রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৪৫ জন সদস্যকে হত্যা করা হয়েছিল এবং ১০টি হত্যার চেষ্টা এবং ৩৬টি হত্যার হুমকি ছিল। হামলা-পাল্টা হামলা, সংঘর্ষ-পাল্টা সংঘর্ষে টাল-মাটাল পরিস্থিতি বাংলাদেশে। হত একাধিক আহত একাধিক, আরও বাড়ছে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি।
আরও পড়ুন: Bangladesh News: নৈরাজ্যের বাংলাদেশে অশান্তির প্রভাব ব্যবসা-বাণিজ্য়ে, সীমান্তে আটকে পণ্যবাহী ট্রাক
দিকে দিকে আক্রান্ত সংখ্যালঘুরা
মোট ৪৭৯ জন আক্রান্ত, শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত বা আহত হয়েছেন এবং ১১ জন চাঁদাবাজির শিকার হয়েছেন। সহিংসতার মধ্যে রয়েছে ২৫টি গণধর্ষণ, যখন ১২ জনকে অপহরণ করা হয়েছে, নিখোঁজ বা ধর্মান্তরিত করতে বাধ্য করা হয়েছে। ব্লাসফেমির মিথ্যা অভিযোগে আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ১০২টি হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনাও রেকর্ড করা হয়েছে।
BHBCCUC-এর মতে, ৭০-৭৫ শতাংশ সহিংসতা জমি দখলকে কেন্দ্র করে, প্রায়শই রাজনৈতিক দলগুলির প্রভাবে এবং সরকারী সংস্থাগুলির সাথে জড়িত। অনুসন্ধানে ভূমি ও বসতবাড়ি দখলের ৪৭টি ঘটনা এবং জমি দখল, উচ্ছেদ কার্যক্রম এবং হুমকির ৪৫টি ঘটনা, পাশাপাশি ১১টি হুমকি বা বহিষ্কারের প্রচেষ্টার কথা বলা হয়েছে।