ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: দীর্ঘ শীতলতার পর বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের (Bangladesh Pakistan Relation) কূটনৈতিক সম্পর্কে ফের উষ্ণতার ছোঁয়া। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পরে দুই দেশের মধ্যে যে সম্পর্কের নতুন অধ্যায়ের ইঙ্গিত মিলেছিল, তা এবার বাস্তবায়নের পথে। প্রায় ১৫ বছর পর ঢাকায় হতে চলেছে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের বিদেশ সচিব পর্যায়ের বৈঠক। বৃহস্পতিবার এই ঐতিহাসিক বৈঠকে মুখোমুখি হবেন বাংলাদেশের বিদেশ সচিব মহম্মদ জসীমউদ্দিন এবং পাকিস্তানের বিদেশ সচিব আমনা বালুচ।
ঢাকায় পাকিস্তানের প্রতিনিধি দল (Bangladesh Pakistan Relation)
বৈঠকে অংশগ্রহণের জন্য ইতিমধ্যেই ঢাকায় এসে পৌঁছেছে পাকিস্তানের (Bangladesh Pakistan Relation) প্রতিনিধি দল। বাংলাদেশ বিদেশ মন্ত্রকের এক সূত্রের খবর অনুযায়ী, এই আলোচনায় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের প্রায় সব বিষয়ের উপরই কথা হবে। দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘ দিনের কিছু অমীমাংসিত বিষয় এবং নতুন করে সম্ভাব্য সহযোগিতার পথ নিয়েও হবে আলোচনা।
ভিন্ন কূটনৈতিক সমীকরণ তৈরির সম্ভাবনা (Bangladesh Pakistan Relation)
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই বৈঠক শুধু দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে (Bangladesh Pakistan Relation) স্বাভাবিক করার পদক্ষেপ নয়, বরং দক্ষিণ এশিয়ায় ভিন্ন কূটনৈতিক সমীকরণ তৈরির সম্ভাবনাও তৈরি করছে। দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্ক তেমন কোনও অগ্রগতি পায়নি—বিশেষ করে ১৯৭১ সালের ইতিহাস, যুদ্ধাপরাধের বিচার এবং কূটনৈতিক টানাপোড়েনের জেরে দুই দেশের সম্পর্ক প্রায় থমকে ছিল। তবে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পালাবদলের প্রেক্ষিতে দুই দেশই সম্পর্কের পুনর্মূল্যায়ন করছে বলে মনে করা হচ্ছে।

বাংলাদেশের সফরে পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী!
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, এই বৈঠকের মাধ্যমেই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বরফ গলানোর প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। সূত্রের আরও দাবি, বৈঠকের পরে চলতি এপ্রিল মাসের মধ্যেই পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও বিদেশমন্ত্রী ইসহাক দার বাংলাদেশের সফরে আসতে পারেন। যদি তিনি এই সফর করেন, তবে সেটা হবে ২০১২ সালের পর প্রথম কোনও পাকিস্তানি বিদেশমন্ত্রীর ঢাকা সফর।
আলোচনার মাধ্যমেই ভবিষ্যতের সম্পর্কের ভিত্তি
এই সফর এবং বৈঠককে ঘিরে দক্ষিণ এশিয়ার কূটনৈতিক মহলে ব্যাপক কৌতূহল তৈরি হয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারত-পাকিস্তান ও চীন-বাংলাদেশ সম্পর্কের প্রেক্ষাপটে এই বৈঠক যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। যদিও এখনই কোনও বড় মেলবন্ধনের আশা করা হচ্ছে না, তবে এই আলোচনার মাধ্যমেই ভবিষ্যতের সম্পর্কের ভিত্তি তৈরি হতে পারে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
আরও পড়ুন: Junior Doctors account of expenses: আরজি কর আন্দোলনে অনুদানের হিসেব দিলেন জুনিয়র ডাক্তাররা
সবমিলিয়ে, ১৫ বছর পর বিদেশ সচিব পর্যায়ের এই বৈঠক শুধু একটি কূটনৈতিক কর্মসূচি নয়, বরং দুই দেশের সম্পর্ককে নতুন মোড়ে নিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করছে। এবার দেখার, এই আলোচনার কতটা বাস্তব রূপ পায় ভবিষ্যতের কূটনীতিতে।