ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উত্তেজনা আরও বাড়ল। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald J. Trump) রাশিয়া জলসীমার কাছে দু’টি পরমাণু অস্ত্রবাহী ডুবোজাহাজ পাঠানোর ঘোষণা করার পরই নতুন পদক্ষেপ নিল রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ মিত্র বেলারুশ(Belarus)। ইউক্রেন সীমান্তে সামরিক শক্তি বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে মিন্স্ক।
‘রকেট আর্টিলারি ব্রিগেড’ মোতায়েন (Belarus)
সূত্রের খবর, বেলারুশ সরকার নবগঠিত বিশেষ বাহিনী ‘স্পেশ্যাল অপারেশনস ফোর্সেস’ (এসওএফ)-এর হাতে সীমান্ত রক্ষার দায়িত্ব তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে(Belarus)। শুধু তাই নয়, ইতিমধ্যেই ইউক্রেন সীমান্তে একটি ‘রকেট আর্টিলারি ব্রিগেড’ মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি আকাশ প্রতিরক্ষা শক্তি জোরদার করতে একটি বিশেষ ব্রিগেড গঠনের পরিকল্পনাও করেছে লুকাশেঙ্কো সরকার।
বেলারুশের এই পদক্ষেপের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ব্রিগেডের কমান্ডার মেজর জেনারেল ভাদিম ডেনিসেনকো। তিনি রুশ সংবাদ সংস্থা ‘তাস’-কে জানিয়েছেন, “সাম্প্রতিক উত্তেজনার কারণেই ইউক্রেন সীমান্তে এই কৌশলগত পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।” সামরিক বিশেষজ্ঞদের মতে, শীত পড়ার আগে সীমান্তে বিশেষ প্রশিক্ষিত এসওএফ মোতায়েন তাৎপর্যপূর্ণ। এর মাধ্যমে ইউক্রেনের উপর মানসিক চাপ তৈরি করতে চাইছে মিন্স্ক।
রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় করতে পদক্ষেপ (Belarus)
বেলারুশ, রাশিয়া এবং ইউক্রেন— তিন দেশই এক সময়ের সোভিয়েত প্রজাতন্ত্র(Belarus)। বর্তমানে বেলারুশ প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ হিসেবেই পরিচিত। রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় করতে লুকাশেঙ্কো একাধিক কৌশলগত পদক্ষেপ নিয়েছেন। ইতিমধ্যেই রুশ পরমাণু অস্ত্রভাণ্ডারের একাংশ বেলারুশে মজুত করা হয়েছে। এমনকি যুদ্ধ পরিস্থিতিতে বেলারুশ-ইউক্রেন সীমান্তে রুশ সেনা মোতায়েনের অনুমতিও দিয়েছেন লুকাশেঙ্কো।

আরও পড়ুন: Slovenia : ইজরায়েলের সঙ্গে অস্ত্র বাণিজ্যে নিষেধাজ্ঞা, প্রথম পদক্ষেপ নিল স্লোভেনিয়া
ভারত ও রাশিয়ার অর্থনীতিকে ‘মৃত’ বলে কটাক্ষ ট্রাম্পের (Belarus)
উল্লেখযোগ্য, গত বৃহস্পতিবার ভারত ও রাশিয়ার অর্থনীতিকে ‘মৃত’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন ট্রাম্প। সমাজমাধ্যমে তিনি লিখেছিলেন, “ভারত রাশিয়ার সঙ্গে কী বোঝাপড়া করছে, তা নিয়ে আমি ভাবিত নই(Belarus)। একসঙ্গে তারা তাদের মৃত অর্থনীতিকে ডোবাতে পারে।” ট্রাম্পের এই মন্তব্যের পরই পাল্টা হুঁশিয়ারি দেয় রাশিয়া। সে দেশের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট এবং বর্তমান জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান দিমিত্রি মেদভেদেভ আমেরিকাকে লক্ষ্য করে বলেন, “যাদের মৃত বলা হচ্ছে, তাদের ‘ডেড হ্যান্ড’ থেকে আসন্ন বিপদকে উপেক্ষা করা সহজ হবে না।”
‘ডেড হ্যান্ড’ প্রসঙ্গে উল্লেখযোগ্য যে, এটি আশির দশকে সোভিয়েত ইউনিয়নের তৈরি একটি স্বয়ংক্রিয় পরমাণু প্রত্যাঘাত ব্যবস্থা। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল— যদি প্রথম আঘাতে সোভিয়েত নেতৃত্ব এবং কমান্ড-অ্যান্ড-কন্ট্রোল ধ্বংস হয়ে যায়, তবুও মস্কোর পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র স্বয়ংক্রিয়ভাবে চূড়ান্ত প্রত্যাঘাত চালাতে সক্ষম হবে।

পরমাণু অস্ত্রবাহী সাবমেরিন মোতায়েন (Belarus)
মেদভেদেভের এই হুঁশিয়ারির পরই শুক্রবার ট্রাম্প ঘোষণা করেন, রাশিয়া জলসীমার কাছে দু’টি পরমাণু অস্ত্রবাহী সাবমেরিন মোতায়েন করা হবে(Belarus)। ট্রাম্পের দাবি, “রাশিয়ার মন্তব্য ছিল প্ররোচনামূলক, তাই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।”
আন্তর্জাতিক মহল মনে করছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়ার মধ্যে চলমান বাকযুদ্ধ এখন সরাসরি সামরিক শক্তি প্রদর্শনের দিকে এগোচ্ছে। আর সেই উত্তেজনার জেরে ইউক্রেন সীমান্তে বেলারুশের এই কৌশলগত প্রস্তুতি ইউরোপীয় নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।