Last Updated on [modified_date_only] by Aditi Singha
ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল : বাংলাসাহিত্য সম্পূর্ণ ব্যক্তি নিরপেক্ষ, আমাদের পূর্বপুরুষেরা “কী বলেছেন” (Bengali literature), “কেন বলেছেন“, “কোথায় বলেছেন“, “কীভাবে বলেছেন“, এবং “কাকে বলেছেন” সেই সব দিয়েই বর্তমানে সাহিত্য রচনার প্রচলন।কাব্যিক ভাষা কিংবা এক কথায় বলতে গেলে, “বাংলা ভাষায় রচিত সাহিত্যকর্ম বাংলা সাহিত্য নামে পরিচিত”।
আসল কথা হল, মানুষ যেদিন থেকে লিখতে পড়তে শিখেছে তবে থেকেই সাহিত্য রচনার প্রচলন ঘটেছে। আদিমকালে পাথরের গায়ে লিখে রাখা কোন ছবি বা চিহ্ন সেটাও সাহিত্য। কিংবা গাছের পাতা বা ছালে লিখে রাখা কোন অক্ষর বা চিহ্ন তাও সাহিত্য। প্রাচীনকালে লিপিতে লিখে রাখা অহেতুক নকশা দিয়েই বর্তমানে ভাষাবিদগণ সাহিত্য রচনা উপস্থাপনা করছেন।
সাহিত্য কী? (Bengali literature)
“সাহিত্য হলো নিজের কথা“। কোন ব্যক্তি যদি নিজের মনের ভাব প্রকাশ করার জন্য কোনো কিছু লিখে রাখে তাই হলো সাহিত্য। যুগের পর যুগ চলে আসছে এসব সাহিত্য রচনা করে।
“সাহিত্য” শব্দটির সহজ অর্থ হলো—সঙ্গ বা সহভাগিতা (Bengali literature)। কিন্তু এর গভীর অর্থ অনেক বিস্তৃত। সাহিত্য মানে কেবল কিছু লেখা নয়; এটি হলো মানুষের মনের ভাব, অনুভূতি, অভিজ্ঞতা ও কল্পনার রূপায়ণ। কোনো ব্যক্তি যদি নিজের অনুভূতি, চিন্তা, অভিজ্ঞতা কিংবা সমাজের বাস্তবতা লিখে রাখেন, তাই-ই সাহিত্য। তাই সাহিত্যকে বলা যায়—“নিজের মনের কথা”।
মানবসভ্যতার আদিকাল থেকেই সাহিত্য রচনার সূত্রপাত। মানুষ যখন লিখতে পড়তে শেখেনি, তখনও গুহাচিত্র, পাথরের গায়ে আঁকা অদ্ভুত সব রেখা বা প্রতীক, গাছের ছাল বা পাতায় খোদাই করা কোনো চিহ্ন—এসবকেই আমরা সাহিত্যর প্রাচীনতম রূপ বলে মানতে পারি। সেই সময় মানুষ ছবি এঁকে নিজের মনের ভাব প্রকাশ করত, যা আজকের দিনে ভাষা ও অক্ষরে রূপান্তরিত হয়েছে। সুতরাং সাহিত্যকে কেবল কাগজে-কলমে সীমাবদ্ধ করা যায় না; মানুষের অভিব্যক্তি প্রকাশের সব মাধ্যমই সাহিত্যের অন্তর্ভুক্ত।
বাংলা সাহিত্যের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো, এটি ব্যক্তিনিরপেক্ষ ধারা। অর্থাৎ এখানে লেখক ব্যক্তি নয়, বরং তাঁর লেখা, বক্তব্য, ভাবনা, কোথায় এবং কেন তিনি লিখেছেন—এসবকেই প্রধান বিবেচনা করা হয়। এজন্যই যুগের পর যুগ ধরে বাংলা সাহিত্য সমাজ ও সংস্কৃতির প্রতিফলন হয়ে এসেছে।
বাংলা সাহিত্যের যুগভাগ (Bengali literature)
কালবিচারে বাংলা সাহিত্যকে সাধারণত তিনটি প্রধান যুগে ভাগ করা হয়—
১. প্রাচীন যুগ (৬৫০–১২০০)
২. মধ্যযুগ (১২০০–১৮০০)
৩. আধুনিক যুগ (১৮০০–বর্তমান)
সাহিত্যচর্চা কেবল নামমাত্র! (Bengali literature)
বাংলা সাহিত্য কেবল কিছু লেখা নয়, বরং এটি হলো একটি জাতির আত্মার দলিল। যুগে যুগে কবি, সাহিত্যিক ও শিল্পীরা তাঁদের অনুভূতি, ভাবনা, আনন্দ-বেদনা, সমাজের পরিবর্তন—সবকিছুকেই সাহিত্যে ধারণ করেছেন। প্রাচীন চর্যাপদ থেকে শুরু করে সমকালীন কবিতা, গল্প, উপন্যাস—সব মিলিয়ে বাংলা সাহিত্য আজ বিশ্বের অন্যতম সমৃদ্ধ সাহিত্যভাণ্ডার। এটি একদিকে ব্যক্তির অন্তর্জগৎ, অন্যদিকে সমাজ-সংস্কৃতির আয়না। তাই বাংলা সাহিত্যকে বলা যায়—“অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের এক চিরন্তন সেতুবন্ধন”।
আরও পড়ুন: Bengali Language: কথায় এক, লেখায় অন্য! ভাষার শুদ্ধিকরণের প্রয়োজনীয়তা কী জানেন?
বর্তমানে সাহিত্যচর্চা কেবল নামমাত্র। সোশ্যাল মিডিয়ার জগতে যেসব কিছুই লেখা হোক না কেন, একটা সময়ের পর তার স্বীকৃতি থাকবে না, যতক্ষণ না সেটা খাতায়-কলমে কিংবা বইতে লেখা হচ্ছে। আবার সব কিছুও বইতে লেখা যায় না, সমাজের তকমায় রবীন্দ্রনাথ একজনই।