ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: নিজের মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইছেন না জানালেন ভরতপুরের (Humayun Kabir) তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। তৃণমূলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির অন্যতম সদস্য শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কে শো-কজ়ের জবাব দিলেন তিনি। শো-কজ়ের জবাব দেওয়ার জন্য তাঁকে সোমবার পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু শনিবারই ২ পাতার জবাব পাঠিয়ে দেন হুমায়ুন।
হুমায়ুন শুভেন্দুর ‘চ্যাংদোলা’ মন্তব্যের পাল্টা (Humayun Kabir)
গত মঙ্গলবার বিধানসভার বাইরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেছিলেন, ‘২০২৬-এ বিজেপি ক্ষমতায় এলে তৃণমূলের জয়ী মুসলিম বিধায়কদের চ্যাংদোলা করে বাইরে ছুড়ে ফেলা হবে।’ তাঁর এই মন্তব্যের পাল্টা বুধবার বিধানসভায় সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সর্বধর্ম সমন্বয়ের পাঠ দিয়েছিলেন তিনি। গত বৃহস্পতিবার হুমায়ুন (Humayun Kabir) শুভেন্দুর ‘চ্যাংদোলা’ মন্তব্যের পাল্টা বলেছিলেন, ‘একটা বিধায়ককে চ্যাংদোলা করে দেখাক। কত হিম্মত দেখব। আমার কাছে আগে আমার জাতি, তার পর দল। আমার জাতিকে আক্রমণ করলে আমি চুপ থাকব না।’ ওই মন্তব্যের পরেই তাঁকে তৃণমূলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির অন্যতম সদস্য শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় শো-কজ় করেছিলেন।
‘তিন পাতার জবাব দিয়েছিলাম’ (Humayun Kabir)
শুক্রবার রাতে হুমায়ুনকে (Humayun Kabir) ফোনও করেন শোভনদেব। তখন সোমবার পর্যন্ত সময় চেয়েছিলেন হুমায়ুন। তবে শেষ পর্যন্ত শনিবার সকালে তিনি শো কজ়ের জবাব দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন। ওই তৃণমূল বিধায়কের কথায়, ‘‘শুক্রবার রাত ৮টা ১২ মিনিট নাগাদ আমার সঙ্গে কথা হয় শোভনদেববাবুর। তার পর আমি শো কজ় চিঠি দেখি। এক পাতার শো কজ় চিঠি দিয়েছিল। আমি দু’পাতার জবাব দিয়েছি। শোভনদেব যে হোয়াট্সঅ্যাপ নম্বর থেকে শো কজ় চিঠি পাঠিয়েছিলেন, সেই নম্বরে আমি ৯টা ৩৫ মিনিটে আমার জবাব পাঠিয়ে দিয়েছি পিডিএফ করে।’’ হুমায়ুন আরও বলেন, ‘‘এর আগে এক পাতার শো কজ়ের চিঠি দিয়েছিল। তার তিন পাতার জবাব দিয়েছিলাম। আমি বলেছি, আমার কাছে দল আগে নয়। আমি হুমায়ুন কবীর।’’
আরও পড়ুন: Father Kills Daughter: ৪ বছরের কন্যাসন্তানকে রাস্তায় আছাড় মেরে খুন! ভয়ঙ্কর স্বীকারোক্তি ‘বাবা’র
৩১ সেকেন্ডের ভিডিয়োর জন্য ব্যাখ্যা
হুমায়ুনের দাবি, তাঁর ১০ মিনিট ২৯ সেকেন্ডের একটি বক্তব্যের মধ্যে শুধুমাত্র ৩১ সেকেন্ডের একটি ভিডিয়োর জন্য তাঁর কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘দলের পক্ষ থেকে শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় মাত্র সাত লাইনে আমার কাছে আমার বক্তব্যের ব্যাখ্যা চেয়েছিলেন। ৩১ সেকেন্ডের নির্দিষ্ট বক্তব্যে তৃণমূল দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে ও দলের ক্ষতি হয়েছে বলে আমাকে জানানো হয়েছে। আমি তার জবাব দিয়েছি। আমি দলীয় শৃঙ্খলা ভেঙেছি, এমনটা মনে করি না।’’
তিনি সবার আগে মুসলিম প্রতিনিধি
শোভনদেব চট্টোপাধ্য়ায়কে হোয়াট্সঅ্য়াপে সেই চিঠির পিডিএফ ফাইল পাঠিয়ে দিয়েছেন তিনি। কিন্তু, সেই জবাবি চিঠির কোথাওই নিজের মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাননি হুমায়ুন। তাঁর বক্তব্য, তিনি যখন জন্মগ্রহণ করেছিলেন, তখন তৃণমূল কংগ্রেসের কোনও অস্তিত্বই ছিল না। তিনি একটি মুসলিম হিসাবে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। মুসলিম মায়ের পেটে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। আজও তিনি সবার আগে সেই মুসলিম প্রতিনিধি এবং তারপর কোনও দলের – কোনও নেত্রীর অনুগত সৈনিক! এখন কেউ যদি তাঁর গোষ্ঠীকে অসম্মান করেন, তাহলে তিনিও তাঁর জবাব দেবেন। চুপ করে বসে থাকবেন না!