ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ঝাল খাওয়ার প্রতি যারা ভালোবাসা (Bhut Jolokia) রাখেন, তাদের জন্য ভূত জোলোকিয়া বা “ভূত মরিচ” নামটি খুবই পরিচিত। নাগাল্যান্ড থেকে শুরু করে উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে জনপ্রিয় এই লঙ্কা অতিরিক্ত ঝাল স্বাদের জন্য বিখ্যাত। সাধারণ লাল কাঁচালঙ্কার মতো যে কেউ সহজে এর সঙ্গে তাল মেলাতে পারবে না। এ লঙ্কা একবার মুখে দিলে যেন গলা-বুকে আগুন জ্বলে ওঠে। ভূত জোলোকিয়ার আকৃতি ও গঠন দেখে অনেকেই বলেন এটি যেন ভূতের মুখের মতো, তাই এর নামকরণও সেইভাবেই হয়েছে।
বিশ্বের সবচেয়ে ঝাল লঙ্কা (Bhut Jolokia)
একসময় এটি ছিল বিশ্বের সবচেয়ে ঝাল লঙ্কা হিসেবে (Bhut Jolokia) স্বীকৃত, যদিও বর্তমানে ঝাল লঙ্কার তালিকায় পাঁচ নম্বরে রয়েছে ভূত জোলোকিয়া। শুধু ঝালত্বে নয়, পুষ্টিগুণেও এর যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। এতে রয়েছে ভিটামিন ‘এ’, বি-৬, ‘সি’, আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম ও পটাশিয়ামের মতো উপাদান, যা শরীরের জন্য খুবই উপকারী। ভিটামিন ‘এ’ দৃষ্টিশক্তি উন্নত করতে, দাঁত ও হাড় মজবুত রাখতে সাহায্য করে। ভিটামিন ‘সি’ অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট হিসেবে কাজ করে শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং ক্ষত নিরাময়ে সাহায্য করে।
রান্নাতেই সীমাবদ্ধ নয় (Bhut Jolokia)
ভূত জোলোকিয়ার ব্যবহার শুধু রান্নাতেই (Bhut Jolokia) সীমাবদ্ধ নয়। এটি আত্মরক্ষার জন্যও ব্যবহৃত হয়। ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ডিআরডিও) ২০০৯ সালে এই লঙ্কার গুঁড়ো দিয়ে একটি স্প্রে তৈরি করেছিল, যা জঙ্গি তাড়ানোর কাজে ব্যবহৃত হয়। স্প্রে যখন কারো চোখে বা নাকে লাগে, তখন তা প্রচণ্ড জ্বালা এবং প্রদাহ সৃষ্টি করে, যা চোখের দৃষ্টিশক্তি কমিয়ে দিতে পারে এবং নাক দিয়ে হাঁচি থামতেই চাইবে না।
বেশ সাবধানতা ও যত্নের প্রয়োজন
ভূত জোলোকিয়া বাড়িতে ফলানোর জন্য বেশ সাবধানতা ও যত্নের প্রয়োজন। প্রথমেই লঙ্কার গ্লাভস পরে হাত ধুয়ে বীজ বের করতে হবে যেন বীজের তেল ত্বকে লেগে যাওয়া থেকে বিরত থাকা যায়। বীজগুলি ২-৩ দিন জলে ভিজিয়ে রাখতে হবে, যাতে তা নরম হয়ে যায়। এরপর বীজগুলি ভালো মাটি দিয়ে টবে পুঁতে দিতে হবে। মাটির মধ্যে অবশ্যই পুরনো গোবর সার ও পচা পাতা মিশাতে হবে, কারণ এটি গাছের জন্য পুষ্টি সরবরাহ করে। মাসে একবার জৈব সার দেওয়া উচিত, যাতে গাছ সুস্থ থাকে।

তীব্র রোদ ‘না’
গাছকে রোজ চার ঘণ্টা রোদ দিতে হবে, তবে সরাসরি তীব্র রোদ থেকে বিরত থাকতে হবে। জল দেওয়ার ক্ষেত্রে যত্ন নিতে হবে যাতে গাছের গোড়ায় জল জমে না থাকে, কারণ এতে গোড়ার পচন হতে পারে। তাছাড়া জৈব কীটনাশক ব্যবহার করলে গাছ ভালো থাকবে এবং আক্রমণ কম হবে।
আরও পড়ুন: Supreme Court: কলেজিয়ামের সুপারিশে শিলমোহর! সুপ্রিম কোর্টে ৩ বিচারপতি নিয়োগ কেন্দ্রের
ঝাল লঙ্কা
সংক্ষেপে, ভূত জোলোকিয়া শুধু এক ধরনের ঝাল লঙ্কা নয়, এটি স্বাদের পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর ও আত্মরক্ষার জন্যও অমূল্য একটি উদ্ভিদ। যারা ঝাল খেতে ভালোবাসেন এবং নিজেই গাছ লাগিয়ে তাতে যত্ন নিতে চান, তাদের জন্য এই লঙ্কা অত্যন্ত আকর্ষণীয়। তবে এর ঝালত্বের কথা মাথায় রেখে সাবধানতার সাথে ব্যবহার করাই উচিত।