ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: বিলাওয়াল ভুট্টো বলেন (Bilawal Bhutto on Masood Azhar), পাকিস্তান জইশ-ই-মোহাম্মদ প্রধান মাসুদ আজহারের অবস্থান জানে না, যার অর্থ তিনি আফগানিস্তানে থাকতে পারেন।
পাকিস্তানের দাবি, মাসুদ আজহারের অবস্থান সম্পর্কে কোনও তথ্য নেই (Bilawal Bhutto on Masood Azhar)
পাকিস্তানের রাজনীতিক ও প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি বলেছেন (Bilawal Bhutto on Masood Azhar), কুখ্যাত জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মদের প্রধান মাসুদ আজহার পাকিস্তানে আছেন কি না, সে সম্পর্কে ইসলামাবাদের কাছে কোনও সুনিশ্চিত তথ্য নেই। আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, যদি ভারতের পক্ষ থেকে নির্ভরযোগ্য তথ্য দেওয়া হয় যে মাসুদ আজহার পাকিস্তানের মাটিতে অবস্থান করছেন, তাহলে ইসলামাবাদ তাকে গ্রেফতার করতে প্রস্তুত। বিলাওয়াল বলেন, “যদি এবং যখন ভারত সরকার আমাদের সঙ্গে তথ্য ভাগ করে নেবে যে তিনি পাকিস্তানে রয়েছেন, তখন আমরা তাঁকে গ্রেফতার করতে খুশি হব।” তিনি আরও বলেন, “আসলে ভারত সরকার এখনও সেরকম কোনও তথ্য আমাদের দেয়নি।”
ভারতের একাধিক জঙ্গি হামলায় যুক্ত মাসুদ আজহার (Bilawal Bhutto on Masood Azhar)
মাসুদ আজহার ভারতের অন্যতম চরমপন্থী শত্রু (Bilawal Bhutto on Masood Azhar)। ২০০১ সালের সংসদ হামলা, ২০০৮ সালের মুম্বই হামলা, ২০১৬-র পাঠানকোট হামলা এবং ২০১৯ সালের পুলওয়ামা আত্মঘাতী বিস্ফোরণের সঙ্গে তাঁর নাম জড়িয়ে আছে। ২০১৯ সালে রাষ্ট্রসংঘ তাঁকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী হিসেবে ঘোষণা করে। তাঁকে ১৯৯৯ সালে কান্দাহার বিমান অপহরণ ঘটনার সময় ভারতীয় জেলে থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল বন্দি বিনিময়ের চুক্তিতে। ভারত দীর্ঘদিন ধরে মাসুদ আজহার এবং লস্কর-ই-তৈবার প্রতিষ্ঠাতা হাফিজ সাঈদ-কে ভারতের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু পাকিস্তান বরাবরই তাদের দেশবাসী হিসেবে স্বীকার করেনি বা সন্ত্রাসবাদে যুক্ত থাকার অভিযোগ মানেনি।
‘হাফিজ সাঈদ মুক্ত নন, আজহার সম্ভবত আফগানিস্তানে’ (Bilawal Bhutto on Masood Azhar)
নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনের জবাবে বিলাওয়াল ভুট্টো বলেন, “হাফিজ সাঈদ মুক্ত নন। তিনি পাকিস্তান সরকারের হেফাজতে রয়েছেন। আর মাসুদ আজহারের বিষয়ে বলতে গেলে, আমরা তাঁকে খুঁজে বের করতে পারিনি, গ্রেফতারও করতে পারিনি। তাঁর অতীত আফগান জিহাদের সঙ্গে যুক্ত। সেই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা মনে করি, তিনি আফগানিস্তানে রয়েছেন।” তিনি আরও বলেন, “যখন কোনও দেশের সঙ্গে সন্ত্রাসবিরোধী সহযোগিতা হয়, তখন একে অপরের উদ্বেগের বিষয়গুলো ভাগ করে নেওয়া হয়। এইভাবেই লন্ডন, নিউ ইয়র্ক এবং পাকিস্তানে বহু হামলা রোখা গেছে।”
আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের পক্ষে কঠিন ব্যবস্থা নেওয়া
আফগানিস্তানে বর্তমানে তালিবান ক্ষমতায় রয়েছে। এই প্রেক্ষিতে বিলাওয়াল বলেন, “যদি আজহার আফগানিস্তানে থাকেন, তবে এটা ভুলে গেলে চলবে না যে পশ্চিমি বিশ্ব ওই দেশ তালিবানদের হাতে তুলে দিয়েছে। এক সময় যাদের তারা সন্ত্রাসবাদী বলত, এখন তাদেরই আফগানিস্তানের শাসক বলে মেনে নিয়েছে। যদি ন্যাটো পর্যন্ত আফগানিস্তানে সফল না হয়, তাহলে পাকিস্তানের পক্ষে সেখানে গিয়ে কোনও অভিযান চালানো সম্ভব নয়।” তিনি বলেন, “পাকিস্তানের কোনও স্বার্থ নেই যে মাসুদ আজহার বা অন্য কোনও সন্দেহভাজন ব্যক্তি সক্রিয় থাকুক। আমরা কাউকে লুকিয়ে রাখার পক্ষপাতী নই।”
পহেলগেম জঙ্গি হামলার পর ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’
২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পাহেলগামে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার পর ভারত ‘অপারেশন সিঁদুর’ চালায়। এই অভিযানে পাকিস্তানের একাধিক জঙ্গি ঘাঁটি লক্ষ্য করে আক্রমণ চালানো হয়। ভারতের সেনাবাহিনী মুরিদকেতে লস্কর-ই-তৈবার সদর দফতর এবং বাহাওয়ালপুরে জইশ-ই-মোহাম্মদের ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালায়। এই হামলায় মাসুদ আজহার নিজেই দাবি করেছেন, তাঁর পরিবারের ১০ সদস্য এবং চারজন ঘনিষ্ঠ সহচর নিহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: আরও পড়ুন: Iran Israel Conflict : ইজরায়েল ও মার্কিন হামলার জেরে তিন সপ্তাহ বন্ধ থাকার পর খুলে গেল ইরানের আকাশসীমা!
ভারতের বক্তব্য
বিলাওয়াল ভুট্টোর এই মন্তব্য ও অবস্থান পাকিস্তানের দীর্ঘদিনের নীতির ধারাবাহিকতা বজায় রাখলেও, ভারতের তরফ থেকে এই যুক্তিগুলি ইতিপূর্বে অগ্রাহ্য করা হয়েছে। ভারতের বক্তব্য, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে পাকিস্তান যদি সত্যিই আন্তরিক হয়, তাহলে এসব জঙ্গি নেতাদের আশ্রয় দেওয়া বন্ধ করতে হবে।