ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: কাঁকুড়গাছির বিজেপি কর্মী (BJP worker Abhijit Sarkar murder case) অভিজিৎ সরকার খুনের মামলায় জেল হেফাজতে থাকা চার পুলিশ কর্মীর জামিনের আবেদনের মামলার শুনানিতে শুক্রবার আবেদনকারীদের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের করা মন্তব্যে চরম ক্ষুব্ধ হয়ে মামলা থেকে সরে দাঁড়ালেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি শুভ্রা ঘোষ।
বিজেপি কর্মীর রহস্যজনকভাবে মৃত্যু (BJP worker Abhijit Sarkar murder case)
২০২১ সালের দোসরা মেয়ে বিধানসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার দিন (BJP worker Abhijit Sarkar murder case) রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হয় কাঁকুড়গাছির বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকারের। হাইকোর্টের নির্দেশে মামলার তদন্তভার গ্রহণ করে সিবিআই। সম্প্রতি এই মামলায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দায়ের করা অতিরিক্ত চার্জশিটে নাম ওঠেো বেলেঘাটার তৃণমূল বিধায়ক পরেশ পাল, কলকাতা কর্পোরেশনের মেয়র পারিষদ স্বপন সমাদ্দার এবং কাউন্সিলর পাপিয়া ঘোষের। তদন্তে গাফিলতি এবং তথ্য প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ ওঠে তৎকালীন নারকেলডাঙ্গা থানার ওসি শুভজিৎ সেন, সাব-ইন্সপেক্টর রত্না সরকার এবং হোমগার্ড দীপঙ্কর দেবনাথ সহ মোট চার পুলিশ কর্মীর বিরুদ্ধে। গত সপ্তাহে নিম্ন আদালত ওই পুলিশকর্মীদের ৩১ জুলাই পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয়। তারপরই জামিনের আবেদন করে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন সাব-ইন্সপেক্টর রত্না সরকার এবং দীপঙ্কর দেবনাথ।
জামিনের আবেদনের মামলার শুনানি (BJP worker Abhijit Sarkar murder case)
শুক্রবার সেই জামিনের আবেদনের মামলার শুনানি চলছিল বিচারপতি শুভ্রা ঘোষের (BJP worker Abhijit Sarkar murder case) এজলাসে। শুনানির শুরুতেই সিনিয়র আইনজীবী এজলাসে উপস্থিত না থাকায় সিবিআই-এর আইনজীবী শুনানি কিছুক্ষণ পর শুরু করার আবেদন জানান। কিন্তু সেই আবেদন খারিজ করে দিয়ে মামলাকারীদের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে সওয়াল শুরু করার কথা বলে আদালত। তখনই বিচারপতি শুভ্রা ঘোষ সব পক্ষকে জানান, যেহেতু আগামী সোমবার থেকে ১৫ দিন তিনি সার্কিট বেঞ্চে থাকবেন, তাই এই মামলার বাকি অংশের শুনানি ১৫ দিন পর তিনি শুনবেন। এমনকি দ্রুত শুনানির জন্য বিচারপতি শুভ্রা ঘোষ এই মামলার শুনানি অন্য বিচারপতির বেঞ্চে করারও সুযোগ দেন। কিন্তু সব পক্ষই বিচারপতি শুভ্রা ঘোষের এজলাসেই শুনানির আর্জি জানায়।
সিবিআই-এর বিরুদ্ধে তোপ
এদিন শুনানির শুরুতেই সওয়ালে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় সিবিআই-এর বিরুদ্ধে তোপ দাগেন। প্রশ্ন তোলেন চার বছর পর হঠাৎ কেন গ্রেফতার করা হল পুলিশ কর্মীদের? এবং শুক্রবারই পুলিশকর্মী রত্না সরকারের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন চেয়ে রায় দেওয়ার পক্ষে জোড় সওয়াল করেন।
আরও পড়ুন: Weather Update: বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপের ভ্রুকুটি, কয়েক ঘণ্টাতেই ভাসবে কোন কোন জেলা?
কিন্তু বিচারপতি শুভ্রা ঘোষ পরিষ্কার জানিয়ে দেন, ‘এই মামলা আজই শেষ করে রায় দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ এর মধ্যে অনেক আইনি দিক আছে।’ বিচারপতির এই বক্তব্যের পরই কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় অন্য এক বিচারপতির উদাহরণ টেনে ভরা আদালতে বলেন, ‘এরকম আচরণ উনিও করেন। আমাদের বিচারপতিদের কৃপার দিকে তাকিয়ে থাকতে হয়। এটাই দুর্ভাগ্য।’
পাল্টা ধমক দিয়ে মামলা ছাড়ার কথা
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই মন্তব্য শুনেই রীতিমতো ক্ষুব্ধ হন বিচারপতি শুভ্রা ঘোষ। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাল্টা ধমক দিয়ে মামলা ছাড়ার কথা জানিয়ে দেন বিচারপতি শুভ্রা ঘোষ। বিচারপতি বলেন, ‘কোর্ট এমন আচরণ বরদাস্ত করবে না। অনেকক্ষণ ধরে আদালত সম্পর্কে একাধিক মন্তব্য করছেন। সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। আপনার লেকচার আদালত শুনবে না। আমি এই মামলা ছেড়ে দিচ্ছি। অন্য কোনও বেঞ্চে যান।’