ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: চতুর্থ দিনে দ্বিতীয় ইনিংসে করুণ এবং কেএল রাহুল (Ravi Shastri on Karun Nair Dismissal) ভারতকে ১ উইকেটে ৪১ রানে পৌঁছে দিয়েছিলেন, কিন্তু পেসার ব্রাইডন কার্সের একটি ডেলিভারিতে করুণ কোনও শট না দেওয়ার কারণে তাকে আউট ঘোষণা করা হয়।
পন্থের রানআউট ছিল প্রথম মোড় ঘোরানো ঘটনা (Ravi Shastri on Karun Nair Dismissal)
প্রাক্তন ভারতীয় কোচ রবি শাস্ত্রী লর্ডসে হওয়া তৃতীয় টেস্টে ইংল্যান্ডের পক্ষে ম্যাচ ঘুরিয়ে দেওয়া দুটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হিসেবে চিহ্নিত করেছেন ঋষভ পন্থের প্রথম ইনিংসের আউট এবং করুণ নায়ারের দ্বিতীয় ইনিংসের উইকেট। ১৯৩ রানের লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে নেমে ভারত গুটিয়ে যায় ১৭০ রানে (Ravi Shastri on Karun Nair Dismissal)। ইংল্যান্ড জেতে ২২ রানে এবং সিরিজে এগিয়ে যায় ২-১। ‘দ্য আইসিসি রিভিউ’ অনুষ্ঠানে শাস্ত্রী বলেন, “এই ম্যাচের মোড় ঘোরানোর আসল মুহূর্ত ছিল প্রথম ইনিংসে ঋষভ পন্থের আউট হওয়া।”
স্টোকসের উপস্থিত বুদ্ধির প্রশংসা (Ravi Shastri on Karun Nair Dismissal)
তিনি বলেন (Ravi Shastri on Karun Nair Dismissal), “বেন স্টোকস অসাধারণ উপস্থিত বুদ্ধি দেখিয়ে লাঞ্চের ঠিক আগে পন্থকে রানআউট করে দিলেন। ওটা ছিল সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত। কারণ ওই সময় ভারত দখল নিয়েছিল ম্যাচের এবং লিড নেওয়ার পথে ছিল।”
দ্বিতীয় ইনিংসে করুণ নায়ারের ভুলে ম্যাচের গতি বদল (Ravi Shastri on Karun Nair Dismissal)
চতুর্থ দিনে দ্বিতীয় ইনিংসে করুণ নায়ার এবং কেএল রাহুল মিলে ভারতের স্কোর নিয়ে যান ৪১/১ পর্যন্ত। কিন্তু করুণ নায়ার পেসার ব্রাইডন কার্সের এক সোজা বল ছেড়ে দিয়ে এলবিডব্লিউ হয়ে যান। এরপর ভারত ধসে পড়ে। স্কোর দাঁড়ায় ৮২/৭, যা থেকে ইংল্যান্ডের জয় সহজ হয়ে যায়। শাস্ত্রী বলেন, “দ্বিতীয় ইনিংসে ৪০/১ অবস্থায় করুণের ওভাবে সোজা বল ছেড়ে দেওয়াটা বিশাল মনোসংযোগের অভাব। ওই আউটটা ম্যাচের গতি ঘুরিয়ে দেয়।”
শুরুর ব্যাটারদের আরও দৃঢ়তা দরকার ছিল
তিনি মনে করিয়ে দেন, “যখন সিরাজ, বুমরাহ আর জাদেজা ব্যাট করছিল, তখন ৪০ ওভারের পর বল তেমন কিছু করছিল না। ওরা যথেষ্ট জমাট ব্যাটিং করছিল। লাঞ্চের সময় যখন টার্গেট দাঁড়াল ৮২, তখন মনে হচ্ছিল, পরের দশ মিনিটেই কাজ শেষ। কিন্তু সেই ৮২ থেকে ২২-তে নামিয়ে আনা ছিল ইংল্যান্ডের দারুণ কৃতিত্ব। আমাদের টপ অর্ডার যদি একটু বেশি দৃঢ় থাকত, তাহলে এই ম্যাচটা ভারতের হয়ে যেতে পারত।”
ভারত এখনও ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষমতা রাখে
শাস্ত্রী বলেন, “এই লর্ডস টেস্টটা অনেকটা ২০২১ সালের লর্ডস টেস্টের মতো, যখন ভারত প্রথমে ব্যাট করেছিল এবং জিতেছিল। সেইবারও রান ছিল প্রায় সমান, শেষ ইনিংসে ধস। এবার সেটা ইংল্যান্ড করেছে। এখনো দুই টেস্ট বাকি, কিছুই বলা যায় না। ভারত যদি ঘুরে দাঁড়ায়, তাহলে ওভালের শেষ টেস্ট হবে রুদ্ধশ্বাস। এই পনেরো দিনের সিরিজটা চরম উত্তেজনাকর হয়েছে। আমার মতে, ভাগ্য একটু সঙ্গ দিলে ভারত ৩-০ এগিয়ে থাকতে পারত।”
স্টোকস এবং ইংল্যান্ডের ভূয়সী প্রশংসা
রবি শাস্ত্রী ইংল্যান্ড এবং তাদের অধিনায়ক স্টোকসের প্রশংসা করে বলেন, “তারা কঠিন সময়ে সুযোগটা কাজে লাগিয়েছে। দরজায় ফাঁক দেখেই সেটা খুলে দিয়েছে। পিচে কিছু ছিল না। যদি আগের দিন দুটো উইকেট কম পড়ত, তাহলে ভারত এই রান তুলে ফেলত।” চতুর্থ দিনের শেষে ভারতের স্কোর ছিল ৫৮/৪।
স্টোকসের বল করা ছিল ম্যাচ নির্ধারক
শাস্ত্রী আরও বলেন, “স্টোকসের সেই স্পেলগুলো ছিল টেস্ট নির্ধারক। আমি জানতাম এজবাস্টনে ও নিজেকে বাঁচিয়ে রেখেছে লর্ডসের জন্য। শেষ দিনে সে আট, নয় ওভারের স্পেল করে গেল, শেষে দশ ওভার টানা বল করল ম্যাচ জেতানোর জন্য।” স্টোকস এই টেস্টে ইংল্যান্ডের যে কোনও বোলারের চেয়ে বেশি ২৪ ওভার বল করেছেন। তিনটি উইকেট নিয়েছেন, যার মধ্যে রাহুলের মূল্যবান উইকেটও রয়েছে।