ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: কার্তিক মহারাজের এফআইআর খারিজের আবেদনের মামলায় রুদ্ধদ্বার শুনানিতে আপত্তি রাজ্যের(Calcutta High Court)। কেন রুদ্ধদ্বার শুনানি চাইছেন, তার কারণ দর্শিয়ে আগামীকালের মধ্যে মামলাকারীর আইনজীবীকে আবেদন করার নির্দেশ বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের। আগামী ৭ জুলাই, সোমবার মামলার পরবর্তী শুনানি। ততদিন পর্যন্ত কার্তিক মহারাজ সহ অপর মামলাকারীর বিরুদ্ধে পুলিশ কোনও কড়া পদক্ষেপ করবে না বলে আদালতে মৌখিকভাবে আশ্বাস রাজ্যের।
পুলিশি পদক্ষেপে স্থগিত, মৌখিক আশ্বাস রাজ্যের (Calcutta High Court)
ধর্ষণের অভিযোগে কার্তিক মহারাজের এফআইআর খারিজের আবেদনের মামলার শুনানি ছিল বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর এজলাসে(Calcutta High Court)। গতকাল তথা বুধবার এই মামলার শুনানিতে কার্তিক মহারাজের আইনজীবীরা আদালতে রুদ্ধদ্বার শুনানির আবেদন জানিয়েছিলেন। সেই আবেদনে সম্মত জানান বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত।বৃহস্পতিবার সেই মতো রূদ্ধদ্বার শুনানি শুরু হলে প্রথমেই তাতে আপত্তি জানান রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত। কেন এই মামলার শুনানি ইন ক্যামেরা হবে, ওপেন কোর্টে হবে না, সেই প্রশ্ন তোলেন রাজ্যের আইনজীবী। রুদ্ধদ্বার শুনানিতে কেন রাজ্যের আপত্তি? পাল্টা প্রশ্ন তোলেন মামলাকারীর আইনজীবীরা। তাঁরা দাবি করেন, কার্তিক মহারাজকে অপমান করতেই রাজ্য এই সমস্ত যুক্তি খাড়া করছে।
মহিলার অভিযোগ (Calcutta High Court)
সব পক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত আগামীকাল তথা শুক্রবারের মধ্যে মামলাকারীর আইনজীবীদের কারণ দর্শিয়ে একটি আবেদন করতে বলেন, যে কেন তাঁরা রুদ্ধদ্বার শুনানি চাইছেন(Calcutta High Court)।মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ৭ জুলাই, সোমবার। ততদিন পর্যন্ত কার্তিক মহারাজ এবং অপর মামলাকারীর বিরুদ্ধে কোনরকম কড়া পদক্ষেপ পুলিশ নেবে না বলে বৃহস্পতিবার আদালতে মৌখিকভাবে আশ্বাস দিয়েছেন এজি। যদি পরবর্তী শুনানির আগে পুলিশ কার্তিক মহারাজ সহ অপর মামলাকারীর বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করে, তাহলে আদালত কড়া ব্যবস্থা নেবে বলেও এদিন জানিয়ে দিয়েছেন বিচারপতি।

নোটিশ এড়িয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ মহারাজ (Calcutta High Court)
উল্লেখ্য, গত ২৮ জুন কার্তিক মহারাজের বিরুদ্ধে মুর্শিদাবাদের নবগ্রাম থানায় কার্তিক মহারাজের বিরুদ্ধে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস, প্রতারণা এবং জোর করে গর্ভপাত করানোর অভিযোগ দায়ের করেন এক মহিলা(Calcutta High Court)। অভিযোগের ভিত্তিতে গত সোমবার নবগ্রাম থানার পুলিশ বেলডাঙার ভারত সেবাশ্রম সংঘের অফিসে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কার্তিক মহারাজকে হাজিরার নোটিস দিয়ে আসে। তাঁকে মঙ্গলবার সকাল ১০টার মধ্যে থানায় হাজিরা দিতে বলা হয়। হাজিরার নোটিশ উপেক্ষা করে গত মঙ্গলবারই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন প্রদীপ্তানন্দ মহারাজ ওরফে কার্তিক মহারাজ। তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া এফআইআর খারিজ করার আবেদন আদালতে জানান।

প্রত্যক্ষদর্শীর অভিযোগ এবং সংযুক্ত মামলা (Calcutta High Court)
অভিযোগকারী মহিলা দাবি করেন, ২০১৩ সালে কার্তিক মহারাজ তাঁকে মুর্শিদাবাদের নবগ্রাম থানার চাণক্য এলাকায় এক আশ্রমের প্রাইমারি স্কুলে তাঁকে শিক্ষিকার পদে নিয়োগের ব্যবস্থা করে দেন(Calcutta High Court)। স্কুলে থাকার জন্য তাঁকে একটি ঘরও দেওয়া হয়। এক রাতে আচমকাই সেখানে মহারাজ হাজির হন এবং তাঁকে শারীরিক সম্পর্কের প্রস্তাব দেন। বাধ্য হয়ে তিনি তা মেনে নেন বলে জানান অভিযোগকারিণী। তাঁর আরও অভিযোগ, দিনের পর দিন তাঁর উপর শারীরিক অত্যাচার চালানো হতো। এমনকি, তিনি সন্তানসম্ভবা হয়ে পড়লে জোর করে তাঁর গর্ভপাতও করানো হয়। এরপরই গত ২৮ জুন কার্তিক মহারাজের বিরুদ্ধে নবগ্রাম থানায় অভিযোগ করেন ওই মহিলা। অভিযোগের ভিত্তিতে কার্তিক মহারাজের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়। ধর্ষণ-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ। এরপরই অভিযোগের ভিত্তিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কার্তিক মহারাজকে নোটিশ পাঠিয়ে গত মঙ্গলবার সকাল দশটার মধ্যে থানায় হাজিরা দেওয়ার কথা বলে পুলিশ(Calcutta High Court)। কিন্তু সেই নির্দেশ উপেক্ষা করে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি।
প্রত্যক্ষদর্শীকে পুলিশ হেনস্থা করছে (Calcutta High Court)
পাশাপাশি কার্তিক মহারাজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগে প্রত্যক্ষদর্শীকে পুলিশ হেনস্থা করছে, এমনটাই অভিযোগ নিয়ে গত বুধবার বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের দৃষ্টি আকর্ষণ করে মামলা দায়েরের অনুমতি চান আইনজীবী(Calcutta High Court)। বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত জানান এই মামলা গ্রহণের এক্তিয়ার তাঁর নেই। এই আবেদন করতে হলে তাঁকে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে আবেদন জানাতে হবে। সেইমতো বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে মামলা দায়ের করেন ওই প্রত্যক্ষদর্শী। পরে সেই মামলাটিকেও বিচারপতির জয় সেনগুপ্তর দায়ের হওয়া মূল মামলার সঙ্গে যুক্ত করা হয়। বৃহস্পতিবার শুনানি তে ওই প্রত্যক্ষদর্শীর বিরুদ্ধেও কোনও কড়া পদক্ষেপ করা হবে না বলেও আশ্বস্ত করেছেন রাজ্যের আইনজীবী(Calcutta High Court)।