ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: প্রায় হেরে যাওয়া নির্বাচনে নাটকীয় পালাবদল ঘটিয়ে ফের কানাডার শাসনক্ষমতায় ফিরছে লিবারাল পার্টি (Canada Election Result)। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর উত্তরসূরি হিসেবে দলের হাল ধরেছিলেন মার্ক কার্নে। আর এবার তিনি দেশের প্রধানমন্ত্রী পদে বসতে চলেছেন — এমনটাই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে ভোট গণনার শেষ পর্যায়ে।
সংকটের মাঝেই আশ্বাস (Canada Election Result)
তিন মাস আগেও কানাডার রাজনৈতিক মানচিত্র ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন(Canada Election Result)। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্রমাগত চাপে পড়ে পদত্যাগ করেন ট্রুডো। দলের অভ্যন্তরীণ সমর্থন এবং আর্থিক দক্ষতার ভিত্তিতে লিবারাল পার্টির নতুন নেতা হন আন্তর্জাতিক ব্যাঙ্কিং খ্যাত কার্নে। সেই সময় থেকেই তিনি নিজেকে তুলে ধরতে শুরু করেন ‘স্থিতিশীলতার প্রতীক’ হিসেবে। আর্থিক সংকট, মূল্যবৃদ্ধি এবং বেকারত্বের পাশাপাশি ট্রাম্প-পরবর্তী আমেরিকার সঙ্গে কূটনৈতিক টানাপোড়েন— এই সমস্ত সংকটে নেতৃত্ব দিতে তিনি যে উপযুক্ত, সেই বার্তাই পৌঁছে দিতে সক্ষম হন ভোটারদের কাছে।
ট্রাম্পের ছায়া ও কানাডার অভ্যন্তরীণ সমীকরণ (Canada Election Result)
ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বার মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কানাডা-আমেরিকা সম্পর্ক (Canada Election Result)। কানাডার একাধিক রফতানিযোগ্য পণ্যে অতিরিক্ত শুল্ক চাপানো থেকে শুরু করে, কানাডাকে ‘আমেরিকার ৫১তম প্রদেশ’ হিসেবে উল্লেখ করে দখল হুমকি— ট্রাম্পের(Donald J. Trump) একের পর এক মন্তব্যে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে কানাডীয় জনতা। সেই শূন্যস্থানই দারুণভাবে কাজে লাগান কার্নে।

কে কোথায় দাঁড়িয়ে? (Canada Election Result)
৩৪৩ আসনের হাউসে লিবারাল পার্টি ১৬০টিরও বেশি আসনে এগিয়ে রয়েছে (Canada Election Result)। যদিও একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত নয়, তবু কার্নের নেতৃত্বে ফের সরকার গঠনের দিকেই এগোচ্ছে তারা। কনজ়ারভেটিভ পার্টির নেতা পিয়েল পয়েলিভার ইতিমধ্যেই হার স্বীকার করেছেন। অন্যদিকে, ‘কিংমেকার’ হবার স্বপ্ন দেখা খলিস্তানপন্থী এনডিপি শোচনীয়ভাবে ব্যর্থ। এমনকি ১২% ভোট না পাওয়ায় জাতীয় দলের স্বীকৃতি হারানোর মুখে তারা। দলের নেতা জগমিত সিংহ পরাজয়ের দায় নিয়ে পদত্যাগও করেছেন।

ভারত ও আমেরিকার দিকে দৃষ্টি(Canada Election Result)
লিবারাল পার্টির জয় স্পষ্ট হতেই কানাডার শহরজুড়ে লাল পতাকা হাতে উদযাপন শুরু করেছে সমর্থকেরা। নির্বাচনী প্রতীক লাল হলেও কার্নে যেন এদিন স্পষ্টত ‘সবুজ সংকেত’ দিয়েছেন ভারতীয় নীতিনির্ধারকদের। সংবাদমাধ্যমে কার্নে বলেন(Mark Carney), “আমাদের সঙ্গে আমেরিকার আগের সম্পর্ক অতীত। বিশ্বাসঘাতকতার জন্য আমরা বিস্মিত। এবার আমরা আমাদের মিত্রদের পুনর্বিবেচনা করব।”ট্রুডোর সময় ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হলেও কার্নে শুরু থেকেই নয়াদিল্লির প্রতি বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাব প্রকাশ করেছেন। ফলে ভারত-কানাডা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নতুন মোড় নিতে পারে বলেই মনে করছেন কূটনীতিকেরা। দিল্লির সাউথ ব্লকে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে সম্ভাব্য কূটনৈতিক উদ্যোগের বিশ্লেষণ।

আরও পড়ুন: Pahalgam Attack : পহেলগাঁও হামলার সাতদিন পার! অধরা জঙ্গিরা কোথায়,কেন মিলছে না উত্তর?
নতুন করে আশার আলো(Canada Election Result)
জাস্টিন ট্রুডোর পদত্যাগ, মার্ক কার্নের আগমন এবং ট্রাম্পের চাপে পড়া এক টালমাটাল কানাডায় নতুন করে আশার আলো দেখিয়েছে এই নির্বাচনী ফল। আন্তর্জাতিক মঞ্চে কানাডার অবস্থান, ভারত-কানাডা সম্পর্কের ভবিষ্যৎ এবং উত্তর আমেরিকার রাজনৈতিক ভারসাম্য— সব কিছুই এই পরিবর্তনের প্রভাব পড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে।