ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: গত ১৪ বছর ধরে দেশে জনগণনা হয়নি (Caste Census)। শেষ বার হয়েছিল ২০১১ সালে। নিয়মানুযায়ী (১০ বছর পরে) হওয়ার কথা ছিল ২০২১ সালে। কিন্তু কোভিডের কারণে তা থমকে যায়। বুধবার খানিকটা আচমকাই কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে ঘোষণা করা হয়, এ বার জনগণনার সঙ্গে হবে জাতগণনাও (কাস্ট সেনসাস)। যে দাবি এত দিন তুলে এসেছেন রাহুল গান্ধী, তেজস্বী যাদব, এমকে স্ট্যালিন, অখিলেশ যাদবেরা, তাতেই সিলমোহর দিয়েছে কেন্দ্র।
‘ভোটমুখী’ রাজ্যগুলির দিকে তাকিয়েই ঘোষণা? (Caste Census)
বুধবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার রাজনৈতিক বিষয়ক কমিটির বৈঠকের শেষে দেশের রেল ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়েছেন, এ বার একসঙ্গে জনগণনা এবং জাতগণনা হবে (Caste Census)। কিন্তু কবে হবে, সে ব্যাপারে কোনও সময়সীমার কথা বলেননি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তার ফলেই প্রশ্ন উঠছে, ‘ভোটমুখী’ রাজ্যগুলির দিকে তাকিয়েই কি ওই ঘোষণা? জাতগণনার মূল ক্ষেত্র অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি (ওবিসি)। পশ্চিমবঙ্গের প্রেক্ষাপটে যা গুরুত্বপূর্ণ। চলতি বছরের শেষে বিহারে বিধানসভা ভোট রয়েছে। বছর ঘুরলে বাংলা, অসম এবং কেরলেও বিধানসভা ভোট। কৌতূহল— জাতগণনার সিদ্ধান্তের কতটা প্রভাব পড়তে পারে বাংলার ভোটে?
প্রক্রিয়ায় ‘ত্রুটি’ থাকার অবকাশ রয়েছে (Caste Census)
২০১১ সালের জনগণনায় যুক্ত কেন্দ্রীয় সরকারের এক অবসরপ্রাপ্ত আমলা বলছেন, ‘‘জাতগণনা শুরু হয়ে গেলে এক রকমের রাজনীতি হতে পারে (Caste Census)। শুরু না-হলে ভিন্ন রাজনীতি হওয়ার অবকাশ রয়েছে। তবে এই ঘোষণা নিয়ে যে নির্বাচনী রাজনীতি হবে, তা বলাই বাহুল্য।’’ ওই অবসরপ্রাপ্ত আমলা এ-ও মনে করিয়ে দিচ্ছেন যে, স্বাধীনতার পরে কখনও দেশে জাতগণনা হয়নি। ফলে সরকারের কোনও পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই। সে দিক থেকে প্রক্রিয়ায় ‘ত্রুটি’ থাকার অবকাশ রয়েছে। বাংলায় বর্তমান রাজনীতির যে বিন্যাস, তাতে বিজেপি এবং তৃণমূল জাতগণনাকে দু’ভাবে ‘হাতিয়ার’ করতে পারে।
‘পিছিয়ে-পড়া শ্রেণিকে এগিয়ে আনার পদক্ষেপ’
বাংলায় ওবিসি গোষ্ঠীর প্রভাব ক্রমবর্ধমান। মাহিষ্য, তিলি, তামুল ও সাহা জাতিগুলিকে ওবিসি তালিকাভুক্ত করার প্রতিশ্রুতি আগেই দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও সেই উদ্যোগ বাস্তবায়নের পথে আইনি বাধা তৈরি করেছে হাই কোর্টের সাম্প্রতিক রায়, যেখানে প্রায় ১২ লক্ষ ওবিসি শংসাপত্র বাতিল হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে রাজ্য সরকার। এরই মধ্যে কেন্দ্রের জাতগণনার ঘোষণা কার্যত রাজ্যের উপর চাপ সৃষ্টি করল বলে মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের। তৃণমূল কংগ্রেস এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘ভোটমুখী কৌশল’ বলে দাবি করছে। রাজ্যসভার সাংসদ প্রকাশ চিক বরাইক বলেছেন, “বিজেপি ভোটের বৈতরণি পার হওয়ার জন্যই এই জাতগণনার মতো ঘোষণা করছে।” পাল্টা বিজেপি সাংসদ মনোজ টিগ্গা বলেন, “এটি পিছিয়ে-পড়া শ্রেণিকে এগিয়ে আনার পদক্ষেপ।”