ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ‘পেশাদার সশস্ত্র বাহিনী কোনও ক্ষতির দ্বারা প্রভাবিত হয় না।’ অপারেশ সিঁদুর নিয়ে ফের মন্তব্য করছেন চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল অনিল চৌহান(CDS)। সম্প্রতি সিঙ্গাপুরে একটি সমাবেশে যোগ দিতে গিয়ে বিদেশি সংবাদমাধ্যমের কাছে জেনারেল চৌহান প্রথমবার মেনে নিয়েছিলেন যে, ‘অপারেশন সিঁদুর’-এ ভারতেরও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আর এরপরেই দেশে বিরোধীদের সমালোচনার মুখে পড়েছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। এই আবহে চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ জানানলেন, অভিযানে ক্ষয়ক্ষতির থেকে পরিণামই জরুরি।
ভারতীয় রণকৌশল (CDS)
মঙ্গলবার পুণে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভারতীয় রণকৌশলই বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেন জেনারেল অনিল চৌহান(CDS)। তিনি বলেন, ‘যখন আমাকে বাহিনীর ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, আমি বলেছিলাম যে এগুলি গুরুত্বপূর্ণ নয়। পরিণাম গুরুত্বপূর্ণ। ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে কথা বলা খুব একটা সঠিক হবে না।’ তিনি বলেন,অপারেশন সিঁদুরের লক্ষ্য ছিল পাকিস্তানের পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত সন্ত্রাসবাদ বন্ধ করা। তাঁর কথা, ‘পাকিস্তানের পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত সন্ত্রাসবাদ বন্ধ করতে হবে। ভারত সন্ত্রাসবাদ এবং পারমাণবিক ব্ল্যাকমেলের ছায়ায় বাস করবে না।সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আমরা সামরিক অভিযানে একটি নতুন লাইন তৈরি করেছি। আমরা সন্ত্রাসবাদকে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদের সঙ্গে যুক্ত করেছি- যেমন জল এবং দেখিয়েছি যে ভারতকে হাজারবার রক্তাক্ত করা পাকিস্তানের কৌশল আর উত্তরহীন হয়ে থাকবে না।’

পেশাদার সশস্ত্র বাহিনী (CDS)
চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ জানান, ‘আমরা জানতাম মোকাবিলা করার জন্য আমাদের হাতে ড্রোন প্রতিরোধ করার জন্য অনেক ভাল ব্যবস্থা রয়েছে(CDS)। ঝুঁকি কতটা ছিল, সেটা বোঝাও গুরুত্বপূর্ণ ছিল। পেশাদার সশস্ত্র বাহিনী হিসাবে আমরা ক্ষতি বা বাধা দ্বারা খুব বেশি প্রভাবিত হই না। নিজেদের ভুল আমাদের বুঝতেই হবে এবং শোধরাতে হবে। বিপত্তির কারণে বসে থাকলে তো চলবে না।’ পাকিস্তানকে নিশানা করে তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাসবাদ কি যুক্তিসঙ্গত যুদ্ধ? আমার মনে হয় না। এর কারণ সন্ত্রাসবাদের কোনও সুনির্দিষ্ট যুক্তি নেই। আমাদের প্রতিপক্ষের কথা বলতে গেলে, তারা ভারতকে বহুবার রক্তাক্ত করেছে। ১৯৬৫ সালে, জুলফিকার আলী ভুট্টো রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ভাষণ দেওয়ার সময় ভারতের বিরুদ্ধে হাজার বছরের যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন।’
আরও পড়ুন- PM Modi: ভারতে ফিরলেই সংসদীয় দলগুলির সঙ্গে বৈঠক প্রধানমন্ত্রীর
অপারেশন সিঁদুরে ভারতেরও ক্ষয়ক্ষতি (CDS)
সিঙ্গাপুরে ‘সাংগ্রি-লা’ সম্মেলনের ফাঁকে সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ভারতীয় সেনা সর্বাধিনায়ক প্রথম বার মেনে নিয়েছিলেন যে, অপারেশন সিঁদুর অভিযানে ভারতেরও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে(CDS)। তার আগে অপারেশন সিঁদুর অভিযান নিয়ে দেশে যখন নিয়মিত সাংবাদিক বৈঠক হয়েছিল, তখন এই ক্ষয়ক্ষতির প্রসঙ্গ উঠলে তা এক প্রকার এড়িয়ে গিয়েছিলেন ভারতীয় সেনা আধিকারিকরা। তারপরে বিদেশি সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নে পাক সেনাবাহিনীর হাতে ভারতীয় বিমান ধ্বংসের বিষয়টি যখন মেনে নেন জেনারেল অনিল চৌহান, তখন শুরু হয় বিতর্ক।

আরও পড়ুন- Kanimozhi: ভারতের রাষ্ট্রভাষা কী? স্পেনে কানিমোঝির বুদ্ধিদীপ্ত উত্তরের প্রশংসা
কৌশলগত ভুল সংশোধন (CDS)
তবে পাক বাহিনীর হাতে ক’টি ভারতীয় বিমান ধ্বংস হয়েছিল, তা জেনারেল অনিল চৌহান সিঙ্গাপুরে স্পষ্ট করেননি(CDS)। ভারতের রণকৌশল ব্যাখ্যার উপরেই জোর দিয়েছিলেন তিনি। সেই সঙ্গে তিনি এও জানিয়েছিলেন যে, বাহিনী সঙ্গে সঙ্গে নিজের ভুল বুঝতে পেরেছিল। তারপরে আবার হানা দিয়েছিল। তিনি বলেন, ‘ইতিবাচক দিক হল, আমরা আমাদের কৌশলগত ভুলটা তখনই বুঝতে পেরেছি এবং তা শুধরে দু’দিন পর আবার সেই কৌশল প্রয়োগ করেছি। সব যুদ্ধবিমান আবার আমরা উড়িয়েছি এবং দূরের লক্ষ্যবস্তুকে নিশানা করেছি।’
