ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ভিডিয়োকন ঋণকাণ্ডে আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের প্রাক্তন এমডি এবং সিইও চন্দা কোচরকে দোষী সাব্যস্ত করেছে আপিল ট্রাইব্যুনাল(Chanda Kochhar Found Guilty)। এমনটাই দাবি করা হয়েছে টাইমস অফ ইন্ডিয়ার এক রিপোর্টে। একই সঙ্গে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের সম্পত্তি বাজেয়াপ্তির সিদ্ধান্তকে বৈধ বলে ঘোষণা করেছে। এই রায়ের ফলে ইডি এখন চন্দা কোচরের একাধিক মূল্যবান সম্পত্তি আইনি ভাবে বাজেয়াপ্ত করতে পারবে।
ঋণের বিনিময়ে অবৈধ লেনদেন (Chanda Kochhar Found Guilty)
ট্রাইব্যুনালের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, ৩০০ কোটি টাকার একটি ঋণের বিনিময়ে ৬৪ কোটি টাকার অবৈধ লেনদেন ঘটেছে, যা অপরাধলব্ধ আয় হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে(Chanda Kochhar Found Guilty)। এই সিদ্ধান্ত পূর্বের একটি আদেশকে উল্টে দিয়েছে যা চন্দার পক্ষে গিয়েছিল।চন্দা কোচরকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে নিজের স্বামী দীপক কোচরের কোম্পানিকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার জন্য। অভিযোগ, তিনি আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের এমডি ও সিইও থাকাকালীন সময়কালে নিজে নেতৃত্ব দিয়ে ভিডিয়োকন গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত সংস্থাগুলিকে একাধিক ঋণ মঞ্জুর করেছিলেন।

দীপক কোচরের সংস্থায় বিনিয়োগ (Chanda Kochhar Found Guilty)
২০০৯ সালে, কোচর নেতৃত্বাধীন একটি কমিটি ভিডিয়োকন ইন্টারন্যাশনাল ইলেকট্রনিক্স লিমিটেডকে ৩০০ কোটি টাকার টার্ম লোন অনুমোদন করে(Chanda Kochhar Found Guilty)। এরপর ওই অর্থ একাধিক ভিডিয়োকন গ্রুপ কোম্পানির মাধ্যমে ঘুরিয়ে দীপক কোচরের সংস্থা ‘নুপাওয়ার রিনিউয়েবল লিমিটেড’-এ বিনিয়োগ করা হয়।এই মামলায় আরও উল্লেখযোগ্য তথ্য সামনে এসেছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে-ভিডিয়োকনের সঙ্গে যুক্ত সংস্থাগুলির মাধ্যমে মুম্বইয়ের অন্যতম অভিজাত এলাকা চার্চগেটে অবস্থিত একটি ফ্ল্যাট কোচরের ফ্যামিলি ট্রাস্টে স্থানান্তরিত করা হয় মাত্র ১১ লাখ টাকায়, যা সম্পূর্ণভাবে বাজারমূল্যের তুলনায় অনেক কম। ট্রাইব্যুনাল এই লেনদেনকে অসাধু উদ্দেশ্যপ্রসূত এবং অস্বচ্ছ বলে চিহ্নিত করেছে।
আরও পড়ুন-F 35B fighter jet: জল্পনা অব্যাহত রেখেই একমাস পর ফিরে গেল ভারতের ‘অতিথি’
একাধিক সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত (Chanda Kochhar Found Guilty)
ইডি এই মামলায় চন্দার একাধিক সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে(Chanda Kochhar Found Guilty)। এরমধ্যে রয়েছে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, ইনভেস্টমেন্ট, এবং মূল্যবান স্থাবর সম্পত্তি। শুধুমাত্র ১০.৫ লাখ টাকা নগদ ফেরত দেওয়া হয়েছে চন্দাকে, কারণ তিনি সেই অর্থের উৎস যথাযথভাবে প্রমাণ করতে পেরেছেন।সিবিআই এই মামলায় ২০১৯ সালে একটি এফআইআর দায়ের করে। তদন্তের পর সংস্থাটি ১১,০০০ পাতার এক বিশাল চার্জশিট দাখিল করে, যেখানে চন্দা কোচর, তাঁর স্বামী দীপক কোচর এবং ভিডিয়োকন গ্রুপের প্রোমোটার ভি এন ধূতের নাম রয়েছে।সিবিআই অভিযোগ করেছে যে, কোচর ও অন্যরা ষড়যন্ত্র করে ভিডিয়োকন সংস্থাকে ঋণ মঞ্জুর করেছেন এবং এর বিনিময়ে ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হয়েছেন।

জাতীয় আর্থিক খাতে নৈতিকতার সংকট (Chanda Kochhar Found Guilty)
এই ঘটনা শুধুমাত্র একটি ব্যক্তির দুর্নীতি নয়-এটি ভারতের আর্থিক ব্যবস্থার উপর সাধারণ মানুষের বিশ্বাসে বড় ধাক্কা(Chanda Kochhar Found Guilty)। একজন ব্যাঙ্কের সিইও যিনি সাধারণ আমজনতার টাকার দায়িত্বে ছিলেন, তিনিই যদি স্বজনপোষণ করে ব্যক্তিগত স্বার্থে ব্যাঙ্কের পুঁজি ব্যবহার করেন, তবে তা গোটা ব্যবস্থার উপর প্রশ্ন তোলে।ট্রাইব্যুনালের এই রায় কেবলমাত্র চন্দাকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করায়নি, বরং ভবিষ্যতের জন্যও একটি বার্তা দিয়েছে-যে কোনও সংস্থার উচ্চপদে থেকে নিজের কর্তৃত্বের অপব্যবহার করলে এবং সেই ক্ষমতা ব্যবহার করে দুর্নীতি করলে, আইনের হাত থেকে কেউই রেহাই পাবে না।
