Last Updated on [modified_date_only] by Aditi Singha
ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: বাবা-মায়ের আচরণ, কথা বলার ধরণ (Child-Health), দৈনন্দিন রুটিন সবকিছুই শিশুদের উপর গভীর প্রভাব ফেলে। ছোটরা অনেক সময় বুঝেই না বুঝে বড়দের অভ্যাসকে নিজেদের জীবনে ঢুকিয়ে নেয়। তাই বাবা-মায়ের কিছু ভুল অভ্যাস পরবর্তী প্রজন্মের জীবনযাত্রাকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করতে পারে।

পুরস্কার হিসেবে ব্যবহার করা (Child-Health)
অনেক অভিভাবক সন্তানকে কোনও নির্দেশ মেনে চললে বা কোনও কাজ করলে পুরস্কার হিসেবে খাবার দিন, যেমন চকোলেট, কেক বা প্রিয় স্ন্যাক্স। প্রথমে বিষয়টি আনন্দদায়ক মনে হলেও দীর্ঘমেয়াদে এর প্রভাব ক্ষতিকর হতে পারে।
- শিশুরা খাবারকে মানসিক সন্তুষ্টি বা পুরস্কারের প্রতীক হিসেবে দেখতে শুরু করে।
- ফলে অস্বাস্থ্যকর খাবারের প্রতি তাদের ঝোঁক বাড়ে।
- অতিরিক্ত মিষ্টি বা তেল-ঝাল জাতীয় খাবার খাওয়ার কারণে স্থূলতা, হজমের সমস্যা এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যঝুঁকি দেখা দিতে পারে।
বরং বাবা-মা সন্তানকে প্রশংসা, আলিঙ্গন বা একসঙ্গে সময় কাটিয়ে পুরস্কৃত করতে পারেন।
ব্যস্ত রুটিন চাপিয়ে দেওয়া (Child-Health)
শিশুদেরও যেন প্রাপ্তবয়স্কদের মতো ব্যস্ত জীবনযাত্রা তৈরি হয়েছে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পড়াশোনা, টিউশন, খেলাধুলো, সঙ্গীত বা নাচের ক্লাস— একটার পর একটা চাপ লেগেই আছে।
- এতে শিশুর নিজস্ব সময় থাকে না, যার ফলে মানসিক চাপ বাড়ে।
- সৃজনশীল চিন্তা এবং অবসর যাপন থেকে তারা বঞ্চিত হয়।
- দীর্ঘমেয়াদে তারা ক্লান্তি, অবসাদ এবং আত্মবিশ্বাসহীনতায় ভুগতে পারে।
অভিভাবকদের উচিত সন্তানকে প্রয়োজনীয় পড়াশোনা ও প্রশিক্ষণের পাশাপাশি অবসর সময় দেওয়া, যাতে তারা নিজের মতো করে খেলতে, কল্পনা করতে বা বিশ্রাম নিতে পারে।
আবেগ দমন করানো (Child-Health)
এখনো অনেক পরিবারে বিশ্বাস করা হয় যে, ছেলেরা কাঁদবে না বা মেয়েদের অবশ্যই ঘরের কাজ শিখতে হবে। এর ফলে শিশুর আবেগ প্রকাশের স্বাধীনতা সীমিত হয়ে যায়।
- আবেগ দমন করলে শিশুর মানসিক বিকাশ ব্যাহত হয়।
- তারা নিজেদের অনুভূতি প্রকাশ করতে না পেরে হতাশা ও মানসিক চাপের শিকার হয়।
- ভবিষ্যতে সম্পর্ক গড়ার ক্ষেত্রেও সমস্যায় পড়ে।
তাই ছেলে-মেয়ে নির্বিশেষে সন্তানের আবেগকে সম্মান দেওয়া এবং তাকে নিজের অনুভূতি সঠিকভাবে প্রকাশ করতে শেখানো জরুরি।
তুলনা করার অভ্যাস (Child-Health)
তুলনামূলক কথা শিশুর সামনে কিংবা শিশুকে নিয়ে না বলাই ভালো। এ ধরনের কথা শিশুদের মনের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে।
- বারবার তুলনা করলে শিশুর আত্মবিশ্বাস ভেঙে যায়।
- তারা মনে করে, যতই চেষ্টা করুক, কখনোই বাবা-মায়ের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবে না।
- ফলে হীনমন্যতা তৈরি হয় এবং মানসিক চাপ বাড়ে।
তুলনার বদলে অভিভাবকদের উচিত সন্তানের প্রতিটি ছোটো উন্নতিকে উৎসাহ দেওয়া এবং তার সক্ষমতাকে মূল্য দেওয়া।
আরও পড়ুন: Sweets Craving: শেষ পাতে মনটা মিষ্টি মিষ্টি করে? মুক্তির কী উপায়?
প্রযুক্তি থেকে দূরে রাখা (Child-Health)
আজকের যুগে ‘স্ক্রিন টাইম’ নিয়ে বিতর্ক অনেক। অতিরিক্ত মোবাইল, ট্যাব বা কম্পিউটার ব্যবহারে চোখের সমস্যা, ঘুমের ব্যাঘাত এবং মনোযোগের ঘাটতি হয় এ সত্য। কিন্তু অন্যদিকে, প্রযুক্তি থেকে পুরোপুরি দূরে রাখলেও সমস্যা তৈরি হয়।
- ডিজিটাল দক্ষতা শেখা বর্তমান পৃথিবীতে টিকে থাকার জন্য অপরিহার্য।
- প্রযুক্তি ব্যবহার না জানলে পড়াশোনা ও ভবিষ্যতের কর্মক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়তে হয়।
তাই অভিভাবকদের উচিত সন্তানকে সীমিত সময়ের জন্য প্রযুক্তি ব্যবহার করতে দেওয়া, তবে তার ব্যবহার যেন শিক্ষামূলক, সৃজনশীল এবং বয়স উপযোগী হয়।