ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের মধ্যে ঐতিহাসিক চুক্তি হল বিষ ট্যাবলেট।’ শুল্ক যুদ্ধের আবহে এমনই বিস্ফোরক মন্তব্য করেছে চিন (China)। গত সপ্তাহেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেন, ব্রিটেনের সঙ্গে বাণিজ্য বোঝাপড়া চূড়ান্ত করেছেন তাঁরা। যার জেরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গাড়ি, ইস্পাত, অ্যালুমিনিয়াম-সহ বেশ কিছু পণ্যের রফতানিতে সুবিধা পাবে ব্রিটেন। ট্রাম্পেরও দাবি, রফতানির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র লাভবান হবে। আর দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বেজিং।
চিনের বিদেশ মন্ত্রকের প্রতিক্রিয়া (China)
চিনের (China) বিদেশমন্ত্রক জানিয়েছে, ‘দেশগুলির মধ্যে সহযোগিতায় তৃতীয় পক্ষের স্বার্থের বিরুদ্ধে বা ক্ষতিকরভাবে পরিচালিত হওয়া উচিত নয়।’ এই অবস্থানের মূলে রয়েছে, যে আন্তর্জাতিক চুক্তিগুলি তৃতীয় দেশগুলিকে লক্ষ্যবস্তু করা উচিত নয়, এই নীতিকে বেজিং মৌলিক বলে মনে করে। অন্যদিকে, চায়না একাডেমি অফ ম্যাক্রোইকোনমিক রিসার্চের গবেষক ঝাং ইয়ানশেং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনেই মধ্যে চুক্তিকে ‘বিষের ট্যাবলেট’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন যা শুল্কের চেয়েও খারাপ। তিনি বলেন, ব্রিটেনের একি পদক্ষেপ চিনের প্রতি ন্যায্য নয়।
সুইজারল্যান্ডের বৈঠক (China)
এদিকে, সুইজারল্যান্ডের জেনিভায় শুল্ক বিরতিতে সম্মত হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চিন (China)। আপাতত ৯০ দিন এই বিরতি চলবে বলে ঠিক হয়েছে। এই ৯০ দিন চিনা পণ্যের উপর ৩০ শতাংশ শুল্ক আদায় করবে যুক্তরাষ্ট্র। অন্যদিকে, মার্কিন পণ্যের উপর ১০ শতাংশ শুল্ক চালু রাখবে চিন। বিশ্ব অর্থনীতিকে সচল রাখতে এবং আন্তর্জাতিক স্তরে সরবরাহ অব্যাহত রাখতেই তারা একমত হয়েছে বলে জানিয়েছে ওয়াশিংটন এবং বেজিং।
আরও পড়ুন: Several Dies in Gaza Strip : পর পর বোমার্বষণ দক্ষিণ গাজ়ায়! রাতভর হামলায় মৃত অন্তত ৫৪
চিন্তিত চিন
তারমধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ব্রিটেনের বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে চিন্তিত চিন। সূত্রের খবর, চিনের সঙ্গে শুল্কযুদ্ধ নিয়ে দেশের অন্দরেই বিরোধিতার মুখে পড়ছিলেন ট্রাম্প। চিনা পণ্যের উপর চড়া শুল্ক বসানোয়, সেই সব পণ্য কিনতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছিল দেশের নাগরিকদের। উৎপাদনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের তাবড় সংস্থা চিনের উপর নির্ভরশীল। শুল্ক নিয়ে টানাপোড়েনের জেরে বিপুল ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছিল তাদের। আবার চিনে মার্কিন তাবড় সংস্থার কারখানা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হচ্ছিল। ফলে বেকারত্ব বৃদ্ধির আশঙ্কা করছিলেন সকলে। এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট চিনের সঙ্গে সমঝোতার প্রক্রিয়া শুরু করে।
আরও পড়ুন: Donald Trump : ইরানকে কিছুূতেই পরমাণু শক্তিধর না হতে দেওয়ার কথা জানালেন ট্রাম্প!
শুক্ল অব্যাহতি (China)
গত বৃহস্পতিবার এই চুক্তির ফলে ব্রিটেনের স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামে ট্রাম্পের সর্বশেষ আরোপ করা ২৫ শতাংশ শুল্ক উঠে গেছে।পাশাপাশি চুক্তি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ব্রিটেনের তৈরি গাড়ি রফতানিতে শুল্ক ২৭.৫ শতাংশ থেকে কমে ১০ শতাংশ হয়েছে।ব্রিটিশ কোম্পানিগুলি এখন থেকে বিমানের যন্ত্রাংশ শুল্ক ছাড়াই যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করতে পারবে। বিনিময়ে ব্রিটিশ এয়ারলাইনগুলি ১০ বিলিয়ন ডলারের বোয়িং বিমান কিনবে।মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তির পরেই ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার ঐতিহাসিক দিন আখ্যা দিয়েছেন।