ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: তিব্বত এবং দলাই লামার উত্তরাধিকার নির্বাচন নিয়ে ফের ভারতকে চাপে রাখার কৌশল নিল চিন(China’s Strategy)। নয়া দিল্লির চিনা দূতাবাসের তরফে বলা হয়েছে, ভারত-চিন সম্পর্কে ‘কাঁটা’ তিব্বত এবং দলাই লামার উত্তরাধিকার সংক্রান্ত বিষয়। ২০১৯ সালের পর, সম্প্রতি এই প্রথম, ধর্মশালায় একটি ধর্মসম্মেলন হল। সেখানে বৌদ্ধ ধর্মগুরু ঘোষণা করেন, তাঁর প্রতিষ্ঠান, অর্থাৎ একমাত্র তিনিই তাঁর উত্তরসূরি নির্ধারণ করার অধিকারপ্রাপ্ত। এবং এই প্রক্রিয়ায় চিনের কোনও হস্তক্ষেপ বরদাস্ত করা হবে না।
ভারতকে চাপে রাখার কৌশল চিনের (China’s Strategy)
রবিবার নয়া দিল্লির চিনা দূতাবাসের তরফে একটি বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, ভারত-চিন সম্পর্কে ‘কাঁটা’ তিব্বত এবং দলাই লামার উত্তরাধিকার সংক্রান্ত বিষয়(China’s Strategy)। দু’টি বিষয়কেই ‘অভ্যন্তরীণ’ বলে দাবি করে চিনা দূতাবাসের দাবি, এগুলির সংবেদনশীলতার বিষয়ে বিদেশ দফতরের আধিকারিকদের অবহিত থাকা উচিত। বিদেশ দফতরের আধিকারিক বলতে আসলে ভারতের দিকেই চিন ইঙ্গিত করেছে বলে মনে করা হচ্ছে।ভারতের চিনা দূতাবাসের মুখপাত্র ইউ জিং সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন, ‘শি-ঝ্যাং (চিনের দেওয়া তিব্বতের নাম) সংক্রান্ত বিষয় চিন-ভারতে সম্পর্কের একটা কাঁটা। দলাই লামার উত্তরাধিকার নির্বাচন চিনের অভ্যন্তরীণ বিষয়।’

পঞ্চদশ দলাই লামা নির্বাচন (China’s Strategy)
পঞ্চদশ দলাই লামা মনোনয়ন নিয়ে চিন এবং চতুর্দশ দলাই লামার মধ্যে চাপানউতোর চলছে(China’s Strategy)। সম্প্রতি নিজের ৯০তম জন্মদিনের আগে দলাই লামা তাঁর উত্তরসূরি মনোনয়নের বার্তা দিয়েছেন। ভারতে স্বেচ্ছানির্বাসিত সর্বোচ্চ বৌদ্ধ ধর্মগুরু বলেন, ‘পরবর্তী দলাই লামার মনোনয়নের দায়িত্ব গাহদেন ফোড্রাং ট্রাস্টের। এই প্রক্রিয়ায় বাইরের কাউকেই হস্তক্ষেপ করতে দেওয়া হবে না।’ যদিও চুপ থাকেনি চিনও। এই ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে চিনের বিদেশমন্ত্রক জানিয়ে দেয়, চিনের সম্মতি নিয়েই পরবর্তী দলাই লামা বাছতে হবে। চিনের মত, দলাই লামা বিচ্ছিন্নতাবাদী–নিজের মতে পরবর্তী ধর্মগুরু নির্ণয় করার চেষ্টা সেই মানসিকতারই প্রতিফলন। চিন, বলা বাহুল্য, এহেন খামখেয়াল মানতে নারাজ। চিনের আইনকানুন, ধর্মাচারণ, ঐতিহাসিক প্রথা মেনেই উত্তরাধিকারী বেছে নিতে হবে।
আরও পড়ুন-Iranian President: ইরানের প্রেসিডেন্টকে হত্যার ষড়যন্ত্র ইজরায়েলের! প্রকাশ্যে বিস্ফোরক রিপোর্ট
ভারতের অবস্থান (China’s Strategy)
এই চাপানউতরের মধ্যেই সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজু বলেন, ‘উত্তরসূরি নির্বাচনের প্রক্রিয়া প্রচলিত নিয়ম মেনে এবং বর্তমান দলাই লামার ইচ্ছানুসারেই হবে(China’s Strategy)। পরবর্তী দলাই লামা কে হবেন, সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার অন্য কারও নেই।’ তারই জবাব দিয়েছে চিনও। শুক্রবার রিজিজুর মন্তব্যের বিষয়ে চিনের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র মাও নিং জানান, ভারতের উচিত চতুর্দশ দলাই লামার চিন-বিরোধী বিচ্ছিন্নতাবাদী স্বভাব সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকা। তিব্বত সম্পর্কিত চিনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করাই ভাল বলে ভারতকে সতর্ক করে চিন।

আরও পড়ুন-Tripura Girl Found: যমুনাতে ভাসছে দেহ! ৬ দিন পর দিল্লিতে হদিশ মিলল ত্রিপুরার তরুণীর
নয়া দিল্লির পাল্টা জবাব (China’s Strategy)
চিনের ওই বিবৃতির পরেই ভারতের বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছিল, কারও ধর্মীয় বিশ্বাস বা আচরণের বিষয়ে কথা বলে না ভারত(China’s Strategy)। তবে এত কিছুর মধ্যেও গত ৬ জুলাই হিমাচল প্রদেশের ধর্মশালায় দলাই লামার জন্ম দিবসের অনুষ্ঠানে উপস্থিত দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রিজিজু এবং রাজীবরঞ্জন সিং। তিব্বতি বৌদ্ধধর্মের সর্বোচ্চ ধর্মগুরু দলাই লামাকে শুভেচ্ছা জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। তবে দলাই লামাকে নিয়ে ভারতের এই সক্রিয়তা যে তারা ভাল ভাবে নিচ্ছে না, তা আগেও ঠারেঠোরে বুঝিয়ে দিয়েছে বেজিং। এবার এই বিষয়ে ভারতের উপর আরও চাপ বৃদ্ধির কৌশল নিল চিন।
দলাই লামা (China’s Strategy)
বিশ্বে প্রায় ৫০ কোটি, এবং শুধু ভারতেই প্রায় ১ কোটি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীর কাছে দলাই লামা সাক্ষাৎ ভগবান(China’s Strategy)। মার্টিন লুথার কিং বা গান্ধীজির মতো এক স্বপ্নদর্শী, শান্তির দূত। ৬ জুলাই, ৯০ বছরে পা দিলেন তিনি। আর তারপরই শুরু হল তাঁর উত্তরাধিকারী নয়া অবতার, অর্থাৎ পঞ্চদশতম ধর্মগুরু খুঁজে নেওয়ার পালা। এবং সমস্যা সেই নিয়ে। যে সমস্যা ছায়া ফেলছে চিন ও ভারত, পৃথিবীর দুই শক্তিধর রাষ্ট্রের কূটনৈতিক সম্পর্কের উপর, যাদের মধ্যে ইতিমধ্যেই তেমন বনিবনার সুনাম নেই।
