ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ইরানের তিন পরমাণুকেন্দ্রে নিখুঁত হামলা চালিয়ে ফের বিশ্বমঞ্চে নজর কাড়ল আমেরিকার গর্ব ‘বি-২ স্পিরিট’(Chinese Espionage In US)। কিন্তু এই সময়েই নতুন করে মাথাচাড়া দিচ্ছে এক পুরনো আতঙ্ক—চিন কি এবার সত্যিই এই ‘স্টেল্থ’ বোমারু বিমানকে নকল করে ফেলল? পেন্টাগনের সন্দেহ, উত্তর ইতিবাচক। আর সেই প্রযুক্তি পাচারের পেছনে জড়িয়ে এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রাক্তন মার্কিন ইঞ্জিনিয়ার—নোশির গোদারিয়া। যাঁর হাত ধরেই নাকি বেজিঙের হাতে পৌঁছে গিয়েছিল মার্কিন ‘শিকারি ইগল’-এর নকশা।
২০০৫ সালে যাঁকে গ্রেফতার করে এফবিআই। ২০১১-তে ৩২ বছরের কারাদণ্ড হয় তাঁর। কিন্তু এখন প্রশ্ন উঠছে—তাঁর সরবরাহ করা তথ্যের ভিত্তিতে কি বেজিঙ প্রস্তুত করেছে ‘বি-২ স্পিরিট’-এর মতো স্টেল্থ বোমারু বিমান?
গুপ্তচরবৃত্তির ছায়া (Chinese Espionage In US)
‘দ্য ওয়ার জোন’-এর দাবি, চলতি বছরের ১৪ মে চিনের জিনজিয়াং প্রদেশের মালানে একটি গুপ্তঘাঁটিতে মার্কিন কৃত্রিম উপগ্রহ এক স্টেল্থ বোমারু বিমানের ছবি তোলে (Chinese Espionage In US)। পেন্টাগনের বিশেষজ্ঞদের দাবি, এটি বি-২ স্পিরিট-এর প্রায় হুবহু নকল। মার্কিন গোয়েন্দারা (CIA) আরও উদ্বিগ্ন, কারণ ঠিক সেই বিমানের পাশে দেখা গিয়েছে চিনের বহু প্রচারিত ‘এইচ-২০’ বোমারু বিমানের প্রোটোটাইপও। অর্থাৎ, ড্রাগন সরকার দুটি পথেই সমান্তরাল কাজ চালাচ্ছে।
নোশির গোদারিয়ার ভূমিকা (Chinese Espionage In US)
মুম্বইয়ে জন্ম, পরবর্তীতে মার্কিন নাগরিকত্ব(Chinese Espionage In US)। নোশির কাজ করতেন ‘নর্থ্রপ গ্রুম্যান’-এ, যাঁরা তৈরি করেন ‘বি-২ স্পিরিট’। এই বিমানের ‘স্টেল্থ প্রপালশন সিস্টেম’-এর অন্যতম রূপকার ছিলেন তিনিই। কিন্তু এরপর গোপনে চিনের সঙ্গে যোগাযোগ তৈরি করেন। ২০০৩-০৪ সালে একাধিক বার চিন সফর করেন। তখনই এক লক্ষ ডলারের বিনিময়ে নকশা ও তথ্য পাচার করেন বলে দাবি এফবিআই-এর। তদন্তে তাঁর বিলাসবহুল বাংলো থেকে মিলেছিল স্পর্শকাতর নথিপত্র ও ই-মেল।

প্রযুক্তি চুরি ও চিনের ‘স্বপ্ন’ (Chinese Espionage In US)
বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি, চিনের ‘এইচ-২০’ এবং নতুন বোমারু প্রকল্পে নোশিরের পাচার করা তথ্যই ‘মূল পাথেয়’। প্রায় ১৭০ ফুট ডানার বিস্তার, দীর্ঘক্ষণ আকাশে ভেসে থাকার ক্ষমতা, রাডারে ধরা না পড়ার ক্ষমতা—সব কিছুতেই মার্কিন বিমানের ছায়া দেখা যাচ্ছে। কিন্তু একই সঙ্গে প্রশ্নও থাকছে—প্রযুক্তি পাওয়া মানেই কি সমান কার্যকারিতা?
মার্কিন ‘শিকারি ইগল’-এর শ্রেষ্ঠত্ব (Chinese Espionage In US)
‘বি-২ স্পিরিট’ ৩০ হাজার পাউন্ড বোমা বহনে সক্ষম। ৩৬ ঘণ্টা টানা উড়তে পারে(Chinese Espionage In US)। মাঝ আকাশে জ্বালানি ভরার সুবিধা রয়েছে। অত্যন্ত নিখুঁত নিশানায় বাঙ্কার বাস্টার বোমা ফেলতে পারা এই বিমান এখন পর্যন্ত ব্যবহার হয়েছে ইরান, ইয়েমেন-সহ বহু অপারেশনে। মাত্র ২১টি নির্মিত হলেও, এগুলি শুধুমাত্র আমেরিকার (Donald J. Trump) কাছেই রয়েছে। কোনও মিত্র দেশকেও দেওয়া হয়নি।

চিনের প্রযুক্তি চুরির অভিযোগ নতুন নয়। ‘এফ-৩৫’-এর ছায়া মেনে তৈরি হয়েছে তাদের ‘জে-৩৫’(Chinese Espionage In US)। কিন্তু বাস্তব ময়দানে পরীক্ষিত নয়। আর তাই প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকদের একাংশের মত, প্রযুক্তি নকল করা আর তার পূর্ণ সদ্ব্যবহার করা—দুটি ভিন্ন বিষয়। তাই যত দিন না বেজিঙের বিমান যুদ্ধে নেমে কার্যকারিতা প্রমাণ করে, তত দিন পর্যন্ত ‘বি-২ স্পিরিট’-এর আকাশে একচ্ছত্র আধিপত্য অটুট থাকবে। আর সেই সাফল্যের পেছনে লেগে থাকবে এক ভারতীয় প্রতিভার আলো—যদিও তার শেষটা ঘটেছে অন্ধকার কারাগারে(Chinese Espionage In US)।