ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: মেঘ ভাঙা বৃষ্টির ফলে আকস্মিক বন্যায় বিপর্যস্ত হিমাচল প্রদেশ(Himachal Pradesh)। হিমাচলের বেশ কিছু অংশে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে কমপক্ষে পাঁচজন প্রাণ হারিয়েছেন। কাংড়া জেলায় আরও তিনজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ইন্দিরা প্রিয়দর্শিনী জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে নিয়োজিত কমপক্ষে ১০ জন শ্রমিক মানুনি খাদে তীব্র স্রোতে ভেসে গিয়েছেন বলে জানিয়েছে আইএএনএস।
দুই জেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি (Himachal Pradesh)
কাংড়া ছাড়াও কুল্লু জেলা হল হিমাচলের এই মুহূর্তে সর্বাপেক্ষা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত জেলা(Himachal Pradesh)। রিপোর্ট অনুসারে, আকস্মিক বন্যায় পাঁচজন নিখোঁজ রয়েছেন। ধর্মশালার কিছু অংশে আকস্মিক বন্যার পর রাজ্য ও কেন্দ্রীয় দলগুলির একটি বড় অভিযানে ২৫০ জনেরও বেশি লোককে উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের সামনে কথা বলতে গিয়ে কাংড়ার পুলিশ সুপারিনটেনডেন্ট শালিনী অগ্নিহোত্রী বলেছেন, ‘আকস্মিক বন্যায় বেশ কয়েকজন ব্যক্তি ভেসে গিয়েছেন। যার ফলে রাজ্য দুর্যোগ প্রতিক্রিয়া বাহিনী এবং স্থানীয় পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান শুরু করেছে।’তিনি জানিয়েছেন, ২৫০ জনকে সফলভাবে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। সেই সঙ্গে উদ্ধার হয়েছে দুটি মৃতদেহ।

মুখ্যমন্ত্রীর সতর্কতা জেলা প্রশাসনকে (Himachal Pradesh)
হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সুখু রাজ্যের সমস্ত জেলা প্রশাসকদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন(Himachal Pradesh)। বাতিল হয়েছে সমস্ত ছুটি। ২৪ ঘণ্টা উপস্থিত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন কর্মকর্তাদের।মুখ্যমন্ত্রী সুখু বলেন, ‘এখন পর্যন্ত, বৃষ্টিপাত এবং আকস্মিক বন্যার কারণে পাঁচজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। কুলু জেলায় তিনজন নিখোঁজ রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। উদ্ধার অভিযান চলছে।’ তিনি আরও বলেন, কাংড়ার ধর্মশালা এলাকা এবং হিমালয় অঞ্চলের কিছু অংশ মেঘ ভাঙনের ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।মুখ্যমন্ত্রী বলেন,’আমাদের হিমালয় পর্বতমালা যেখানে উঁচুতে উঠে গিয়েছে সেখানেই ক্ষতি হয়েছে। মেঘ ভাঙা বৃষ্টির ফরে পর তিনজনের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে এবং পাঁচজন নিখোঁজ রয়েছেন। আগে একজন নিখোঁজ বলে ধারণা করা হয়েছিল কিন্তু পরে তাঁকে নিরাপদে পাওয়া গিয়েছে। তিনি রাস্তার ধারের কাছে জঙ্গলে চলে গিয়েছিলেন।’
আরও পড়ুন-Air India: ফের খবরে এয়ার ইন্ডিয়া! ব্যাঙ্ককগামী বিমানের ডানায় খড়; আটকে রইল ৫ ঘন্টা
বিপাকে পর্যটকরা (Himachal Pradesh)
হিমাচলের কুলু জেলায় হড়পা বানের জেরে বন্ধ হয়ে গিয়েছে সৈঞ্জ উপত্যকার সংযোগকারী রাস্তা(Himachal Pradesh)। ভেসে গিয়েছে বেশ কয়েকটি ছোট সেতুও। আটকে পড়েছেন প্রচুর পর্যটক। প্রশাসনের তরফে তাদের যথাযথ সাহায্যের চেষ্টা করা হচ্ছে।এদিকে, জাতীয় দুর্যোগ প্রতিক্রিয়া বাহিনী (এনডিআরএফ) উদ্ধারকারীদের তল্লাশি অভিযান জোরদার করেছে। নিখোঁজ ব্যক্তিদের যে কোনও মূল্যে খুঁজে বের করতে তারা বদ্ধপরিকর। মানুনি খাদে তীব্র স্রোতে ইন্দিরা প্রিয়দর্শিনী জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে কর্মরত কমপক্ষে ১০ জন কর্মী ভেসে গিয়েছেন।বৃষ্টির জন্য কাজ বন্ধ ছিল, শ্রমিকরা পাশেই একটি অস্থায়ী ছাউনিতে বসে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। আচমকাই খানিয়ারা মানুনি খাদের জলস্তর বেড়ে যায়। জলের তোড়ে নিমেষে ভেসে যান শ্রমিকরা।

আরও পড়ুন-Decomposed Body: মীরাটকাণ্ডের ছায়া লুধিয়ানায়! নীল ড্রামে উদ্ধার যুবকের পচাগলা দেহ, বাড়ছে রহস্য
আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস (Himachal Pradesh)
মৌসম ভবন ২৫ জুন থেকে ১ জুলাইয়ের মধ্যে হিমাচল প্রদেশ ও পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলিতে বিচ্ছিন্নভাবে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে(Himachal Pradesh)। ২৯ জুন রাজ্যে কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। উনা, বিলাসপুর, সোলাং, সিমলা, সিরমৌর, কাংড়া, চাম্বা, কুল্লু এবং মান্ডি-সহ জেলাগুলিতে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া সম্ভাব্য আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসের সতর্কতা জারি করা হয়েছে।মৌসম ভবন আরও জানিয়েছে যে ২৬ এবং ২৭ জুন হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে, ২৮ জুন কিছুটা উন্নতি হবে। তারপর ২৯ এবং ৩০ জুন তীব্র বৃষ্টিপাত হবে। স্থানীয় এবং পর্যটকদের এই সময়ের মধ্যে নদীর তীরবর্তী অঞ্চল এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
