ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: তার পূর্বসূরী এবং বিজেডি নেতা নবীন পট্টনায়েক রাজ্য সরকারের উপর আক্রমণ করার কিছুক্ষণ পরেই মুখ্যমন্ত্রী মাঝির পোস্টটি X-এ এসেছিল (CM ask for forgiveness)। তিনি বলেছিলেন যে প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন যে উত্তেজিত জনতাকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কোনও সরকারি ব্যবস্থা ছিল না।
মুখ্যমন্ত্রীর দুঃখপ্রকাশ ও তদন্তের নির্দেশ (CM ask for forgiveness)
ওডিশার মুখ্যমন্ত্রী মোহন চরণ মাঝি পুরীর রথযাত্রায় পদদলনের ঘটনায় দায় স্বীকার করেছেন (CM ask for forgiveness)। এই ঘটনায় তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী ভক্তদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। তিনি এই ঘটনাকে “অমার্জনীয় গাফিলতি” বলে অভিহিত করেছেন এবং ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি যাঁরা দায়ী, তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন।
ঘটনার সময় কী ঘটেছিল (CM ask for forgiveness)
রথযাত্রার সময় ভোর ৪টা ৩০ মিনিটে শ্রীগুন্ডিচা মন্দিরের সামনে তিনটি রথ উপস্থিত ছিল (CM ask for forgiveness)। প্রচুর ভক্ত সেখানে ভিড় জমিয়েছিলেন মহাপ্রভুর দর্শনের জন্য। হঠাৎ করে ভিড় বেড়ে যাওয়ায় কিছু মানুষ পড়ে যান এবং পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা ঘটে। তিন জন ঘটনাস্থলেই মারা যান। মৃতদের মধ্যে দুই জন মহিলা, প্রভাতী দাস ও বসন্তী সাহু, এবং ৭০ বছরের প্রেমকান্ত মহান্তি রয়েছেন। জানা গিয়েছে, তিন জনই খুর্দা জেলা থেকে রথযাত্রা উপলক্ষে পুরীতে এসেছিলেন।
আরও পড়ুন: Ahmedabad Plane Crash: আহমেদাবাদ বিমান দুর্ঘটনায় নাশকতার আশঙ্কা! কী বললেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী?
মুখ্যমন্ত্রীর এক্স পোস্ট (CM ask for forgiveness)
এক্স-এ দেওয়া পোস্টে মুখ্যমন্ত্রী বলেন (CM ask for forgiveness), “শ্রদ্ধাবলি-তে মহাপ্রভুর দর্শনের জন্য ভক্তদের প্রচণ্ড আগ্রহ ছিল। সেই কারণেই ঠেলাঠেলি ও বিশৃঙ্খলার মধ্যে একটি দুঃখজনক ঘটনা ঘটে। আমি ও আমার সরকার ব্যক্তিগতভাবে সকল জগন্নাথ ভক্তদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। যাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন, তাঁদের পরিবারকে আমরা সমবেদনা জানাই এবং মহাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা করি, তিনি যেন শোক সইবার শক্তি দেন।”
তিনি আরও বলেন, “এই গাফিলতি ক্ষমার অযোগ্য। নিরাপত্তা ব্যবস্থায় যে ত্রুটি ছিল, তার অবিলম্বে তদন্ত হবে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর কটাক্ষ
ঘটনার পরই মুখ্যমন্ত্রী মোহন মাঝির পূর্বসূরি ও বিজেডি নেতা নবীন পট্টনায়েক রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, “চোখের সামনে এই পদপিষ্টের ঘটনা রাজ্য সরকারের ব্যর্থতা ও অদক্ষতাকে স্পষ্ট করে তুলেছে।” নবীন বলেন, “প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ঘটনার সময় কোনও সরকারি মেশিনারি ছিল না ভিড় সামলাতে। আত্মীয়স্বজনেরাই আহতদের সাহায্যে এগিয়ে আসে। এটা পরিষ্কার করে দেয় প্রশাসনের চূড়ান্ত ব্যর্থতা।”
আরও পড়ুন: Rajasthan: মাটির নিচে ইতিহাস! রাজস্থানে ৪,৫০০ বছরের প্রাচীন সভ্যতার সন্ধান
তিনি আরও বলেন, “যাত্রা দেরিতে শুরু হওয়ার জন্য সরকার ‘মহাপ্রভুর ইচ্ছা’কে দায়ী করেছে, যা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। এটা আসলে প্রশাসনের দায়িত্ব এড়ানোর একটা অজুহাত।” বিজেডি প্রধান বলেন, “আমি সরকারের বিরুদ্ধে ফৌজদারি গাফিলতির অভিযোগ আনছি না, কিন্তু তাঁদের নিষ্ক্রিয়তা এই বিপর্যয়ের মূল কারণ। আমি সরকারকে অনুরোধ করছি, তারা যেন অবিলম্বে যথাযথ পদক্ষেপ নেয় যাতে ‘আডাপা বিজে’, ‘বাহুদা’, ‘সোনা বেশ’ ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ রথযাত্রার আচারগুলি নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয়।”
প্রশাসনের দাবি ও পদক্ষেপ
পুরী জেলা শাসক সিদ্ধার্থ শঙ্কর সাঁই বলেন, মৃতদেহগুলি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে এবং মৃত্যুর প্রকৃত কারণ পরীক্ষার পর জানা যাবে। তিনি দাবি করেন, পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল, কিন্তু হঠাৎ করেই ভিড় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।
রথযাত্রা উৎসব ও ভক্তসমাগম
পুরীর রথযাত্রা হল বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব। এই সময় ভগবান জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার তিনটি বিশাল রথ পুরী শহরের প্রধান রাস্তা ধরে গড়িয়ে চলে। লক্ষ লক্ষ ভক্ত এই রথ টানেন। তিন দেবতা গুডিচা মন্দিরে গিয়ে এক সপ্তাহ অবস্থান করেন। তারপর তাঁরা আবার জগন্নাথ মন্দিরে ফিরে আসেন। এই ধর্মীয় উৎসবে সুষ্ঠু ও নিরাপদ ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এবারের মর্মান্তিক ঘটনা সেই প্রশ্নকেই ফের সামনে তুলে ধরল।