ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: মধ্যপ্রদেশের বিজেপি মন্ত্রী বিজয় শাহের (Dr. Vijay Shah) বিতর্কিত মন্তব্য ঘিরে দেশজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র প্রতিক্রিয়া (Colonel Sofiya Qureshi Controversy)। ভারতীয় সেনার শীর্ষ আধিকারিক কর্নেল সোফিয়া কুরেশিকে “সন্ত্রাসবাদীদের বোন” বলে আখ্যা দেওয়ায় নিন্দার ঝড় উঠেছে রাজনীতি থেকে সেনা মহল পর্যন্ত। এই মন্তব্যের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ এবং মন্ত্রিত্ব থেকে অপসারণের দাবি তুলেছে সোফিয়ার পরিবার।
সোফিয়ার ভাই কী বললেন? (Colonel Sofiya Qureshi Controversy)
সোফিয়ার ভাই বান্টি সুলেমন সংবাদমাধ্যমে বলেন, “সোফিয়া শুধু আমাদের কন্যা নয়, তিনি দেশের কন্যা। তাঁর কাজের মাধ্যমে তিনি ভারতীয় সেনার গৌরব বাড়িয়েছেন (Colonel Sofiya Qureshi Controversy)। একজন দায়িত্বশীল মন্ত্রীর এমন কুৎসিত মন্তব্য একেবারেই ক্ষমাযোগ্য নয়।” সুলেমন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের হস্তক্ষেপ চেয়ে জানান, “আমরা চাই, দেশের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব এই বিষয়ে সরাসরি পদক্ষেপ নিক।”
রাজনীতি উত্তপ্ত, বিজেপি অস্বস্তিতে (Colonel Sofiya Qureshi Controversy)
বিজেপি নেতৃত্ব বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে ইতিমধ্যেই সোফিয়ার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে (Colonel Sofiya Qureshi Controversy)। স্থানীয় বিজেপি নেতারা ছতরপুরে সোফিয়ার বাড়িতে গিয়ে তাঁদের সমবেদনা জানান এবং আশ্বাস দেন, এই মন্তব্যের জন্য দায়ী ব্যক্তির বিরুদ্ধে যথোপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে। তবে রাজনৈতিক স্তরে বিষয়টি ঘিরে তৈরি হয়েছে ব্যাপক চাপ। বিরোধী দলগুলি এই মন্তব্যকে “দেশদ্রোহিতা ও সেনার অপমান” বলে অভিহিত করেছে।

আদালতের ধমক ও আইনগত পদক্ষেপ (Colonel Sofiya Qureshi Controversy)
মধ্যপ্রদেশ হাই কোর্ট ইতিমধ্যেই মন্ত্রী বিজয় শাহের বিরুদ্ধে FIR দায়েরের নির্দেশ দিয়েছে। বিষয়টি পৌঁছেছে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত, যেখানে প্রধান বিচারপতি বিআর গবই বিজয়ের মন্তব্যকে “অসংবেদনশীল ও নিন্দনীয়” বলে অভিহিত করেছেন। বিচারপতি বলেন, “আপনি একজন মন্ত্রী হয়ে কীভাবে এমন কথা বলেন? অন্তত সামান্য সংবেদনশীলতাও কি নেই?” আদালতের নির্দেশ—বিজয় শাহকে হাই কোর্টে গিয়ে ক্ষমা চাইতে হবে।

আরও পড়ুন: S Jaishankar : পহেলগাঁও কান্ডের নিন্দা করায় কাবুলকে ধন্যবাদ জানালেন জয়শঙ্কর !
সেনার প্রতিনিধি হিসাবে সোফিয়ার ভুমিকা (Colonel Sofiya Qureshi Controversy)
কর্নেল সোফিয়া কুরেশি, ভারতীয় সেনার সিগন্যাল কর্পসের ৩৫ বছর বয়সী আধিকারিক, সম্প্রতি ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের সময় প্রতিদিনের সাংবাদিক বৈঠকে সেনার প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত থাকতেন (Colonel Sofiya Qureshi Controversy)। বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রীর পাশে থেকে সীমান্তে প্রতিক্রিয়া এবং অভিযান সম্পর্কে দেশবাসীকে অবহিত করতেন তিনি ও উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিংহ। এই যুগ্ম ব্রিফিং দেশজুড়ে প্রশংসিত হয়, এবং সোফিয়ার পেশাদারিত্ব বহু মানুষের অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে ওঠে।
একজন মহিলা সেনা অফিসার, যিনি দেশের সীমান্ত রক্ষায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন, তাঁকে উদ্দেশ্য করে এই ধরনের অপমানজনক মন্তব্য শুধু রাজনৈতিক শিষ্টাচার নয়, জাতীয় নিরাপত্তা ও সেনাবাহিনীর প্রতি শ্রদ্ধার প্রশ্নও তুলছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সোফিয়ার পাশে দাঁড়িয়ে সাধারণ মানুষ ও বিশিষ্টজনেরা আওয়াজ তুলছেন। এখন দেখার, বিজেপি এবং কেন্দ্রীয় সরকার কী পদক্ষেপ নেয় বিজয় শাহের বিরুদ্ধে।