ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ২০২০ থেকে ২০২২ সালের ভয়াবহ (Covid 19) করোনাকালের স্মৃতি আজও ঝাপসা হয়নি মানুষের মনে। এই তিন বছরে দেশজুড়ে প্রাণহানি, পেশার ক্ষতি এবং অর্থনীতির মারাত্মক পতনের পাশাপাশি জীবনযাত্রার স্বাভাবিকতা প্রায় স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। বিশেষ করে লকডাউনের কঠোর সময়গুলো এখনও অনেকের কাছে জীবনের এক অবিস্মরণীয় ও কষ্টদায়ক অধ্যায় হিসেবে থেকে গেছে। তবে করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির ফলে এখন আবারও দেশে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে, যা নতুন করে জনজীবনে আতঙ্ক তৈরি করছে।
মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা (Covid 19)
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশের (Covid 19) মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৪ হাজার ২৬ জন ছাড়িয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে ৫ জনের মৃত্যু ঘটেছে, যার ফলে করোনায় মৃতের মোট সংখ্যা বেড়ে ৩৭ জনে পৌঁছেছে। সোমবার পর্যন্ত কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩,৯৬১ জন, যা মাত্র কয়েকদিনের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। বিশেষভাবে উদ্বেগজনক বিষয় হল, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্তের দিক থেকে দিল্লির পরেই রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের নাম।
পরিস্থিতি ক্রমেই সংকটময় আকার ধারণ করছে (Covid 19)
পশ্চিমবঙ্গে করোনার পরিস্থিতি ক্রমেই সংকটময় আকার ধারণ (Covid 19) করছে। গতকাল রাজ্যে প্রথম করোনা সংক্রমণে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। আলিপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন ৪৩ বছর বয়সী এক মহিলা। তিনি প্রায় এক সপ্তাহ ধরে চিকিৎসাধীন ছিলেন এবং শেষ পাঁচ দিন ভেন্টিলেশনে ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর সময়ের ডেথ সার্টিফিকেটে করোনা সংক্রমণের পাশাপাশি হৃদযন্ত্র ও কিডনির সমস্যার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ডেথ সার্টিফিকেটে সেপটিক শকেই মৃত্যুর কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে।
মৃতের সংখ্যা বাড়ছে
একদিকে রাজ্যে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি, ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৪১ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গে। বর্তমানে রাজ্যে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৭২ জন। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, দেশের মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এখন ৪,০২৬ জন।
তীব্র উদ্বেগ সৃষ্টি
এই পরিস্থিতি স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মধ্যে তীব্র উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, করোনা সংক্রমণ ফের দ্রুত বাড়ছে এবং সময় মতো কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। তারা সাধারণ মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানাচ্ছেন এবং প্রয়োজনে দ্রুত টিকাদান কার্যক্রম শুরু করার ওপর গুরুত্বারোপ করছেন।
তৃতীয় ঢেউ এখনও শেষ হয়নি
বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতে এবং বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে করোনার এই তৃতীয় ঢেউ এখনও শেষ হয়নি। তাই সবাইকে সচেতন থেকে মাস্ক ব্যবহার, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং হাত ধোয়ার মতো সতর্কতামূলক ব্যবস্থা অবলম্বন করতে হবে। পাশাপাশি, কোভিড আক্রান্তদের দ্রুত শনাক্ত ও চিকিৎসার জন্য স্বাস্থ্য পরিকাঠামো আরও শক্তিশালী করতে হবে।
আরও পড়ুন: WB Dengue Situation: কলকাতায় করোনার পাশাপাশি বাড়ছে ডেঙ্গি–ম্যালেরিয়া, বাড়ছে উদ্বেগ!
গত তিন বছরের করোনা যুদ্ধ আমাদের অনেক শিক্ষা দিয়েছে। এখন সেই শিক্ষা কাজে লাগিয়ে নতুন করে সংক্রমণ ঠেকানো এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থা প্রস্তুত রাখা একান্ত জরুরি। জনসাধারণের সজাগতা ও সরকারের কার্যকর পরিকল্পনা মিলিয়ে করেই করোনার এই নতুন দংশন থেকে উত্তরণের পথ খুঁজে বের করতে হবে।