ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: আগামী ৬ জুলাই নব্বই বছর পূর্ণ করবেন তিব্বতের বৌদ্ধ ধর্মগুরু দলাই লামা(Dalai Lama)। তাঁর জন্মদিনের ঠিক আগে, হিমাচল প্রদেশের ধর্মশালায় তিন দিনব্যাপী প্রকাশ্য বক্তৃতার আয়োজন করা হয়েছে, যেখানে দলাই লামা তাঁর উত্তরসূরি সংক্রান্ত ইঙ্গিত দিতে পারেন বলেই মনে করছেন তাঁর অনুগামীরা। আর সেই কারণেই গোটা ঘটনাপ্রবাহের উপরে সজাগ দৃষ্টি রাখছে চিন, যাদের সঙ্গে এই ধর্মগুরুর সম্পর্ক চিরকালই শীতল।
চিনের শঙ্কা, তিব্বতের নিয়ন্ত্রণ হারানোর ভয় (Dalai Lama)
চিন দীর্ঘদিন ধরেই দলাই লামাকে “বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা” হিসেবে বিবেচনা করে(Dalai Lama)। ১৯৫৯ সালে তিব্বতের তরুণ ধর্মগুরু দলাই লামা চিনের সেনা অভিযানের পর ভারতে আশ্রয় নেন, এবং এরপর থেকেই তিনি ধর্মশালাকে কেন্দ্র করে নির্বাসিত তিব্বত সরকারের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। বেজিং বরাবরই চায়, তাঁর উত্তরসূরি নির্বাচন ও নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা তাদের হাতে থাকুক।
উত্তরসূরি নিয়ে দলের বার্তা—‘চিনের বাইরে’ (Dalai Lama)
এর আগেও দলাই লামা একাধিকবার জানিয়েছেন, তাঁর উত্তরসূরি চিনের বাইরের কেউ হবেন, যা চিনের সরকারি অবস্থানের বিরুদ্ধে স্পষ্ট বার্তা(Dalai Lama)। তবে কে হবেন সেই উত্তরসূরি, সে বিষয়ে কখনও নির্দিষ্টভাবে কোনও নাম উল্লেখ করেননি তিনি। তিব্বতি বৌদ্ধদের বিশ্বাস অনুযায়ী, বিশেষ জ্ঞানের অধিকারী সন্ন্যাসীরা মৃত্যুর পর পুনর্জন্ম নেন এবং সেইভাবেই ‘দলাই লামা’ উপাধি উত্তরসূরিকে প্রদান করা হয়। বর্তমানে ১৪তম দলাই লামা দায়িত্বে রয়েছেন, যিনি বয়সে ৯০ ছুঁই ছুঁই। ধর্মশালার এক ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, এই সপ্তাহের বক্তৃতার ফাঁকে তিনি অন্য ধর্মগুরু ও শিষ্যদের সঙ্গে উত্তরসূরি নির্বাচন নিয়ে পরামর্শ করতে পারেন। ফলে এই মুহূর্তে ধর্মশালার দিকে নজর সারা বিশ্বের বৌদ্ধ সমাজের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক কূটনীতিকদেরও।

আরও পড়ুন: Russia Ukraine War : ইউক্রেনের উপর গ্রীষ্মকালীন হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে রাশিয়া! কিভের চলছে জল্পনা
চিনের অস্বস্তি ও ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্য’ (Dalai Lama)
তিব্বতের নির্বাসিত সংসদের ডেপুটি স্পিকার ডোলমা শেরিং তেখাং সম্প্রতি এক বিবৃতিতে বলেন,“চিন আমাদের ধর্মীয় ও রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানকে কব্জা করতে চাইছে(Dalai Lama)। এর পেছনে রয়েছে সুস্পষ্ট রাজনৈতিক উদ্দেশ্য।” চিন ইতিমধ্যেই ১১তম পঞ্চেন লামা–র (আরও এক গুরুত্বপূর্ণ তিব্বতি ধর্মগুরু) নির্বাচন নিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছে। বহু বিশ্লেষকের মতে, দলাই লামার উত্তরসূরি নির্বাচন ঘিরেও চিন একতরফা সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিতে চাইবে।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও ভবিষ্যতের দিকনির্দেশ (Dalai Lama)
চিনের নজরদারির পাশাপাশি আমেরিকা, ইউরোপ ও ভারত সহ বেশ কিছু দেশ আগেই ঘোষণা করেছে—তারা দলাই লামার বেছে দেওয়া উত্তরসূরিকেই স্বীকৃতি দেবে, চিনের মনোনীত কাউকে নয়(Dalai Lama)। এই প্রেক্ষাপটে, ১৪তম দলাই লামার আসন্ন জন্মদিন কেবলমাত্র একটি ধর্মীয় উদ্যাপন নয়, বরং একটি ভবিষ্যতের রাজনৈতিক ও আধ্যাত্মিক দিকনির্দেশনার মুহূর্ত হয়ে দাঁড়াতে চলেছে। তাঁর অনুগামীরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন—এই তিন দিনের বক্তৃতায় তিনি ঠিক কতটা স্পষ্ট করবেন তাঁর উত্তরসূরি বিষয়ে তাঁর অভিমত। আর ঠিক সেই কারণেই, দলাই লামার প্রতিটি বাক্য এখন আন্তর্জাতিক পরিসরে কূটনৈতিক গুরুত্ব বহন করছে।