ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: যে বয়সে মেয়ের পাত্র নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তা উঁকি মারে, সে বয়সে নিজেই বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন মা। স্বামী কন্যা ঘর-সংসার ফেলে শুরু করেছেন অন্যত্র সংসার। মায়ের অভাব ও সমাজের কুৎসিত কটাক্ষের মুখে পড়ে অবশেষে আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন একমাত্র কন্যা (Daughter commits suicide)। মায়ের কার্যকলাপে লজ্জিত মেয়ে। সমাজে কিভাবে মুখ দেখাবে এই হীনমন্যতায় আত্মহত্যা করল নদীয়ার শান্তিপুরের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী অর্পিতা মজুমদার।
বিয়ের পর প্রায় ১৯ বছর সংসার করার পর স্ত্রীর স্বাবলম্বী হওয়ার ইচ্ছাকে মান্যতা দেয় তার স্বামী। কিন্তু কাজ করার মাত্র দু’মাসের মধ্যেই উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁতে এক ব্যক্তির সঙ্গে আলাপ হয় এবং বিবাহ বহির্ভূত প্রণয়ঘঠিত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে স্ত্রী। এরপর তার স্ত্রী রুপা মজুমদার ওই ব্যক্তির সঙ্গে গত এপ্রিল মাসে অন্যত্র সংসার করতে চলে যান। একাধিকবার স্ত্রীকে নিয়ে আসার চেষ্টা করলেও, ব্যর্থ হয়েছেন স্বামী। দু-একদিন থাকার পরেও পুনরায় ওই ব্যক্তির কাছে ফিরে যান তার স্ত্রী। বিপুল বাবু দাবি করেন, ‘এই ঘটনাই মেনে নিতে পারেনি তার মেয়ে। মায়ের চলে যাওয়াতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন তার মেয়েও। মেয়েকে একাধিকবার বোঝানোর চেষ্টা করলেও শেষমেষ শেষ রক্ষা হলো না (Daughter commits suicide)।’
আরও পড়ুন: Awas Yojana: পাঁচ বছরেই পেল্লাই বাড়ি, আবাসে নাম কাটিয়েও বিতর্কে TMC নেতা
বিপুল বাবু জানান, “আমি শক্তিনগর হসপিটাল এ কাজ করি, ডিউটিতে ছিলাম আমি। আনুমানিক বিকেল চারটের সময় মেয়ের সঙ্গে ফোনে কথা হয়। দীর্ঘদিন ধরে এ বিষয়ে মনমরা থাকলেও আজ ফোনে কথা বলার সময় ওকে অনেক বেশি মর্মাহত মনে হচ্ছিল তাই তুলনামূলকভাবে একটু তাড়াতাড়ি, নটা নাগাদ বাড়িতে আসি ও দরজা বন্ধ করে পড়াশোনা করে কিন্তু আজ সারা শব্দ না দেওয়াই শেষমেষ দরজা ভেঙে দেখি মেয়ে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলে রয়েছে (Daughter commits suicide)। ওর মা চলে যাওয়ার পর থেকে নতুন করে বিবাহ করব না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। মেয়েকে নিয়েই বাঁচবো, এরকমই চিন্তা ভাবনা ছিল আমার। কিন্তু সব শেষ হয়ে গেল”
গর্ভধারিনী মা বর্তমানে তার মেয়ের এই পরিণতির কথা আদতেও জানে কিনা তাও জানা নেই বিপুল বাবুর। তিনি বলেন, “আমার এক ভাইরা ভাইয়ের মাধ্যমে খবর দিয়েছি। আদতেও তারা খবর দিয়েছে কিনা ওর মাকে, এমনকি বর্তমানে ওর মা কোথায় রয়েছে তা কিছুই জানিনা”। তবে নাবালিকা মেয়ের অধিকার নিয়ে যদি আইনগত ভাবে ফাঁসানোর চেষ্টা করে, তাই গোটা ঘটনা জানিয়ে জেনারেল ডাইরি করে রাখার কথা জানান মেয়ের পিতা।
আইনে মায়ের শাস্তি হবে কিনা জানিনা, তবে গর্ভধারিণী হয়ে শুধুমাত্র শারীরিক লোভ-লালসার জন্য মেয়েকে এভাবে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়ার শাস্তি ঈশ্বর নিশ্চই বিচার করবেন। স্বাভাবিকভাবেই মাত্র একাদশ শ্রেণির পাঠরতা মেয়ের এমন মর্মান্তিক পরিণতিতে ভেঙে পড়ে তার বাবা সহ পরিবারের বাকি সদস্যরাও। সমগ্র এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।