ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: কাশ্মীর উপত্যকাকে অশান্ত করে তুলতে পাকিস্তান (Pakistan After Pahalgam Attack) মদত দেয় জঙ্গিদের। এক সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় সেই অভিযোগ স্বীকার করে নিলেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাওয়াজা আসিফ। তবে এই ‘নোংরা কাজের’ দায় আমেরিকা এবং পশ্চিমি বিশ্বের উপর চাপিয়েছেন তিনি। দায় সম্পূর্ণভাবে স্বীকার না করলেও একটা সময় পর্যন্ত যে পাকিস্তান দেশের অন্দরে ‘জঙ্গি চাষ’ করেছে বলেই মেনে নেন তিনি। যখন লস্কর-ই-তৈবার শাখা সংগঠন গোটা হামলায় নিজেদের দায় স্বীকার করে, সেই আবহে পাক-প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দাবি, ‘বর্তমানে দেশের অন্দরে লস্কর-ই-তৈবা বলে কিছু নেই। ওরা অতীত।’
‘গত তিন দশক ধরে নোংরা কাজটা করে চলেছি’ (Pakistan After Pahalgam Attack)
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘স্কাই নিউজ়’কে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে পাক (Pakistan After Pahalgam Attack) প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাওয়াজা বলেন, ‘গত তিন দশক ধরে আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন-সহ গোটা পশ্চিমের দেশগুলির জন্য এই নোংরা কাজটা করে চলেছি।’ এরপরেই তাদের এই কাজকে ‘ভুল’ বলে আখ্যান দিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘গোটা বিশ্বের প্রতিটি দেশের মধ্যে পাকিস্তান এমন একটি রাষ্ট্র যারা সন্ত্রাস হামলায় সব থেকে বেশি ভুগেছে। আমরা যদি সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে যোগ না দিতাম, তাহলে আজ পাকিস্তান অন্য উচ্চতায় থাকত।’
নির্দোষ প্রমাণে মরিয়া চেষ্টা (Pakistan After Pahalgam Attack)
কাশ্মীরের পলেহগামে জঙ্গিদের গুলিতে ঝাঁঝরা হয়েছেন নিরীহ পর্যটকরা (Pakistan After Pahalgam Attack)। এর পর থেকেই পাকিস্তানের উপর কূটনৈতিক চাপ বাড়িয়েছে ভারত। এই হামলার পিছনে পাকিস্তানকে দায়ী করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে পাকিস্তান। এই পরিস্থিতিতেই এল পাকমন্ত্রীর স্বীকারোক্তি। ওই সাক্ষাৎকারে জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈবার ব্যাপারে অদ্ভূত দাবি করেছেন পাক মন্ত্রী।
ফল দুই দেশের জন্যই ভয়াবহ
তাঁর দাবি, লক্সর-ই-তৈবার আর কোনও অস্বস্তিই নেই। এ ব্যাপারে তিনি বলেছেন, ‘লস্কর-ই-তৈবা পুরোনো নাম। এর কোনও অস্বস্তি নেই।’ লস্করের ছায়া সংগঠন, যারা পহেলগাম হামলার দায় ভায় নিয়েছে সেই দ্য রেজিস্ট্যান্ট ফোর্স (টিআরএফ)-এর নামও কোনও দিন শোনেননি বলে দাবি করেছেন। এর পাশাপাশি ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য তাঁর দেশ প্রস্তুত বলেও দাবি করেছেন পাকিস্তানের বর্তমান সরকারের ওই মন্ত্রী। ভারত ‘সামরিক প্রত্যাঘাত’ করলে তার ফল দুই দেশের জন্যই ভয়াবহ হবে বলে সাবধান করেছেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, “দু’টি পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে সংঘাত বাধলে তা সব সময়েই ভয়ের কারণ।”
আমেরিকার পাশে দাঁড়ায় পাকিস্তান
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর দ্বিমেরুকৃত বিশ্বে আমেরিকা এবং সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে ‘ঠান্ডা যুদ্ধ’ শুরু হয়। মার্কিন অক্ষের সদস্য পাকিস্তান ঠান্ডা যুদ্ধে সোভিয়েতের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। এমনকি ২০০১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে সন্ত্রাসবাদী হামলার পর মার্কিন সেনা যখন আফগানিস্তান কার্যত দখল করে, তখনও আমেরিকার পাশে দাঁড়ায় পাকিস্তান। সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে পাকিস্তানের মন্ত্রী দাবি করেন, আফগানিস্তানে সোভিয়েতের বিরুদ্ধে জঙ্গিদের ঢাল হিসাবে ব্যবহার করেছিল আমেরিকা।