ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: গত ১৫ জানুয়ারি নয়াদিল্লি (Delhi Station Stampede) রেলওয়ে স্টেশনে ঘটে যাওয়া পদপিষ্টের ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ১৮ জনের। এই ঘটনার পর থেকেই প্রশ্ন উঠছে রেল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে। বিশেষ করে, টিকিট বিক্রির ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সীমা অতিক্রম করার পরেও কীভাবে টিকিট বিক্রি চালিয়ে যাওয়া হয়েছিল, তা নিয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দিল্লি হাই কোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টে একাধিক জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছে। আদালতের তরফে রেল কর্তৃপক্ষকে কঠোর প্রশ্নের মুখেও পড়তে হয়েছে।
সর্বোচ্চ সীমা পার, থামেনি টিকিট বিক্রি! (Delhi Station Stampede)
বুধবার দিল্লি হাই কোর্টে বিচারপতি দেবেন্দ্র উপাধ্যায় এবং বিচারপতি তুষার রাও (Delhi Station Stampede) গেদেলার বেঞ্চ এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে একটি জনস্বার্থ মামলার শুনানি করেন। আদালত রেল কর্তৃপক্ষকে জিজ্ঞাসা করে, কেন টিকিট বিক্রির সর্বোচ্চ সীমা অতিক্রম করার পরেও টিকিট বিক্রি করা হয়েছিল? আদালতের মতে, রেল আইনের ৫৭ এবং ১৫৭ ধারা অনুযায়ী, একটি বগিতে কতজন যাত্রী উঠতে পারবেন, তা পূর্বনির্ধারিত। এই নিয়মের কোনো হেরফের করা উচিত নয়।
তদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য (Delhi Station Stampede)
ঘটনার পর রেল মন্ত্রক একটি উচ্চস্তরের তদন্ত (Delhi Station Stampede) কমিটি গঠন করে। এই কমিটিতে উত্তর রেলের বাণিজ্যিক ও নিরাপত্তা বিভাগের কর্তাদের পাশাপাশি আরপিএফ-সহ অন্যান্য বিভাগের প্রতিনিধিদেরও রাখা হয়। তদন্তে উঠে আসে যে, টিকিট বিক্রির সর্বোচ্চ সীমা অতিক্রম করার পরেও টিকিট বিক্রি চালানো হয়েছিল। এই তথ্য প্রকাশিত হওয়ার পরই ঘটনাটি আরও বড়ো বিতর্কের জন্ম দেয়।
আরও পড়ুন: KIIT Incident: ওড়িশার কেআইআইটি ক্যাম্পাসে ফিরতে ভয় পাচ্ছেন নেপালি শিক্ষার্থীরা
দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা!
ভারতীয় রেলের পক্ষ থেকে কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা আদালতকে জানান, এই ঘটনা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। তিনি এও স্বীকার করেন যে, কোনো ধরনের আর্থিক সাহায্য এই ক্ষতি পূরণ করতে পারবে না। তবে তিনি রেলের পক্ষ থেকে কোনো সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা দেননি।
দায়ের একাধিক জনস্বার্থ মামলা
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দিল্লি হাই কোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টে একাধিক জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছে। আইনজীবী আদিত্য ত্রিবেদীর দায়ের করা মামলায় দাবি করা হয়েছে, নয়াদিল্লি স্টেশনের এই ঘটনার জন্য রেল কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনা, চরম অবহেলা এবং প্রশাসনের ব্যর্থতাই দায়ী। অন্যদিকে, সুপ্রিম কোর্টে বিশাল তিওয়ারির দায়ের করা মামলায় ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা এড়াতে গাইডলাইন তৈরি করার জন্য বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনের আবেদন করা হয়েছে।
কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাই মূল কারণ
এর আগেও প্রয়াগরাজের কুম্ভমেলায় মৌনী অমাবস্যার দিনে ভিড়ের চাপে পদপিষ্টের ঘটনা ঘটেছিল। সেবারও প্রায় ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। মামলাকারীরা তাদের আবেদনে উল্লেখ করেছেন, ভিড় নিয়ন্ত্রণে সব ধরনের প্রযুক্তি থাকা সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাই এই ধরনের ঘটনার পিছনে মূল কারণ।
রেল কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতার প্রতিচ্ছবি
দিল্লি স্টেশনের এই ঘটনা শুধু একটি দুর্ঘটনা নয়, এটি রেল কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনাগত ব্যর্থতারই প্রতিচ্ছবি। ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা এড়াতে রেল কর্তৃপক্ষকে আরও দায়িত্বশীল এবং সতর্ক হতে হবে। পাশাপাশি, যাত্রীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কঠোর নীতি এবং গাইডলাইন প্রণয়ন করা জরুরি।