ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ডেনমার্ক, আর্কটিক ও উত্তর আটলান্টিক অঞ্চলে সামরিক উপস্থিতি বাড়ানোর জন্য অতিরিক্ত ১৪.৬ বিলিয়ন ড্যানিশ ক্রোন (প্রায় ২.০৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) বরাদ্দ করেছে (Denmark Boost Security)। এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে এমন এক সময়ে যখন ডেনমার্ক, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গ্রিনল্যান্ডের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার দাবির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলছে।
গ্রিনল্যান্ড কেনার চেষ্টায় ট্রাম্প প্রশাসন (Denmark Boost Security)
গত কয়েক মাস ধরে, গ্রিনল্যান্ড কেনার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনা চলছে। যদিও প্রথমে এটি শুধুমাত্র একটি কৌশলগত ধারণা বলে মনে করা হয়েছিল, তবে সাম্প্রতিক ঘটনাবলী ইঙ্গিত দিচ্ছে যে ট্রাম্প প্রশাসন এই বিষয়ে অনেক বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে (Denmark Boost Security)।
গ্রিনল্যান্ডের প্রতি মার্কিন আগ্রহের মূল কারণ এর কৌশলগত অবস্থান ও মূল্যবান খনিজ সম্পদ (Denmark Boost Security)। দ্বীপটি বিরল খনিজ পদার্থে সমৃদ্ধ, যা প্রযুক্তি ও প্রতিরক্ষা খাতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মোবাইল ফোন, বৈদ্যুতিক যানবাহন ও সামরিক অস্ত্র তৈরির জন্য ব্যবহৃত বিরল খনিজ পদার্থের (Rare Earth Elements) বেশিরভাগই বর্তমানে চীনের নিয়ন্ত্রণে। ফলে, গ্রিনল্যান্ডের খনিজ সম্পদ যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
ডেনমার্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী কী বললেন? (Denmark Boost Security)
ডেনমার্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ট্রোলস লুন্ড পলসেন বলেছেন, “আর্কটিক ও উত্তর আটলান্টিক অঞ্চলে নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে।” তার এই মন্তব্য ডেনমার্কের সামরিক সক্ষমতা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা আরও জোরদার করছে (Denmark Boost Security)।
আরও পড়ুন: US Aid to Pakistan: সাময়িকভাবে বন্ধ মার্কিন সাহায্য! চাপে পাকিস্তান
ডেনমার্কের সরকার, গ্রিনল্যান্ড ও ফারো দ্বীপপুঞ্জের প্রশাসনের সঙ্গে যৌথভাবে তিনটি নতুন আর্কটিক নৌযান, দুটি দূরপাল্লার ড্রোন এবং উপগ্রহ কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর মাধ্যমে ডেনমার্কের সামরিক নজরদারি ও প্রতিরক্ষা শক্তি বৃদ্ধি পাবে।
ডেনমার্কের বর্তমান সামরিক শক্তি
বর্তমানে, ডেনমার্কের সামরিক বাহিনীর কাছে চারটি পুরনো নজরদারি জাহাজ, একটি চ্যালেঞ্জার নজরদারি বিমান এবং ১২টি কুকুর বাহিনী রয়েছে। এই বাহিনীকে ফ্রান্সের চারগুণ বড় একটি এলাকা পাহারা দিতে হয়, যা অত্যন্ত কঠিন কাজ।
ডেনমার্ক গ্রিনল্যান্ডের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষার দায়িত্বে থাকলেও, দ্বীপটিতে যথেষ্ট সামরিক সুবিধা না থাকায় এটি একটি নিরাপত্তা সংক্রান্ত ঝুঁকির জায়গা হয়ে উঠেছে।
গ্রিনল্যান্ডের ভূমিকা ও নতুন সামরিক বিনিয়োগ
গ্রিনল্যান্ডের কৌশলগত অবস্থান ও প্রাকৃতিক সম্পদ অঞ্চলটিকে বিশ্ব রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে। গ্রিনল্যান্ড সরকারের সদস্য ভিভিয়ান মোটজফেল্ড বলেন, “গ্রিনল্যান্ড এখন একটি পরিবর্তনশীল নিরাপত্তা পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছে।”
ডেনমার্কের নতুন সামরিক বিনিয়োগের উদ্দেশ্য এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা এবং অঞ্চলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
ডেনমার্ক সরকার আরও ঘোষণা করেছে যে, গ্রিনল্যান্ডের তরুণদের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চালু করা হবে। এর ফলে তারা জরুরি পরিস্থিতি সামলানোর দক্ষতা অর্জন করতে পারবে।
ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী কী বললেন?
ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডরিকসেন জোর দিয়ে বলেছেন যে, ইউরোপের জন্য ঐক্যবদ্ধ হওয়া এখন আরও গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পড়ুন: Guantanamo Bay: গুয়ান্তানামো বে-তে অভিবাসী আটক কেন্দ্র গড়ার নির্দেশ ট্রাম্পের
তিনি বলেন, “ইউরোপ বর্তমানে একটি গুরুতর পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। মহাদেশে যুদ্ধ চলছে এবং ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতা পরিবর্তিত হচ্ছে। এই ধরনের পরিস্থিতিতে ঐক্য অপরিহার্য।”
ডেনমার্কের সিদ্ধান্তের গুরুত্ব
ডেনমার্কের আর্কটিক ও উত্তর আটলান্টিক অঞ্চলে সামরিক শক্তি বৃদ্ধির এই সিদ্ধান্ত কেবল ট্রাম্পের দাবির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য নয়, বরং ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা হুমকির মোকাবিলা করার জন্যও নেওয়া হয়েছে।
ডেনমার্ক এখন এই অঞ্চলে সামরিক উপস্থিতি জোরদার করে তার ভূ-রাজনৈতিক অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করতে চাইছে।