ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: নতুন পরিচয়ে দীঘা। শুধু পর্যটনকেন্দ্র নয়, এবার ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসেবেও গড়ে উঠছে পশ্চিমবঙ্গের সমুদ্র শহর। অক্ষয় তৃতীয়ার দিন, অর্থাৎ ৩০ এপ্রিল, দীঘায় উদ্বোধন হবে জগন্নাথ মন্দিরের (Digha Jagannath Temple)। বুধবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে একাধিক উচ্চপর্যায়ের প্রস্তুতি ও পরিকল্পনার মধ্য দিয়ে মন্দির উদ্বোধনের আয়োজন এক অনন্য মাত্রা পেয়েছে।
পুরীর আদলে দীঘায় নতুন জগন্নাথ মন্দির (Digha Jagannath Temple)
পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত এই মন্দির তৈরি হয়েছে হিডকো’র তত্ত্বাবধানে। মন্দিরে থাকবে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার জন্য তিনটি পৃথক রথ। তৈরি করা হবে বিশেষ চৈতন্য ফটকও। মুখ্যমন্ত্রী নিজে নজর দিয়েছেন প্রতিটি সূক্ষ্ম পরিকল্পনায়। জনসমাগম সামলানো থেকে শুরু করে নিরাপত্তা, যানবাহনের সুশৃঙ্খল ব্যবস্থাপনা, চিকিৎসা পরিষেবা, পুণ্যার্থীদের থাকার ব্যবস্থা সবকিছুতেই রাখা হয়েছে আধুনিকতার ছাপ। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের বিভিন্ন দফতরের সচিব, পরিবহণ ও পর্যটন বিভাগের কর্তা, রাজ্য পুলিশের শীর্ষ আধিকারিকরা।
২৯ এপ্রিল যজ্ঞ অনুষ্ঠিত হবে, ৩০ এপ্রিল অক্ষয় তৃতীয়ার দিনে দুপুর ৩টা থেকে ৩টা ১০ মিনিটের মধ্যে হবে দ্বারোদঘাটন (Digha Jagannath Temple)। তার আগে হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। মন্দির চত্বরে থাকবে চারটি ক্লক রুম, যাতে ভক্তরা জুতো ও মোবাইল ফোন নিরাপদে জমা রাখতে পারেন। তীর্থযাত্রীদের জন্য ইস্যু করা হবে বিশেষ ‘তীর্থ গ্রিন কার্ড’।

মুখ্যমন্ত্রী নিজে সোনার ঝাড়ুর জন্য অনুদান দিয়েছেন পাঁচ লক্ষ এক টাকা। উদ্বোধনের দিন কোন দফতরের কী দায়িত্ব থাকবে, তাও নির্ধারণ করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী নিজে। এছাড়া হলদিয়া থেকে দীঘা পর্যন্ত রাস্তাকে সিসিটিভি দিয়ে কভার করা হবে। ধ্বজা উত্তোলনের জন্য পুরী থেকে ৩-৪ জনের একটি বিশেষ দল আসবে। ৩টি এয়ার কন্ডিশনড হ্যাঙ্গার থাকবে দর্শনার্থীদের জন্য, শিল্পপতিদের জন্য কনভেনশন সেন্টারে থাকার ব্যবস্থা করা হবে। প্রতিটি ব্লকে থাকবে এলইডি টিভি, যাতে ভক্তরা লাইভ দেখতে পারেন উদ্বোধনের অনুষ্ঠান।
আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: ওয়াকফ ইস্যুতে কেন্দ্রকে আক্রমণ মমতার, নেতাজি ইন্ডোরের বৈঠকে তোপ বিজেপিকে!
উদ্বোধনের পর মন্দিরের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হবে ইসকনের হাতে। দীঘার জগন্নাথ মন্দির (Digha Jagannath Temple) রাজ্যের ধর্মীয় সৌহার্দ্য এবং পর্যটনের এক নতুন অধ্যায় সূচনা করবে। অক্ষয় তৃতীয়ার দিনে রাজ্যবাসীর জন্য এটি এক ঐতিহাসিক উপহার হয়ে উঠবে।
দীঘার জগন্নাথ মন্দির (Digha Jagannath Temple) শুধুমাত্র এক ধর্মীয় আস্থার স্থান নয়, এটি হয়ে উঠবে ধর্মীয় সৌহার্দ্য, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও পর্যটনের এক নতুন মিলনস্থল। রাজ্যের জন্য এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে এক ঐতিহাসিক অধ্যায়ের সূচনা। অক্ষয় তৃতীয়ায় দীঘা লিখে নেবে নিজের নতুন পরিচয়—ভক্তি, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের স্বর্ণাক্ষরে।