ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: বেঙ্গালুরু বিদ্যুৎ সরবরাহ সংস্থার (Digital Arrest) এক কর্মী ‘ডিজিটাল অ্যারেস্টের’ শিকার হয়ে আত্মহত্যা করেছেন। ওই যুবক কর্নাটকের কেলাগেরের বাসিন্দা ছিলেন। বুধবার তাঁর বাড়ির কাছে একটি গাছ থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় তাঁর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। একটি সুইসাইড নোটে তিনি লিখে গিয়েছিলেন, কীভাবে একদল প্রতারক সিবিআই অফিসার সেজে তার সঙ্গে প্রতারণা করেছে ও তার ১১ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
কীভাবে ঘটনাটি ঘটেছে? (Digital Arrest)
সুইসাইড নোট অনুযায়ী, কিছুদিন আগে ‘সিবিআই অফিসার বিক্রম গোস্বামী (Digital Arrest)’ নামের এক ব্যক্তি তাকে ফোন করেন। ওই ব্যক্তি তাকে একটি আর্থিক জালিয়াতির মামলায় জড়িত বলে দাবি করেন এবং বলেন, তার বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য পরোয়ানা জারি হয়েছে। তাঁকে ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’ করা হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়। ভয় পেয়ে তিনি প্রথমে ১.৯৫ লক্ষ টাকা একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠান। কিন্তু প্রতারকরা থামেনি, বরং আরও টাকা দাবি করতে থাকে।
ধাপে ধাপে ১১ লক্ষ হাপিস! (Digital Arrest)
পরের কয়েক সপ্তাহে বিভিন্ন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে মোট ১১ লক্ষ টাকা (Digital Arrest) পাঠানো হয়। তবুও ফোন আসতে থাকে, নতুন নতুন অভিযোগ ও হুমকি দেওয়া হয়। কুমার লিখেছেন, “আমি এই অবিরাম হুমকির জন্য ক্লান্ত। মানসিক ও শারীরিকভাবে ভেঙে পড়েছি। এই নির্যাতন আর সইতে পারছি না।”
‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’ কী?
‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’ হল এক ধরনের সাইবার ক্রাইম, যেখানে প্রতারকরা পুলিশ বা সিবিআই অফিসার সেজে ভিকটিমকে ভয় দেখায়। তারা দাবি করে যে ভিকটিম কোনো মামলায় জড়িত এবং তাকে ‘ভার্চুয়ালি আটক’ করা হয়েছে। এই ফাঁদে পড়ে অনেকেই টাকা দিতে বাধ্য হন বা গোপন তথ্য ফাঁস করে দেন। ভারতে এটিই সম্ভবত প্রথম ঘটনা, যেখানে ডিজিটাল অ্যারেস্টের শিকার হয়ে কেউ আত্মহত্যা করলেন।
আরও পড়ুন: Weather Update: উত্তর-দক্ষিণজুড়ে বৃষ্টি, বেশ কিছু জেলায় জারি হলুদ সতর্কতা!
পুলিশের তদন্ত
কর্ণাটক পুলিশ মৃত ব্যক্তির মোবাইল ফোন জব্দ করেছে এবং সুইসাইড নোটে উল্লিখিত নম্বরগুলি ট্র্যাক করার চেষ্টা করছে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, ফোনগুলি ফেক আইডি থেকে করা হয়েছিল। যে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো হয়েছিল, সেগুলিও তদন্তের আওতায় আনা হয়েছে।
ভারতে সাইবার ক্রাইমের বাড়বাড়ন্ত
এই ঘটনা ভারতে সাইবার ক্রাইমের উদ্বেগজনক বৃদ্ধিকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল। জাতীয় অপরাধ রেকর্ড ব্যুরো (NCRB)-র তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে ৫২,০০০-এর বেশি সাইবার ক্রাইমের ঘটনা রিপোর্ট করা হয়েছে, যার মধ্যে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ছদ্মবেশে প্রতারণা একটি বড় অংশ দখল করে আছে। সিবিআই বারবার সতর্ক করেছে যে অপরিচিত কাউকে ব্যক্তিগত তথ্য বা টাকা দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।