ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ২০০৭ সালের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে জন্মহারের ধারাবাহিক পতন প্রশাসনের জন্য এক গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে (Donald Trump)। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন সমাজজীবনে একাধিক বড় পরিবর্তনের পরিকল্পনা করছে। লক্ষ্য একটাই— নাগরিকদের বিয়ে করতে ও সন্তান জন্ম দিতে উৎসাহিত করা। এই উদ্যোগের পেছনে রয়েছে দেশের দীর্ঘমেয়াদী জনসংখ্যা কাঠামো রক্ষা ও ভবিষ্যতের অর্থনৈতিক স্থিতি নিশ্চিত করার প্রয়াস।
ফুলব্রাইট স্কলারশিপে সংরক্ষণ (Donald Trump)
সম্প্রতি মার্কিন সংবাদপত্র ‘নিউ ইয়র্ক টাইমস’-এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসনের নীতিনির্ধারকরা কয়েকটি প্রস্তাব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা শুরু করেছেন(Donald Trump)। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি পরিকল্পনা হল— ফুলব্রাইট স্কলারশিপে ৩০ শতাংশ আসন সংরক্ষণ, শুধুমাত্র বিবাহিত বা যাঁদের সন্তান রয়েছে, এমন আবেদনকারীদের জন্য। যুক্তরাষ্ট্রে এটিই হবে প্রথম সরকারি স্কলারশিপ যেখানে পারিবারিক অবস্থা বিবেচনায় আসন সংরক্ষণের প্রস্তাব উঠেছে।
সন্তান জন্ম দিলে অর্থসাহায্য (Donald Trump)
এর পাশাপাশি রয়েছে সন্তান জন্মে আর্থিক প্রণোদনা দেওয়ার পরিকল্পনা (Donald Trump)। প্রস্তাব অনুযায়ী, সন্তান জন্ম দেওয়ার পর প্রতিটি মাকে ৫ হাজার ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৪ লক্ষ টাকার বেশি) অর্থসাহায্য দেওয়া হতে পারে। এই অর্থমূলক সহায়তা মূলত সন্তান ধারণের সিদ্ধান্তে উৎসাহ জোগাতেই দেওয়া হবে। অনেক নীতিনির্ধারক মনে করছেন, বর্তমান সময়ের আর্থসামাজিক চাপে পড়ে অনেকেই পরিবার গঠন বা সন্তান নেওয়ার সিদ্ধান্ত পিছিয়ে দিচ্ছেন। সেই বাধা দূর করতেই এই পদক্ষেপ।

আরও পড়ুন: Russia Ukraine War : ‘এ সপ্তাহেই শেষ’ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ? ট্রাম্পের বার্তায় নতুন ইঙ্গিত!
সচেতনতা বৃদ্ধি (Donald Trump)
তৃতীয় একটি প্রস্তাব আরও স্পর্শকাতর— মেয়েদের ঋতুচক্র সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি। এর মাধ্যমে নারীরা সন্তান ধারণের উপযুক্ত সময় সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পাবেন বলে মনে করছে প্রশাসন। যদিও এটি নিয়ে নারীবাদী গোষ্ঠী ও স্বাস্থ্যানবিশেষজ্ঞদের মধ্যে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, এটি ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য ও প্রজনন স্বাধীনতার ওপর অপ্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপ।

আরও পড়ুন: Pralay Missile : “প্রলয়” রপ্তানিতে ভারতের ঐতিহাসিক পদক্ষেপ, প্রথম ক্রেতা হতে চলেছে আর্মেনিয়া!
পারিবারিক মূল্যবোধ (Donald Trump)
এই উদ্যোগগুলির সঙ্গে সঙ্গে হোয়াইট হাউস সূত্রে আরও একটি নির্দেশিকাও সামনে এসেছে(Donald Trump)। প্রশাসনের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের বলা হয়েছে তাঁদের সন্তানদের সঙ্গে সরকারি অনুষ্ঠানে অংশ নিতে, যাতে সমাজে ‘পারিবারিক মূল্যবোধ’ বা ‘ফ্যামিলি ভ্যালু’-র প্রচার হয়। প্রশাসনের ধারণা, সরকারি পর্যায় থেকে এমন বার্তা গেলে নাগরিকদের মধ্যে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।এই ধরনের নীতি প্রণয়নে চিন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়ার মতো দেশে আগেও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জন্মহার বৃদ্ধি করতে নানা আর্থিক ও সামাজিক সুবিধা চালু করেছে তারা। ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপও সেদিকেই ইঙ্গিত করে— যুক্তরাষ্ট্র জন্মহার বৃদ্ধিকে এখন জাতীয় নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক স্থায়িত্বের বিষয় হিসেবেই দেখছে।
জন্মহার বৃদ্ধির প্রয়াস (Donald Trump)
তবে এই সব পরিকল্পনা নিয়ে বিতর্কও কম নয়। অনেকেই বলছেন, এসব উদ্যোগ ব্যক্তি স্বাধীনতা ও সমানাধিকারের পরিপন্থী(Donald Trump)। আবার কেউ কেউ মনে করছেন, এই পরিকল্পনাগুলি শুধুমাত্র উপসর্গ নিরাময়ের চেষ্টা, মূল সমস্যা অর্থাৎ স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও চাকরির জটিলতা রয়ে যাচ্ছে একই জায়গায়। সব মিলিয়ে, ট্রাম্প প্রশাসনের এই পরিকল্পনাগুলি আমেরিকার সামাজিক ও রাজনৈতিক ভবিষ্যতের এক নতুন দিগন্তের সূচনা করতে চলেছে। বাস্তবে কোন প্রস্তাব কার্যকর হবে তা সময়ই বলবে, তবে স্পষ্ট যে— জন্মহার বৃদ্ধির প্রয়াসে এবার বড় মাপের নীতি পরিবর্তনের পথে হাঁটছে যুক্তরাষ্ট্র।