Last Updated on [modified_date_only] by Debu Das
ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: পরমাণু ইস্যুতে ইরানের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চাইলেন প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump)। কাতারের লুসাইল প্রাসাদে আয়োজিত এক নৈশভোজ সভা থেকে দেওয়া তাঁর বক্তব্যে উঠে এল একদিকে কূটনৈতিক সৌজন্য, অন্যদিকে মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনৈতিক সমীকরণে শক্তিশালী বার্তা।
ট্রাম্প কী বলেছেন? (Donald Trump)
ইরান প্রসঙ্গে ট্রাম্প (Donald J. Trump) বলেন, “আমরা ইরানের উন্নতি এবং সাফল্য চাই, তবে ভয়াবহভাবে নয়, শান্তিপূর্ণ পথে। ইরান বারবার যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়—আমরা আর সেটা হতে দেব না (Donald Trump)।” তাঁর এই মন্তব্যে পরমাণু চুক্তি নিয়ে ২০১৫ সালের ঐতিহাসিক ‘জয়েন্ট কম্প্রেহেনসিভ প্ল্যান অফ অ্যাকশন’ (JCPOA)-এ ফিরতে আগ্রহের ইঙ্গিত মিলেছে বলেই মনে করছেন আন্তর্জাতিক কূটনীতিকরা।
কাতারকে ঘিরে ট্রাম্পের কূটনৈতিক কৌশল (Donald Trump)
ট্রাম্পের বক্তব্যে কাতারের ভূয়সী প্রশংসা করা হয়। তিনি বলেন, “কাতারে অবিশ্বাস্য উন্নয়ন হয়েছে (Donald Trump)। এই দেশের প্রকৌশল ও পরিকাঠামোগত অগ্রগতি সত্যিই প্রশংসনীয়।” কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির নেতৃত্বের প্রশংসা করে ট্রাম্প জানান, “এই দেশ তার নেতার জন্য গর্বিত হতেই পারে।” কাতারের সঙ্গে আমেরিকার বন্ধুত্ব যে সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেছে, তাও স্পষ্ট করেন তিনি। বলেন, “কাতারের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক এখন এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে, যা আগে কখনও হয়নি।” বিশেষ করে গাজায় হামাসের হাতে আটক থাকা আমেরিকান নাগরিকদের মুক্তির ক্ষেত্রে কাতারের ভূমিকার জন্য ধন্যবাদ জানান ট্রাম্প। এডান আলেকজ়ান্ডারের মুক্তি এবং বাকি পণবন্দিদের ছাড়ানোর ব্যাপারে আশাবাদী বলেও জানান তিনি।
পশ্চিম এশিয়ায় মার্কিন বিনিয়োগের কৌশল (Donald Trump)
ট্রাম্পের এ সফরের মূল উদ্দেশ্য ছিল আর্থিক লগ্নি নিশ্চিত করা (Donald Trump)। সৌদি আরবে ৬০ হাজার কোটি ডলারের বাণিজ্য ও অস্ত্র চুক্তির পর এবার কাতারের দিকেও নজর দিয়েছেন তিনি। সূত্রের খবর অনুযায়ী, কাতার আমেরিকার কাছ থেকে ৯৬ বিলিয়ন ডলারের ২১০টি বিমান কিনতে চলেছে। এর মধ্যে রয়েছে যুদ্ধবিমান, যাত্রীবিমান এবং ড্রোন। প্রতিরক্ষা ও এভিয়েশন ক্ষেত্রে এই বিশাল চুক্তি দুই দেশের সম্পর্ককে আরও মজবুত করবে বলেই ধারণা। কাতার এয়ারওয়েজ়ের জন্য ১০০টিরও বেশি বিমান কেনার কথাও উঠে এসেছে আলোচনায়।

ফুটবল কূটনীতি ও কাতারের সম্মান (Donald Trump)
নৈশভোজের শেষে ২০২৬ সালের ফুটবল বিশ্বকাপের স্মারকেও স্বাক্ষর করেন ট্রাম্প এবং কাতারের আমির (Donald Trump)। উল্লেখ্য, ২০২৬ সালের বিশ্বকাপ আয়োজিত হবে আমেরিকা, কানাডা ও মেক্সিকোতে। ২০২২ সালে বিশ্বকাপ সফলভাবে আয়োজন করে কাতার আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছিল। সেই আয়োজনের প্রশংসা করে ট্রাম্প বলেন, “বিশ্বকাপ আয়োজনের মাধ্যমে কাতার একটি নতুন আন্তর্জাতিক মানদণ্ড স্থাপন করেছে।”

কূটনৈতিক বার্তার তাৎপর্য (Donald Trump)
ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই সফর এবং বক্তব্যকে বিশেষজ্ঞরা কেবলমাত্র বিনিয়োগ সংক্রান্ত প্রচেষ্টা হিসেবে দেখছেন না। বরং এটি তাঁর ভবিষ্যৎ কূটনৈতিক অবস্থানের ইঙ্গিতবাহী বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষ করে ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন, কাতারের মতো ছোট কিন্তু প্রভাবশালী উপসাগরীয় রাষ্ট্রকে পাশে রাখা, এবং মধ্যপ্রাচ্যে আমেরিকার প্রভাব পুনঃপ্রতিষ্ঠা—এই সবই তাঁর সফরের উদ্দেশ্যের অন্তর্গত। বিশ্বজুড়ে উত্তেজনার আবহে ট্রাম্পের এই বার্তা মধ্যপ্রাচ্য রাজনীতিতে নতুন গতি আনতে পারে বলেই ধারণা কূটনৈতিক মহলের।