ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ‘তুমি কি মস্কোতে হামলা করতে পারবে?’ অবস্থান বদলে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে উৎসাহ জোগাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প(Donald Trump)। এই মুহূর্তে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধবিরতির জন্য তদ্বির করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। নোবেল শান্তি পুরস্কারে নিয়ে আগ্রহও প্রকাশ করেছেন তিনি। কিন্তু ইরান বনাম ইজরায়েল সংঘাত হোক বা ইজরায়েল বনাম হামাস যুদ্ধ, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বেশ কিছু পদক্ষেপ প্রশ্নের উদ্রেক ঘটিয়েছে। এবার রাশিয়া বনাম ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়েও ট্রাম্পের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
ইউক্রেনকে উৎসাহ ডোনাল্ড ট্রাম্পের (Donald Trump)
জানা গিয়েছে, গত ৪ জুলাই জেলেনস্কির সঙ্গে ফোনে কথা বলেন ট্রাম্প(Donald Trump)। ফিনান্সিয়াল টাইমসের খবর অনুযায়ী, সেই ফোনালাপেই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে ট্রাম্প বলেন, ‘ভলোদিমির, তুমি মস্কোয় হামলা চালাতে পারবে? সেন্ট পিটার্সবার্গে আঘাত হানতে পারবে?’ জবাবে জেলেনস্কি বলেন, ‘অবশ্যই পারব। যদি আমাদেরকে হাতিয়ার দেওয়া হয়, তাহলে আমরা হামলা চালাতে পারব।’ সূত্রের খবর, জেলেনস্কিকে ফোন করার আগের দিনই পুতিনের সঙ্গে কথা হয়েছিল ট্রাম্পের। যা একেবারেই সদর্থক হয়নি। এরপরই মার্কিন প্রেসিডেন্টের মুখে শোনা যায় মস্কোয় হামলার কথা।

‘পেট্রিয়ট এয়ার ডিফেন্স মিসাইল’ (Donald Trump)
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তরফে ইউক্রেনকে দীর্ঘপাল্লার অস্ত্র দেওয়া হবে কিনা, তা এখনও স্পষ্ট নয়(Donald Trump)। তবে ইউক্রেনের হাতে ‘পেট্রিয়ট এয়ার ডিফেন্স মিসাইল’ তুলে দেওয়ার কথা ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন ট্রাম্প। আত্মরক্ষার জন্যই ইউক্রেনের ওই অস্ত্র প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন তিনি। তাঁর দাবি, সকালে মিষ্টি করে কথা বলার পরই সন্ধ্যায় বোমা ছুড়ে মারেন পুতিন। তাই ইউক্রেনকে ওই ক্ষেপণাস্ত্র দেওয়া জরুরি। ইতিমধ্যে ন্যাটো নেতৃত্বের সঙ্গেও কথা হয়েছে ট্রাম্পের। সেই মতো ইউক্রেনকে সামরিক সাহায্য জোগানোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। ফিনান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদন অনুসারে, ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন যে রাশিয়ার প্রতি তার অবস্থান বদলের উদ্দেশ্য ‘তাঁদের (রাশিয়ানদের) যন্ত্রণা অনুভব করানো’ এবং ক্রেমলিনকে আলোচনার টেবিলে আসতে বাধ্য করা।
আরও পড়ুন-NATO Chief: ‘পুতিনের উপর বিরক্ত ট্রাম্প!’ জানালেন ন্যাটো প্রধান, কৃতজ্ঞতা জেলেনস্কির
রাশিয়াকে শর্ত (Donald Trump)
রাশিয়াকে ট্রাম্প শর্ত দিয়েছেন, হয় ৫০ দিনের সংঘর্ষবিরতিতে রাজি হও(Donald Trump)। না হলে তোমাদের ওপর ১০০ শতাংশ নিষেধাজ্ঞা জারি করব। স্বাভাবিকভাবেই ট্রাম্পের সেই শর্তে রাজি হননি পুতিন। এতেই তিতিবিরক্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট। যদিও রুশ প্রেসিডেন্টের সম্পর্কে ট্রাম্প বলেছেন, তিনি আশাহত হয়েছেন কিন্তু সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায়নি।সূত্রের খবর, ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘর্ষে নিজের অবস্থান বদল করছেন ট্রাম্প। রাশিয়াকে ‘শিক্ষা’ দিতে চান তিনি।

আরও পড়ুন-S Jaishankar: গালওয়ান সংঘাতের পর প্রথমবার জিনপিং-জয়শঙ্কর বৈঠক; কী কথা হল দু’জনের?
রাশিয়ার কড়া প্রতিক্রিয়া (Donald Trump)
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই অবস্থান পরিবর্তনের কড়া প্রতিক্রিয়া এসেছে রাশিয়ার তরফে(Donald Trump)। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্র পেশকভ বলেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বক্তব্য অত্যন্ত গুরুতর। ওয়াশিংটনের তরফে ঠিক কী বলা হচ্ছে, তা খতিয়ে দেখবে রাশিয়া।’ আসলে দ্বিতীয়বার মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরই রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে অতি তৎপর হন ট্রাম্প। একাধিকবার পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপ ও আধিকারিক পর্যায়ের বৈঠকও হয়েছে এই ইস্যুতে। এমনকী মাঝে ট্রাম্পের সঙ্গে তিক্ততা বাড়ে জেলেনস্কির। এদিকে, প্রতিবারই পুতিনের তরফে সদর্থক বার্তা দেওয়া হলেও যুদ্ধবিরতির পথে তিনি আসেননি। বরং হামলার ঝাঁজ আরও বাড়িয়েছে মস্কো। ফলে এখন জেলেনস্কির সঙ্গে তিক্ততা কাটিয়ে ফের ইউক্রেনের ঢাল হয়ে দাঁড়াচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
