ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: আবারও কড়া অভিবাসন নীতির পথে হাঁটলেন আমেরিকার প্রাক্তন ও সম্ভাব্য পরবর্তী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প(Donald Trump)। ইসলামিক সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলার অজুহাতে এবার আমেরিকায় প্রবেশের ক্ষেত্রে ১২টি দেশের নাগরিকদের উপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি করলেন তিনি। পাশাপাশি আরও সাতটি দেশের মানুষদের ক্ষেত্রেও আংশিকভাবে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। আগামী ৯ জুন থেকে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে বলে হোয়াইট হাউসের তরফে জানানো হয়েছে।
কেন ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত? (Donald Trump)
ট্রাম্প এই সিদ্ধান্তের কথা প্রথম ঘোষণা করেন বুধবার, এক সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে(Donald Trump)। তিনি লেখেন, “যেসব দেশ থেকে আমরা নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্যভাবে মানুষ যাচাই করতে পারি না, সেসব দেশের নাগরিকদের ঢুকতে দেওয়া যায় না। আমি আমেরিকার নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে একটি নতুন প্রশাসনিক নির্দেশিকায় সই করছি।”হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র আবিগেল জ্যাকসনের দাবি, “আমাদের দেশে এমন বহু বিদেশি ঢুকতে চায়, যারা আসলে ভয়ঙ্কর। তারা আমাদের নাগরিকদের ক্ষতি করতে চায়। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাদের হাত থেকে দেশের মানুষকে রক্ষা করার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তা রাখতে চলেছেন।”
নিষিদ্ধ দেশগুলির তালিকা (Donald Trump)
সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা ১২টি দেশ হল, আফগানিস্তান, মায়ানমার, চাদ, রিপাবলিক অফ কঙ্গো, ইকিউটোরিয়াল গিনি, ইরিত্রিয়া, হাইতি, ইরান, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান ও ইয়েমেন(Donald Trump)। এছাড়াও বুরুন্ডি, কিউবা, লাওস, সিয়েরা লিওন, টোগো, তুর্কমেনিস্তান ও ভেনেজুয়েলা-র উপর আংশিক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। হোয়াইট হাউস সূত্রে খবর, নিষেধাজ্ঞা জারি করা দেশগুলির মধ্যে বহু দেশেই সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ বা চরমপন্থীদের মদত দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। যেমন— তালিবান শাসিত আফগানিস্তান, কট্টরপন্থী ইরান এবং কমিউনিস্ট শাসিত কিউবা। অন্যদিকে, চাদ বা ইরিত্রিয়ার মতো কিছু দেশের নাগরিকেরা ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও আমেরিকায় থেকে যাওয়ার প্রবণতায় যুক্ত বলে দাবি করেছে প্রশাসন।

সাম্প্রতিক হামলার প্রসঙ্গ (Donald Trump)
ট্রাম্প এই ঘোষণা করার সময় সম্প্রতি কলোরাডোতে ঘটে যাওয়া এক হামলার প্রসঙ্গ টানেন(Donald Trump)। যেখানে এক মিশরীয় নাগরিক ‘ফায়ার বম্ব’ ছুড়ে শপিং মলের বাইরে হামলা চালান। তার মুখে ছিল ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’ স্লোগান। এই ঘটনার পরই ট্রাম্প প্রশাসন অভিবাসন নীতি আরও কঠোর করার উদ্যোগ নেয়।

আরও পড়ুন: Earthquake In Karachi : ভূমিকম্পে ফাটলো করাচি জেলের দেয়াল ! জেল থেকে পালালো দু-শোর বেশি বন্দি
বিরোধী প্রতিক্রিয়া (Donald Trump)
ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ও অভিবাসী কল্যাণ সংস্থাগুলি(Donald Trump)। তাঁদের দাবি, এই সিদ্ধান্ত একতরফাভাবে ধর্ম ও জাতীয়তার ভিত্তিতে বৈষম্য সৃষ্টি করছে। একইসঙ্গে এই নিষেধাজ্ঞা আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।তবে নির্বাচনী বছরে ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ তাঁর রক্ষণশীল সমর্থকদের মধ্যে যথেষ্ট জনপ্রিয়তা পাবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। অভিবাসন-নিয়ন্ত্রণ সবসময়ই ট্রাম্পের অন্যতম প্রধান নির্বাচনী ইস্যু হয়ে থেকেছে। এই ঘোষণায় ফের একবার আমেরিকার অভিবাসন নীতির কড়াকড়ি আন্তর্জাতিক মঞ্চে বিতর্কের কেন্দ্রে উঠে এলো। এর ভবিষ্যৎ পরিণতি কী হবে, তা সময়ই বলবে।