ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: প্রতি চার বছর অন্তর জাঁকজমকপূর্ণ একটি অনুষ্ঠানের মধ্য (Donald Trump Oath Taking Ceremony) দিয়ে শপথ নেন আমেরিকার নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট। এবারও তেমনই একটি অনুষ্ঠানের আসরে শপথ নিলেন আমেরিকার নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
শপথের দিন (Donald Trump Oath Taking Ceremony)
আমেরিকার ৪৭ তম প্রেসিডেন্ট (Donald Trump Oath Taking Ceremony) হিসেবে দায়িত্ব নিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই নিয়ে দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্টের পদে আসীন হলেন তিনি। তার সঙ্গে শপথ নিলেন তার ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্স। এই অনুষ্ঠান উপলক্ষে ইতিমধ্যেই ওয়াশিংটনে পৌঁছে যান ট্রাম্প। শুরু করে দেন শপথ অনুষ্ঠানের যাবতীয় প্রস্তুতি। শপথ পাঠের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মোট ১৮ টি অনুষ্ঠান হয়েছে। এর মধ্যে তিনটি ‘অফিসিয়াল প্রোগ্রাম’ ছিল।
কোথায় হল শপথ অনুষ্ঠান? (Donald Trump Oath Taking Ceremony)
মার্কিন সংবিধান অনুযায়ী, নতুন প্রেসিডেন্টের (Donald Trump Oath Taking Ceremony) মেয়াদ শুরু হয় ২০ জানুয়ারির দুপুরবেলা থেকে। আগের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানগুলি ক্যাপিটলের ওয়েস্ট লনের একটি বিশাল অস্থায়ী মঞ্চতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু চলতি বছর অর্থাৎ ২০২৫ সালে জাঁকিয়ে শীত পরার পূর্বাভাস থাকার কারণে ক্যাপিটল রোটুন্ডারের ভেতরেই হল এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান।
অনুষ্ঠানের অতিথি (Donald Trump Oath Taking Ceremony)
এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য আমন্ত্রণ করা হয়েছিল বহু বিখ্যাত ব্যক্তিদের। যার মধ্যে এক্স হ্যান্ডেলের মালিক ইলন মাস্ক, জেফ বেজোস এবং মার্ক জুকারবার্গের পাশাপাশি চিনা সোশ্যাল মিডিয়া জায়ান্ট টিকটকের প্রধান শ চিউও, সুন্দর পিচাই-এর নাম উল্লেখযোগ্য। শপথের (Donald Trump Oath Taking Ceremony) আগের রাতে আয়োজিত নৈশভোজে হাজির ছিলেন মুকেশ আম্বানি এবং নীতা আম্বানি।
শপথ বাক্য পাঠ
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি মার্কিন প্রেসিডেন্টকে (Donald Trump Oath Taking Ceremony) শপথবাক্য পাঠ করান। শপথের পর বক্তব্য রাখলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, “আমেরিকা শীঘ্রই আগের চেয়ে আরও বড়, শক্তিশালী এবং অনেক বেশি অনন্য এক দেশে পরিণত হবে। রাষ্ট্রপতির পদে ফিরে এসে আমি আত্মবিশ্বাসী এবং আশাবাদী যে আমরা জাতীয় সাফল্যের একটি রোমাঞ্চকর নতুন যুগের সূচনালগ্নে প্রবেশ করছি। দেশজুড়ে প্রবাহিত হচ্ছে পরিবর্তনের জোয়ার। সারা পৃথিবী জুড়ে সূর্যের আলো পড়ছে এবং আমেরিকার এই সুযোগটি ব্যবহার করার সুযোগ রয়েছে যা আগে কখনও হয়নি। কিন্তু প্রথমত, আমরা যে চ্যালেঞ্জগুলোর মুখোমুখি হই সে সম্পর্কে আমাদের সৎ হতে হবে। যদিও সামনে প্রচুর চ্যালেঞ্জ আছে, তবু আমি মনে করি আমরা সেগুলো মোকাবিলা করতে পারব।”
ট্রাম্পের মুখে উন্নয়নের কথা
শপথ নেওয়ার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, “আজ থেকে আমাদের দেশ উন্নতি লাভ করবে এবং সারা বিশ্বে আবারও সম্মানিত হবে। আমরা প্রত্যেক জাতির ঈর্ষার কারণ হব এবং আমরা কাউকে নিজেদের আর কোনও সুযোগ নিতে দেব না। ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতিটি দিনেই দেশের সার্বভৌমত্ব পুনরুদ্ধার করা হবে। দেশে ন্যায়বিচারের দাঁড়িপাল্লা পুনরায় ভারসাম্যপূর্ণ হবে। বিচার বিভাগ এবং আমাদের সরকারের জঘন্য, হিংসাত্মক এবং অন্যায্য অস্ত্রের অবসান হবে। এছাড়া আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হবে একটি গর্বিত, সমৃদ্ধ এবং স্বাধীন একটি জাতি তৈরি করা।”

বিশ্বাসঘাতকতার উত্তর ফিরিয়ে দেবেন ট্রাম্প!
ট্রাম্প আরও বলেছেন, “এই মুহূর্ত থেকে, আমেরিকার পতন স্তব্ধ হয়ে গেছে। সাম্প্রতিক নির্বাচনে একটি ভয়ঙ্কর বিশ্বাসঘাতকতার শিকার হয়েছি আমি। এবার আমি এই সব বিশ্বাসঘাতকতার জবাব ফিরিয়ে দেব। আমি জনগণকে তাদের বিশ্বাস, তাদের সম্পদ, তাদের গণতন্ত্র এবং প্রকৃতপক্ষে তাদের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেব।”
আরও পড়ুন: Trump Dance: ‘ওয়াইএমসিএ’- এর বিখ্যাত নৃত্যের তালে নাচলেন ট্রাম্প
বাইডেন সরকারকে কটাক্ষ
“আজ আমাদের সরকার আস্থার সংকটের মোকাবিলা করছে। বহু বছর ধরে, একটি কট্টরপন্থী এবং দুর্নীতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠান আমাদের নাগরিকদের কাছ থেকে ক্ষমতা এবং সম্পদ কেড়ে নিয়েছে। আমাদের সমাজের স্তম্ভগুলি ভেঙে পড়েছে এবং আপাতদৃষ্টিতে সম্পূর্ণ বেকার অবস্থায় রয়েছে। তারা এমন একটি সরকার যা ঘরে বসেও একটি সাধারণ সঙ্কটও পরিচালনা করতে পারে না। তারা একই সঙ্গে বিদেশে বিপর্যয়কর ঘটনাগুলির একটি অবিরত ক্যাটালগে হোঁচট খায়। আমাদের মহৎ সরকার, আইন মেনে চলা আমেরিকান নাগরিকদের রক্ষা করে না, কিন্তু বিপজ্জনক অপরাধীদের জন্য অভয়ারণ্য এবং সুরক্ষা প্রদান করে। যারা সারা বিশ্ব থেকে আমাদের দেশে অবৈধভাবে প্রবেশ করেছে, তারা তাদের সুরক্ষা দেয়। আমাদের এমন একটি সরকার ছিল যারা বিদেশী সীমানার প্রতিরক্ষায় সীমাহীন তহবিল দিয়েছে, কিন্তু আমেরিকান সীমানায় তার নিজের জনগণকে রক্ষা করতে অস্বীকার করেছে।”
ট্রাম্পের জীবন রক্ষা, শুধু আমেরিকার জন্য…
“যারা আমাদের উদ্দেশ্যকে থামাতে চায়, তারা আমার স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিল এবং প্রকৃতপক্ষে, আমার জীবন কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিল। মাত্র কয়েক মাস আগে, পেনসিলভানিয়ার একটি সুন্দর মাঠে, একটি ঘাতক বুলেট আমার কান ছিঁড়ে দিয়ে চলে গেছিল। কিন্তু আমি তখন অনুভব করি, এবং এখন আরও বেশি বিশ্বাস করি যে, আমেরিকাকে আবার মহান করার জন্য আমার জীবন রক্ষা হয়েছিল।”