ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ব্রিক্স-ভুক্ত দেশগুলির উপর অতিরিক্ত শুল্ক চাপানোর সিদ্ধান্ত নিলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump On BRICS)। সোমবার এক পোস্টে ট্রাম্প ঘোষণা করেন, ব্রিক্স-এর আমেরিকাবিরোধী অবস্থানে যে সব দেশ যুক্ত থাকবে, তাদের উপর ১০ শতাংশ অতিরিক্ত কর আরোপ করা হবে আমেরিকান পণ্যের উপর। একইসঙ্গে তিনি জানান, সোমবার বেলা ১২টা থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চুক্তিপত্র ও শুল্ক-চিঠি পাঠানো শুরু হবে।
ট্রাম্পের এই ঘোষণা এমন সময়ে এল, যখন ব্রাজ়িলের রিও ডি জেনেইরো শহরে চলছে ব্রিক্স-এর আন্তর্জাতিক সম্মেলন।অংশগ্রহণকারী দেশগুলির মধ্যে রয়েছে ভারত, চিন, রাশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা ছাড়াও নতুন সদস্য সংযুক্ত আরব আমিরশাহী, ইরান, মিশর, ইথিওপিয়া ও ইন্দোনেশিয়া। সম্মেলনের অন্যতম আলোচ্য বিষয় ছিল সন্ত্রাস ও আন্তর্জাতিক শুল্কনীতি। এর মধ্যেই ট্রাম্পের এই ঘোষণায় কূটনৈতিক উত্তেজনার আঁচ স্পষ্ট।
ব্রিক্স-এর অবস্থান ও ট্রাম্পের পাল্টা বার্তা (Donald Trump On BRICS)
সম্প্রতি জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলা এবং ইরানে সামরিক অভিযানের বিরুদ্ধে ব্রিক্স সম্মিলিত বিবৃতি দেয় (Donald Trump On BRICS)। যদিও বিবৃতিতে আমেরিকা বা ইজ়রায়েলের নাম ছিল না, বার্তা ছিল স্পষ্ট। বলা হয়, সন্ত্রাসের মোকাবিলায় ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করা উচিত এবং আন্তর্জাতিক আইনের ভিত্তিতে সব রাষ্ট্রকে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে হবে।এই অবস্থানকেই ট্রাম্প ‘আমেরিকাবিরোধী নীতি’ বলে অভিহিত করে তাঁর হুঁশিয়ারি দেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রাম্প লেখেন,“ব্রিক্স-এর আমেরিকাবিরোধী নীতির সঙ্গে যুক্ত হলে, কোনও দেশই ছাড় পাবে না। অতিরিক্ত ১০% কর বসবে।”
মোদীর বার্তা এবং ভারতের অবস্থান (Donald Trump On BRICS)
ব্রিক্স সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi) সরাসরি পাকিস্তানের নাম করে বলেন, “সন্ত্রাসের নিন্দা সুবিধা দেখে নয়, বরং নীতিগতভাবে হওয়া উচিত। ভারত সন্ত্রাসের শিকার, পাকিস্তান তার মদতদাতা—তাদের একসাথে রাখা চলে না।” মোদীর এই বার্তার পরই ব্রিক্স যৌথ বিবৃতিতে পহেলগাঁও হামলার কড়া নিন্দা করা হয়।

আরও পড়ুন: Calcutta High Court : PF বকেয়া মামলায় মদন মিত্রের আশ্বাসে সিএসটিসি-কে, শেষ সুযোগ হাইকোর্টের
ইরান প্রসঙ্গ ও শুল্কনীতি (Donald Trump On BRICS)
১৩ জুন ইরানে হওয়া সামরিক আক্রমণেরও বিরোধিতা করেছে ব্রিক্স। তাদের বক্তব্য, এই হামলা আন্তর্জাতিক আইন ও রাষ্ট্রপুঞ্জের সনদের বিরুদ্ধে। এছাড়া, ঘোষণাপত্রে বাণিজ্যিক শুল্ক বৃদ্ধি, একতরফা নিষেধাজ্ঞা এবং আমদানি-রফতানি বাধা সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। যদিও সরাসরি আমেরিকার নাম নেওয়া হয়নি, কিন্তু ইঙ্গিত যে ট্রাম্প প্রশাসনের দিকেই, তা স্পষ্ট।
আরও পড়ুন: Russia Ukraine War : ট্রাম্প-জেলেনস্কি ফোনালাপের পরেই ইউক্রেনের জবাবি হামলা, আদৌ থামবে কি যুদ্ধ?
ভারতের সঙ্গে চুক্তি অনিশ্চিত (Donald Trump On BRICS)
ট্রাম্পের দ্বিতীয় দফার শাসনকালে ভারত-সহ একাধিক দেশের উপর বাড়তি ২৬% শুল্ক চাপানো হয়। তা ৩ মাসের জন্য স্থগিত থাকলেও সেই সময়সীমা ৯ জুলাই শেষ হচ্ছে (Donald Trump On BRICS)। তার আগে এখনও ভারত-আমেরিকা বাণিজ্যচুক্তি চূড়ান্ত হয়নি। এই পরিস্থিতিতে ট্রাম্পের নতুন শুল্ক হুমকি, কূটনৈতিক চাপের কৌশল হিসেবেই দেখা হচ্ছে। ব্রিক্স ও আমেরিকার কূটনৈতিক দ্বন্দ্ব এবার সরাসরি অর্থনীতির মঞ্চে। ট্রাম্পের শুল্ক হুঁশিয়ারিতে নতুন করে উত্তাপ বাড়ল আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মহলে। এখন দেখার, ভারত সহ ব্রিক্স দেশগুলি কী কৌশল নেয় এই চাপ মোকাবিলায়।