ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এখন শুধু প্রযুক্তির উৎকর্ষ নয়, প্রতারণার হাতিয়ারও হয়ে উঠছে(Donald Trump Scam Case)। এমনই এক ভয়ানক নজির দেখা গেল কর্নাটকে, যেখানে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নামে ভুয়ো ভিডিও বানিয়ে প্রায় ২০০ জন সাধারণ মানুষের কাছ থেকে ২ কোটি টাকারও বেশি প্রতারণা করা হয়েছে।
কীভাবে ঘটনার সূত্রপাত? (Donald Trump Scam Case)
ঘটনার সূত্রপাত সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিও থেকে(Donald Trump Scam Case)। সেখানে দেখা যায় প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald J. Trump), যিনি নাকি তাঁর মালিকানাধীন হোটেলগুলিতে টাকা বিনিয়োগ করার আহ্বান জানাচ্ছেন। ভিডিওতে দাবি করা হয়, এই হোটেল চেইনে টাকা বিনিয়োগ করলে বিনিময়ে দ্বিগুণ টাকা ফেরত দেওয়া হবে। স্বভাবতই অনেকেই আকৃষ্ট হয়ে পড়েন এই প্রস্তাবে।
মোবাইল অ্যাপ ডাউনলোড(Donald Trump Scam Case)
ভিডিওটির সঙ্গে দেওয়া হয় একটি লিঙ্ক, যেখানে ক্লিক করে ব্যবহারকারীদের একটি মোবাইল অ্যাপ ডাউনলোড করতে বলা হয়(Donald Trump Scam Case)। নাম নথিভুক্ত করতে প্রথমে ১৫০০ টাকা জমা দিতে হয়। বিনিময়ে প্রতিদিন ৩০ টাকা করে ফেরত দেওয়া হয়, যেন ব্যবহারকারীরা ‘লাভের স্বাদ’ পেয়ে বড় অঙ্কের বিনিয়োগে উৎসাহী হন। কিছুদিন পরেই প্রতারকেরা বহু ব্যবহারকারীকে লক্ষ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করতে প্রলুব্ধ করে। এরপর হঠাৎ করেই অ্যাপটি বন্ধ হয়ে যায় এবং কেউই আর তাঁদের বিনিয়োগ করা টাকা ফেরত পান না।

আরও পড়ুন:US Tariff War : ৫০ শতাংশ করের হুমকি পেয়ে ট্রাম্পকে ফোন ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রেসিডেন্টের !
প্রতারিত যুবক কী জানাচ্ছেন?(Donald Trump Scam Case)
এক প্রতারিত যুবক জানিয়েছেন, তিনি প্রায় ৬ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন(Donald Trump Scam Case)। কিন্তু তাঁর কথায়, “প্রথমে ৩০ টাকা করে প্রতিদিন পাচ্ছিলাম, বিশ্বাস তৈরি হয়েছিল। এরপর বড় অঙ্কের টাকা দিলে সব বন্ধ হয়ে যায়। এখন বুঝতে পারছি, এটা একটা বড় জালিয়াতি ছিল।”প্রাথমিক তদন্তে কর্নাটক পুলিশ জানতে পেরেছে, AI (Artificial Intelligence) ব্যবহার করে ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। ডিপফেক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ট্রাম্পের মুখ, শরীরভঙ্গি এবং কণ্ঠস্বর হুবহু নকল করা হয়েছিল, যাতে সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে। এই ধরণের ডিপফেক ভিডিও এখন ক্রমশই চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠছে বিশ্ব জুড়ে।

কোথায় কোথায় ঘটেছে প্রতারণা?(Donald Trump Scam Case)
এই প্রতারণার ঘটনাগুলি ঘটেছে কর্নাটকের টুমাকুরু, মেঙ্গালুরু এবং হাভেরি জেলায়(Donald Trump Scam Case)। পুলিশের মতে, এই তিন জায়গা মিলিয়ে অন্তত ২০০ জন ভুক্তভোগী রয়েছেন, এবং প্রতারকদের দ্বারা লুট হওয়া টাকার পরিমাণ প্রায় ২ কোটি টাকা।ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে কর্নাটক সাইবার ক্রাইম বিভাগ। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে জালিয়াতি, প্রতারণা, এবং তথ্যপ্রযুক্তি আইনের একাধিক ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট এবং মোবাইল নম্বর ট্র্যাক করে প্রতারকদের হদিশ পাওয়ার চেষ্টা চলছে।পুলিশের তরফে সাধারণ মানুষকে সতর্ক করা হয়েছে—কোনও বিখ্যাত ব্যক্তি, বিশেষ করে আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক নেতা বা শিল্পপতির নামে ছড়ানো ভিডিও বা বিনিয়োগ সংক্রান্ত প্রস্তাব যাচাই না করে বিশ্বাস করবেন না।
আরও পড়ুন:Hazardous Cargo Capsizes : রাসায়নিক বোঝাই কন্টেইনার ভেসে আসছে পাড়ে, সতর্কতা জারি কেরল উপকূলে
AI ও ডিপফেক প্রযুক্তি আইন ও নিরাপত্তা(Donald Trump Scam Case)
এই ঘটনার পর আবারও প্রশ্ন উঠছে, প্রযুক্তির এই নতুন যুগে কিভাবে AI ও ডিপফেক প্রযুক্তি আইন ও নিরাপত্তার চোখে নিয়ন্ত্রণে আনা যায়(Donald Trump Scam Case)। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভবিষ্যতে এ ধরনের প্রতারণা আরও বাড়বে, যদি না আইন, প্রযুক্তি ও সচেতনতা হাতে হাত ধরে চলে।এই ঘটনার মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে, ডিজিটাল দুনিয়ায় পদে পদে বিপদ। বিনিয়োগ করার আগে যাচাই করুন, বিশ্বাস করার আগে ভাবুন—না হলে হয়তো আপনার সঞ্চয়ও হাতছাড়া হতে পারে কোনো এআই তৈরি ভুয়ো ভিডিওর ফাঁদে পড়ে।