ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফের তাঁর একপাক্ষিক অর্থনৈতিক সিদ্ধান্তে আন্তর্জাতিক স্তরে বিতর্ক তৈরি করলেন। এবার নিশানায় ব্রাজিল(Donald Trump Tarrif Row)। ব্রাজিল থেকে আমেরিকায় রফতানি হওয়া সমস্ত পণ্যের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপানোর কথা ঘোষণা করেছেন ট্রাম্প। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে আগামী ১ অগস্ট থেকে।
বোলসেনারো ইস্যুতে তুঙ্গে উত্তেজনা (Donald Trump Tarrif Row)
ব্রাজিলের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসেনারোর বিরুদ্ধে বিচারপ্রক্রিয়া চালানো নিয়ে বেজায় চটেছেন ট্রাম্প(Donald Trump Tarrif Row)। তাঁর অভিযোগ, বর্তমান প্রেসিডেন্ট লুইস ইনাসিয়ো লুলা দ্য সিলভার প্রশাসন ‘মিথ্যা অভিযোগে’ বিচার করে বোলসেনারোর মতপ্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব করছে। ট্রাম্পের কটাক্ষ, “এই বিচার আর চলতে পারে না। এখনই বন্ধ হওয়া উচিত।”
ট্রাম্প দাবি করেন, ব্রাজিলে আমেরিকার সমাজমাধ্যম সংস্থাগুলির উপর বিধিনিষেধ আরোপ করে বাক্স্বাধীনতা লঙ্ঘন করা হচ্ছে। এই অভিযোগকে কেন্দ্র করেই বাণিজ্যিক প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ নিয়েছে আমেরিকা।
বাণিজ্য ঘাটতির অজুহাত (Donald Trump Tarrif Row)
শুধু রাজনৈতিক কারণ নয়, ট্রাম্প বাণিজ্য ঘাটতিকেও সামনে টেনেছেন(Donald Trump Tarrif Row)। তিনি দাবি করেন, ব্রাজিল থেকে আমদানির পরিমাণ আমেরিকার রফতানির চেয়ে অনেক বেশি। তাই দ্বিপাক্ষিক সমতা রক্ষায় এই শুল্ক বসানো জরুরি হয়ে পড়েছে।
এর আগে চলতি বছরের ২ এপ্রিল ব্রাজিলের পণ্যে ১০% শুল্ক বসিয়েছিলেন ট্রাম্প। এবার তা বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত কার্যত ব্রাজিলের অর্থনীতির উপর বড় ধাক্কা বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

পাল্টা জবাব ব্রাজিলের (Donald Trump Tarrif Row)
ট্রাম্পের ঘোষণার পরেই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা(Donald Trump Tarrif Row)। সমাজমাধ্যমে পোস্টে তিনি জানান, “ব্রাজিল স্বাধীন এবং সার্বভৌম দেশ। আমরা অন্য কারও নির্দেশ মানি না।” তিনি স্পষ্ট করে দেন, বোলসেনারোর বিরুদ্ধে বিচারপ্রক্রিয়া সম্পূর্ণ স্বাধীন বিচারব্যবস্থার আওতায় পরিচালিত হচ্ছে, সরকারের হস্তক্ষেপ সেখানে নেই।
একই সঙ্গে লুলা দাবি করেন, গত ১৫ বছরে ব্রাজিলই বরং আমেরিকার তুলনায় বাণিজ্য ঘাটতির শিকার হয়েছে। একতরফা শুল্ক বসিয়ে আমেরিকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের নিয়ম লঙ্ঘন করছে বলেও অভিযোগ তোলেন তিনি।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও পরিপ্রেক্ষিত (Donald Trump Tarrif Row)
ট্রাম্প (Donald J. Trump) কেবল ব্রাজিল নয়, আলজেরিয়া, ইরাক, লিবিয়া, শ্রীলঙ্কা, ব্রুনেই, মলডোভা এবং ফিলিপিন্সের উপরেও বিভিন্ন মাত্রায় শুল্ক চাপিয়েছেন(Donald Trump Tarrif Row)। এই সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক বাণিজ্যকে জটিল করে তুলতে পারে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা।উল্লেখ্য, ২০২২ সালের নির্বাচনে বোলসেনারোর পরাজয়ের পর তাঁর সমর্থকেরা সংসদ ভবনে হামলা চালিয়েছিলেন। এরপরই তাঁর বিরুদ্ধে ‘ক্ষমতার অপব্যবহার’ ও ‘গণতন্ত্রবিরোধী ষড়যন্ত্র’-এর অভিযোগে মামলা শুরু হয়। ২০২৩ সালে তিনি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার অধিকার হারান। সেই ঘটনার পর থেকেই তাঁকে ‘রাজনৈতিক নির্যাতনের শিকার’ বলে দাবি করে আসছেন ট্রাম্প।
একদিকে শুল্কযুদ্ধ, অন্যদিকে মতাদর্শগত সংঘাত(Donald Trump Tarrif Row)। ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ শুধু ব্রাজিল নয়, সমগ্র দক্ষিণ আমেরিকার সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্কে প্রভাব ফেলতে পারে বলেই আশঙ্কা করছেন আন্তর্জাতিক কূটনীতিকরা। এখন দেখার, ব্রাজিল পাল্টা শুল্কে কী মাত্রার পদক্ষেপ নেয় এবং বিশ্ববাজারে তার কতটা প্রভাব পড়ে।