ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: শীতের মরসুম মানেই পুরুলিয়ায় (Purulia) পর্যটকদের ভিড়। পুরুলিয়া জেলার আনাচে কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে নানান ভ্রমণ স্থল। তার মধ্যে অন্যতম বান্দোয়ানের দুয়ারসিনি (Duarsini)। প্রকৃতির রূপ, রস, গন্ধ এখানে মিলেমিশে একাকার। শাল, সেগুন, অর্জুন, মহুয়া। এক কথায় অরণ্য সুন্দরী। বান্দোয়ানের দুয়ারসিনির তাই অরণ্য সুন্দরী নাম যেন মানানসই। যার বিশেষত্ব ঘন জঙ্গল। ইংরেজি নববর্ষে পর্যটকদের উপচ্ছে পড়া ভীড় জেলার এই পর্যটনকেন্দ্রে।
কুয়াশামাখা মনোমুগ্ধকর পাহাড়ের সারি (Duarsini)
শীতে যেন প্রকৃতি নবসাজে সজ্জিত (Duarsini)। রাস্তার দুপাশের সবুজের সমুদ্র। মায়ামাখানো পরিবেশে শুধুই মুগ্ধতার পরশ। এখানে বনবাংলোয় পর্যটকেরা ভ্রমণকালে রাত্রিযাপনের সুবিধা ভোগ করেন। শীতের রোদে কুয়াশামাখা পাহাড় চূড়ার মনোমুগ্ধকর সারি। পাহাড়ের পাদদেশ ঝরনা এবং ঝর্ণার পাশে দেবী দুয়ারসিনী মন্দির।পাহাড়ের গায়ের অসংখ্য গাছের বাহারে মুগ্ধ হতে বাধ্য। শাল, সেগুন, পলাশ, পিয়াল, আমলকি, বয়ড়া, হরিতকি গাছের আধিক্য। সৌভাগ্যবশত চোখে পড়তে পারে শেয়াল, মসজারু, ভালু,খরগোশ, বনমোরগ, ধনেশ ছাড়াও দলমা থেকে নেমে আসা হাতির পাল।
‘ভাল’ পাহাড় (Duarsini)
দুয়ারসিনির অন্যতম নিদর্শন ভাল পাহাড়। দুয়ারসিনি (Duarsini) যাওয়ার পথে একটি পাহাড়ের এমন আজব নাম অনেকেরই কৌতূহলের কারণ। আসলে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ওই এলাকায় এত উন্নয়নমূলক কাজ করেছিল তার জন্য এমন নামে ডাকা হয়। দুয়ারসিনির উদ্দেশ্যে বেরিয়ে এখানে দু-দণ্ড জিরিয়ে নেওয়া যেতে পারে। এইপথে পরে কুঁটিয়া। ঝাড়খণ্ড লাগোয়া এই এলাকায় রয়েছে সিআরপিএফ ক্যাম্প। দুয়ারসিনি থেকে রাস্তা আসনপানি পর্যন্ত যাচ্ছে। এটি বাংলার শেষ সীমানা।
আরও পড়ুন: Jalpaiguri News: সপ্তাহান্তে প্রকৃতির কোলে সময় কাটাতে চাইছেন, আপনার জন্য সেরা ভ্রমণ স্থান এই জায়গা
অনাঘ্রাতা কুমারী
ঘন জঙ্গল এক কথায় ‘আনটাচ’। স্থানীয়রা বলেন দুয়ারসিনি অনাঘ্রাতা কুমারী। এখানে এক এক ঋতুতে যেন প্রকৃতির আলাদা রূপ। জঙ্গল রূপের পসরা সাজিয়ে বসেছে। সবুজ বনরাজি ঘিরে রয়েছে নদী সাতগুড়ুম। এই নদী জঙ্গলের ভিতর দিয়ে এগিয়ে চলেছে। পাহাড়ের টিলার কোল ঘেঁষে জঙ্গলের পাশ দিয়ে সাতগুড়ুমের ছন্দ মনে করিয়ে দেয় তিস্তাকে। উত্তরবঙ্গের এই নদী নিয়ে যাদের আলাদা রকম অনুভূতি রয়েছে সাতগুড়ুম দেখলে তাদের মন ভাল হয়ে যাবে।
প্রকৃতি যেখানে সুন্দর
এখানে সাতগুড়ুম নদীতে দলমা থেকে আসা হাতির দল ও হরিণের দল জল খায়। কপাল ভাল হলে চাক্ষুষ করা যায় ওদের তৃষ্ণা মেটানোর ছবি। এখানে ট্রেকিং করেও যাওয়া যায়। জঙ্গলের মধ্যে রয়েছে অজস্র কীটপতঙ্গ। আর পথে চলতে চলতে মিলতে পারে হনুমান বা ময়ূর।
আরও পড়ুন: Honeymoon Destination: বিয়ের খরচ সামলে হানিমুন বাজেটে টানাটানি? কম খরচে বিদেশেই হোক মধুচন্দ্রিমা
ভিড়ে ঠাসা দুয়ারসিনি
যৌবনবতী শৈলশ্রেনীর সঙ্গে মায়াজাগানো শ্যামল অরণ্যের মনোমুগ্ধকর দৃশ্যে বনজ্যোস্না যেন ভ্রমণ পিপাসুদের কাছে স্বর্গরাজ্য। বান্দোয়ানের এই দুয়ারসিনি পর্যটন কেন্দ্রকে ঘিরে এখনও আধুনিকতার ছাপ সেই অর্থে পড়েনি। তাই পর্যটকদের আকর্ষণ এখানকার প্রান্তভূমির প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর নকশা দেওয়া মাটির তৈরি কাঁচা বাড়ি। যে কারনে দুয়ারসিনি পাহাড়ের নিস্তব্ধ এই সবুজ উপত্যকায় নবর্ষের দিনে বনভোজনের উপচ্ছে পড়া ভিড় পর্যটকদের।