ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ভূমিকম্পের কম্পনে ফাটল ধরল জেলের দেওয়ালে, ভেঙে পড়ল ছাদের একাংশ (Earthquake In Karachi)। আর সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে পাকিস্তানের করাচির মালির কারাগার থেকে পালালো ২০০-রও বেশি বন্দি। রবিবার থেকে একাধিক ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠা করাচিতে সোমবার গভীর রাতে ঘটে যায় এই চাঞ্চল্যকর ঘটনা।
২৪ ঘণ্টায় তিন বার ভূমিকম্প (Earthquake In Karachi)
পাকিস্তানের (Shehbaz Sharif) দক্ষিণ উপকূলবর্তী শহর করাচিতে গত ২৪ ঘণ্টায় তিন বার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে (Earthquake In Karachi)। যদিও কম্পনের মাত্রা ছিল মৃদু, তবুও তার প্রভাব পড়ে বাচা জেলের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি স্থাপনায়। ছাদের একাংশ ভেঙে পড়া ও দেওয়ালে ফাটল ধরায় বন্দিদের মধ্যে চরম আতঙ্ক ও বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়ে। সেই বিশৃঙ্খলার সুযোগ নিয়েই ঘটে এই নজিরবিহীন কারাপলায়ন।পাক সংবাদমাধ্যম ‘ডন’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভূমিকম্পের পরে ছাদ ধসে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে কারাবন্দিদের মধ্যে হুড়োহুড়ি শুরু হয়ে যায়। প্রায় হাজার জন বন্দিকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। হুড়োহুড়ির মধ্যেই অন্তত ২০০ জন বন্দি জেলের ভাঙা দেওয়াল ও অন্যান্য দুর্বল অংশ দিয়ে পালিয়ে যান (Earthquake In Karachi)।
জেলরক্ষীদের অস্ত্র ছিনিয়ে পলাতক (Earthquake In Karachi)
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অনেক বন্দি জেলরক্ষীদের কাছ থেকে অস্ত্র ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়েছেন (Earthquake In Karachi)। এমনকি গোলাগুলির ঘটনাও ঘটে জেলের ভিতর। গুলির লড়াইয়ে মৃত্যু হয়েছে এক বন্দির। আহত হয়েছেন তিন জন ফ্রন্টিয়ার কর্পস (এফপি) সদস্য এবং এক জেলরক্ষী। এ ঘটনায় করাচি জুড়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। শহরের বিভিন্ন প্রান্তে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। জাতীয় সড়ক ও শহরের গুরুত্বপূর্ণ রুটগুলিতে বসানো হয়েছে নাকা চেকিং। এখন পর্যন্ত প্রায় ৮০ জন পলাতক বন্দিকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে। তবে শতাধিক বন্দি এখনও পলাতক, যাঁদের ধরতে তল্লাশি অভিযান জোরদার করা হয়েছে (Earthquake In Karachi)।

কারাগারের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় প্রশ্ন (Earthquake In Karachi)
এদিকে প্রশাসনের তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও নির্দিষ্ট পরিসংখ্যান দেওয়া হয়নি (Earthquake In Karachi)। তবে পুলিশ সূত্রে দাবি, পালিয়ে যাওয়া বন্দিদের মধ্যে বেশ কিছু কুখ্যাত অপরাধীও রয়েছেন, যাঁরা খুন, অপহরণ এবং মাদক চক্রের সঙ্গে যুক্ত।ঘটনার পর থেকে কারাগারের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে তীব্র প্রশ্ন উঠেছে। কীভাবে একটি ভূমিকম্পে এমন নিরাপত্তাব্যবস্থা ভেঙে পড়ল, তা খতিয়ে দেখতে ইতিমধ্যেই তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি উঠেছে।

এই ঘটনা শুধুমাত্র করাচি নয়, গোটা পাকিস্তানেই কারা ব্যবস্থার সুরক্ষা এবং দুর্বল অবকাঠামো নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়েছে। ভূমিকম্প যেমন প্রকৃতির অপ্রতিরোধ্য শক্তি, তেমনই এই ঘটনা যেন দেখিয়ে দিল—দুর্বল কাঠামো ও শিথিল নিরাপত্তা কীভাবে মারাত্মক পরিণতির দিকে ঠেলে দিতে পারে কোনও সমাজকে।