রিমিক মাঝি, কলকাতা: হারতে হারতে দলটার দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছিল। যুবভারতীতে রবিবারসরীয় সন্ধ্যায় সেই দলের হাত ধরেই জ্বলল মশাল। আইএসএল-এর মিনি ডার্বিতে মহমেডান স্পোটিং-কে ৩-১ গোলে হারিয়ে সুপার সিক্সে ওঠার ক্ষীণ আশা জাগিয়ে রাখল ইস্টবেঙ্গল (East Bengal)। যুবভারতীতে লাল-হলুদ জার্সিতে গোল করলেন নাওরেম মহেশ, সল ক্রেসপো এবং ডেভিড। মহমেডানের হয়ে একটি মাত্র গোল ফ্র্যাঙ্কার।
রবিবার যুবভারতীতে লড়াইটা ছিল পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে থাকা বাংলার দুই দলের। ইস্টবেঙ্গল ১১ নম্বরে, আর মহমেডান ১৩ তে। এদিন গোটা ম্যাচে চারটি গোল হলেও দুই দল মিলে মিস করলেন তার থেকেও আরও অনেক সুযোগ। লাল হলুদের নতুন বিদেশি মেসি বোউল যেমন গোলের সুযোগ তৈরি করলেন, তেমনি মিসও করলেন। গত মরসুমে সবচেয়ে বেশি গোল করা দিমিত্রি দিয়ামন্তাকসও সহজ সুযোগ নষ্ট করলেন। এর মাঝেই ২৭ মিনিটে নাওরেম মহেশের বলে এগিয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল (East Bengal)।
আরও পড়ুন: IPL 2025: আইপিএল-এর উদ্বোধনী ম্যাচেই নাইটদের প্রতিপক্ষ রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু
ম্যাচের রং আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে দ্বিতীয়ার্ধে (East Bengal)
দ্বিতীয়ার্ধেও মহমেডান খুব একটা ভালো খেলতে পারিনি। ৬৫ মিনিটে সাদা-কালোর রক্ষণের ভুলকে কাজে লাগিয়ে ইস্টবেঙ্গলের হয়ে দ্বিতীয় গোলটি করে যান ক্রেসপো। গোলকিক থেকে ডিফেন্ডার মাফেলাকে বল দিয়েছিলেন মহমেডান গোলরক্ষক পদম। কিন্তু বল নিজের পায়ে রাখতেই পারেননি মাফেলা। সেই বল পেয়ে যান বোউলি। ইস্টবেঙ্গলের (East Bengal) মেসির বাড়ানো পাস থেকে দলকে ২-০ গোলে এগিয়ে দিতে ভুল করেননি ক্রেসপো। তারপরই কিছুটা খোলস ছেড়ে বেরোয় মহমেডান। তিন মিনিটের মধ্যেই ম্যাচের বয়স যখন ৬৮, তখন রবি হাঁসদার বাড়ানো অসাধারণ পাশ ধরে মহমেডানের হয়ে গোল করে ব্যবধান কমান ফ্র্যাঙ্কা। কিছুটা হলেও ম্যাচে প্রাণ ফেরে।

৭০ মিনিটে হেক্টর উইস্তের হেড বারে লেগে ফিরে না এলে ব্যবধান আরও বাড়াতে পারত ইস্টবেঙ্গল (East Bengal) । ৭৫ মিনিটে মহমেডানের সন্তোষ ট্রফি জয়ী বাংলা দলের সদস্য রবি হাঁসদার শটও বারে লেগে ফিরে আসে। ফিরতি বল কোনরকমে গোললাইন সেভ করেন লাল-হলুদ ডিফেন্ডার আনোয়ার আলি। তবে ম্যাচের অন্তিম মুহূর্তে নিজের পুরনো দলের বিরুদ্ধে গোল করে ইস্টবেঙ্গলের ষষ্ঠ জয় নিশ্চিত করে দেন ডেভিড। মহমেডানকে আই লিগ চ্যাম্পিয়ন করে আইএসএলে তোলার নেপথ্যে বড় ভূমিকা ছিল এই ডেভিডের। তাই রবিবার যুবভারতীতে পুরনো দলের বিরুদ্ধে গোল করার পরও কোনরকম সেলিব্রেশন করতে দেখা গেল না তাঁকে।
এদিনের জয়ের ফলে ২০ ম্যাচে ২১ পয়েন্ট নিয়ে ১১ নম্বরেই রইল ইস্টবেঙ্গল। ২০ ম্যাচে ১১ পয়েন্ট নিয়ে ১৩ নম্বরেই রইল মহমেডান। এই জয়ের ফলে ইস্টবেঙ্গলের সুপার সিক্সে ওঠার ক্ষীণ আশা রয়ে গেল। পঞ্জাব, হায়দরাবাদ, বেঙ্গালুরু ও নর্থইস্টের বিরুদ্ধে শেষ ৪ ম্যাচ জিতলে ইস্টবেঙ্গলের পয়েন্ট হবে ৩৩। ৪ নম্বরে থাকা নর্থইস্টের ২১ ম্যাচে পয়েন্ট ৩২। ২০ ম্যাচে ৩১ পয়েন্ট নিয়ে ৫ ও ৬ নম্বরে রয়েছে যথাক্রমে বেঙ্গালুরু ও মুম্বই। ২১ ম্যাচে ২৯ পয়েন্ট নিয়ে সাতে ওড়িশা। তাই অস্কার ব্রুজোঁর দলের প্রথম ছ’য়ে ঢুকে পড়ার সুযোগ এখনও একটা রয়েছে। তারজন্য অবশ্যই শেষ ৪ ম্যাচে জিততে হবে ইস্টবেঙ্গলকে (East Bengal)। গোটা মুরসুমেই ধারাবাহিকতার অভাব। তাই চার ম্যাচের চারটিতেই জয় পাবে কিনা সেটাই এখন বড় প্রশ্ন!