ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: আমেরিকা মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার পর এবার ইউরোপীয় ইউনিয়ন (EU Meeting) সাহায্য দেওয়ার আশ্বাস পূরণ করতে চলেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশ গুলির রাষ্ট্রনেতারা আলোচনায় বসার পরে বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। এমনকি ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলি সম্মিলিত ভাবে ইউক্রেনে সেনা পাথাবে কিনা সেই নিয়েও শুরু হয়েছে জল্পনা।
ট্রাম্প ও জ়েলেনস্কির বৈঠকের ব্যর্থতা (EU Meeting)
হোয়াইট হাউসে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে বসে ছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জ়েলেনস্কি (EU Meeting)। কিন্তু, দুই দেশের রাষ্ট্র নেতার মধ্যে তীব্র বাগযুদ্ধ শুরু হয়েছিল সেই বৈঠকের মাঝেই। সেখানেই আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণ হিসেবেও উল্লেখ করেছিলেন। এই বৈঠক ভেস্তে যাওয়ায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাহায্যের আশ্বাস (EU Meeting)
ট্রাম্পের সঙ্গে জ়েলেনস্কির বৈঠকের ব্যর্থতার পর আমেরিকা থেকে ব্রিটেনে গিয়েছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। ব্রিটেনের প্রধান মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর সাহায্যের আশ্বাস মিলেছিল। এমনকি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জ়েলেনস্কির পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা করেছিলেন ইউরোপীয় ইয়নিয়ন (EU Meeting)।

ইউক্রেনের সেনা পাঠানোর সম্ভবনা
ইউরোপের ২০টি দেশের রাষ্ট্রনেতারা ইউক্রেনকে সাহায্য করার বিষয়ে একটি বৈঠকে সামিল হন। সেখানেই ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মার শুক্রবার লন্ডনে আয়োজিত এই ২০টি ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশের বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। সেই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, আপাতত আমেরিকার মধ্যস্ততায় ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধ বিরতি প্রস্তাব কার্যকর হচ্ছে কি না সেই বিষয়ের উপর নজর রাখবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশ গুলি। তারপর পরিস্থিতির গতি কোনদিকে যায় তা পর্যালোচনা করে তবেই সিদ্ধান্ত নেবে ইউরোপের দেশ গুলি। লন্ডনের নর্থউডে আয়োজিত ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলির ওই বৈঠকের পরে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী স্টার্মার বলেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যদি যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত সমঝোতা লঙ্ঘন করেন, তবে তার পরিণতি গুরুতর হবে।
আরও পড়ুন: Israel Hamas War: ইসরায়েলের হামলায় নিহত হামাসের সামরিক গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান ওসামা
ইউরোপ কি সেনা পাঠাবে?
ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২০টি দেশের রাষ্ট্র নেতাদের এই বৈঠকের পর সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন, তাহলে কি ইউরোপের দেশগুলি সেনা পাঠাবে ইউক্রেনে? এই প্রশ্নে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের রাজনৈতিক তৎপরতা এবং সামরিক পরিকল্পনা সঠিক দিশাতেই এগোচ্ছে। তিনি বলেন, এ মাসের শুরুতেই ঋণনীতি শিথিল করে প্রতিরক্ষা খাতে আরও বরাদ্দের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেনকে সাহায্য করতেই ওই বাড়তি অর্থ খরচ করা হতে পারে বলেও ইঙ্গিত করেন তিনি। গত তিন বছর ধরেই ইউক্রেনকে সামরিক সাহায্য করছে ইউরোপের দেশ গুলি। এবার আমেরিকা সাহায্য কমিয়ে দেওয়ার পর সেই সাহায্য আরও বাড়াতে চাইছে ইউরোপ। গত ৬ মার্চ ইউরোপের ২৭টি রাষ্ট্রে যৌথ ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে, ইউরোপের নিরাপত্তা শক্ত করতে ১৫ হাজার কোটি ইউরো ঋণ নেবে, যার বড় অংশ ব্যয় হবে ইউক্রেনের সামরিক সাহায্যে।
পুতিনের শর্ত সাপেক্ষ যুদ্ধ বিরতি
ট্রাম্পের সঙ্গে পুতিনের যুদ্ধবিরতি নিয়ে টেলিফোনে কথা হলে ৩০ দিনের শর্তসাপেক্ষে যুদ্ধ বিরতিতে রাজি রয়েছে। এরপর বুধবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে টেলিফোনে কথা হয় ট্রাম্পের। আগামী সপ্তাহে রাশিয়ার এক প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আমেরিকার প্রতিনিধিদলের বৈঠক হবে সৌদি আরবে। এরই মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশ গুলির এই পদক্ষেপ বেশ তাৎপর্যপুর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।