ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং আজকাল স্বাস্থ্যের প্রতি (Fasting Tips) সচেতন মানুষের মধ্যে খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। মূলত এটি একটি খাওয়া-দাওয়ার পদ্ধতি যেখানে দিনে নির্দিষ্ট কিছু সময় উপোস করে অন্য সময়ে খাওয়া হয়। বলিউডের অনেক তারকা এই পদ্ধতির গুণাগুণ তুলে ধরায় সাধারণ মানুষও এতে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। যাঁরা ওজন কমাতে বা শরীর স্বাস্থ্য ভালো রাখতে চান, তাঁরা অনেকেই ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিংয়ের মাধ্যমে সফলতা পেয়েছেন। তবে এই পদ্ধতি শুরু করার আগে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মাথায় রাখা দরকার।
ধীরে ধীরে সময় বাড়ানো উত্তম (Fasting Tips)
প্রথমত, লক্ষ্য খুব বড় হওয়া (Fasting Tips) উচিত নয়। ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিংয়ে সাধারণত খাওয়ার সময় এবং উপোসের সময়ের মধ্যে একটি নির্দিষ্ট অনুপাত থাকে, যেমন ৮:১৬ বা ১০:১৪। যারা নতুন, তাদের জন্য ১২:১২ অনুপাত দিয়ে শুরু করাই ভালো। প্রথম দিনগুলোতে খুব বেশি দিন উপোস রাখার চেষ্টা না করে ধীরে ধীরে সময় বাড়ানো উত্তম। এতে শরীরের অভ্যস্ত হওয়ার সুযোগ থাকে এবং স্ট্রেসও কম হয়।
শরীরকে হাইড্রেটেড রাখা খুব জরুরি (Fasting Tips)
দ্বিতীয়ত, উপোসের সময় শরীরকে হাইড্রেটেড রাখা (Fasting Tips) খুব জরুরি। যদিও খাবার না খাওয়া হয়, তবে জল পান করা একদম নিষিদ্ধ নয় বরং প্রয়োজনীয়। দিনে অন্তত ৮ থেকে ১০ গ্লাস জল খাওয়ার চেষ্টা করুন, কারণ জল খিদেকে অনেক সময় কমিয়ে দেয় এবং শরীরের বিষক্রিয়াও সাহায্য করে।
পুষ্টিকর ও সুষম খাবার
তৃতীয়ত, খাবারের সময় পুষ্টিকর ও সুষম খাবার খাওয়া অপরিহার্য। প্রোটিন, ভিটামিন, খনিজ ও ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার শরীরকে শক্তি জোগায় এবং দীর্ঘ সময় পেট ভরে রাখে। একই সাথে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট ও ফলমূল খাদ্য তালিকায় রাখার চেষ্টা করুন। এই ধরনের খাবার শরীরের পুষ্টি চাহিদা পূরণে সাহায্য করে এবং ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
আগে থেকে পরিকল্পনা
চতুর্থত, খাওয়ার সময়সূচি আগে থেকে পরিকল্পনা করে রাখা উচিত। হঠাৎ ক্ষুধা লাগলে অস্বাস্থ্যকর খাবারের প্রতি আকৃষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই বাড়ি থেকে স্বাস্থ্যকর খাবার নিয়ে যাওয়া বা আগে থেকে প্রস্তুতি নেওয়া বাঞ্ছনীয়। এতে খাওয়ার নিয়ন্ত্রণ রাখা সহজ হয়।
শরীরচর্চা করাও জরুরি
পঞ্চমত, শরীরচর্চা করাও জরুরি। ব্যায়াম বা যোগাসন না করতে পারলেও দিনে অন্তত আধ ঘণ্টা হাটা বা হালকা শরীরচর্চা করা উচিত। এটি মেটাবলিজম বাড়ায় এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে।

পর্যাপ্ত ঘুম
ষষ্ঠত, পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করতে হবে। ওজন কমানোর প্রক্রিয়ায় ঘুমের একটা বড় ভূমিকা থাকে। প্রতিদিন কমপক্ষে ৬-৭ ঘণ্টা ঘুম নেওয়া শরীরের জন্য উপকারী এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
সবশেষে, নিজের উন্নতির জন্য ডায়েরি রাখা খুব ভালো অভ্যাস। প্রতিদিনের অভিজ্ঞতা, রুটিন এবং শরীরের পরিবর্তনগুলি লিখে রাখা পরবর্তীতে অনুপ্রেরণার উৎস হতে পারে এবং নিজের অগ্রগতি সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা দেয়।
আরও পড়ুন: Mango: রাতের বেলা ভুলেও খাবেন না আম, শরীরের বিপদ নিজেই আনবেন ডেকে!
সুতরাং, ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং শুধুমাত্র খাওয়ার নিয়ন্ত্রণ নয়, এটি একটি সামগ্রিক জীবনধারা পরিবর্তন। সঠিক পরিকল্পনা, পুষ্টিকর খাবার, পর্যাপ্ত জলপান, নিয়মিত শরীরচর্চা ও ভালো ঘুমের মাধ্যমে এই পদ্ধতি কার্যকর ও স্বাস্থ্যকর হতে পারে। যে কেউ যদি এই পদ্ধতি শুরু করতে চান, তবে উপরের বিষয়গুলো মাথায় রেখে ধীরে ধীরে অভ্যাস তৈরি করতে পারেন। এতে শরীর হবে ফিট ও সুস্থ, আর জীবনধারাও হবে আরও প্রাণবন্ত।